1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

প্রিয় আতিক ভাই – ভিন্ন মেরু থেকে শুভকামনা

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২০

মাওলানা মাসুদুল হক
বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ সংগঠনের অন্যতম নেতা হিসেবে আমার জন্য ঢাকা মহানগর উত্তরের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে সমর্থন করাই স্বাভাবিক ছিল। দুটি কারণে সেটি করতে পারছি না। প্রথমত, তাবিথ সংশ্লিষ্ট কিছু বিতর্কের কারণে তার প্রতি সমর্থন আমার মূল্যবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, আতিকুল ইসলাম আতিক নামের খ্যাতনামা একজন ব্যবসায়ীর আড়ালে যে অসাধারণ সুন্দর মনের একজন মানুষকে দেখেছি, তার প্রতি ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতাবোধ ও নৈতিক দায়বদ্ধতা।
মেয়র হিসেবে কেমন তার আগে দেখতে চেয়েছি মানুষ হিসেবে প্রার্থী কেমন! আমরা শ্রমিক অধিকার নিয়ে অনেক কথা বলি, তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কত না আন্দোলন হয়। কিন্তু প্রথম যেদিন আতিক ভাইকে কারখানার শ্রমিকদের সাথে খাবার খেতে দেখেছিলাম, সেদিন ভাবতেও পারিনি তিনি মালিক পক্ষের কেউ। তার প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত একজন সাধারণ কর্মিও তাকে পরিবারের একজন সদস্য মনে করে। কারো মেয়ের বিয়ে, কারো ছেলের ভর্তি, কারো চিকিৎসা, এমন কত সাহায্য তিনি নীরবে নিভৃতে করেন তার পরিসংখ্যান বোধহয় তার নিজের কাছেও নেই। নিরহংকারী এই মাটির মানুষটি যে কতটা পরিশ্রমী তা তার সহকর্মিরা জানেন।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনার সময় আবিষ্কার করেছিলাম মানবদরদী এক আতিককে। যতদূর মনে পড়ে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে মটরসাইকেলে হাজির হয়েছিলেন রানা প্লাজায়। উদ্ধার কাজ চলা পর্যন্ত তিনি থাকতেন এবং তার কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারিকেও হাজির রেখেছিলেন সেখানে।
একথা কারো অজানা নয় যে, বিজেএমইএ সভাপতি হয়ে দেশের গার্মেন্টস খাতের প্রতিকূলতা দূর করতে ও আন্তর্জাতিক বাজার ধরে রাখতে তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন দেশে দেশে। যেখানে বাংলাদেশী পণ্য ছিল না সেখানেও তৈরি করেছেন বাংলাদেশের বাজার।
পত্রিকায় দেখেছি, রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে যে চাপের মুখে পড়েছিল তার জবাবে তিনি বলেছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শ্রমিক সুরক্ষা আইন করেছে দুর্ঘটনার ২১ বছর পর। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেছেন রানা প্লাজা দুর্ঘটনার মাত্র ৯২ দিনের মধ্যে। আমরা কি জাতি হিসেবে আপনাদের চেয়ে বেশী আন্তরিক এবং মানবিক নই?
দেশের একটি গার্মেন্টস যেন বন্ধ না হয় সেজন্য পরিশ্রম করেছেন দিন রাত। মালিকদের যেমন বলেছেন তেমনি শ্রমিকদেরও বলেছেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান না চলে তাহলে শ্রমিকদের ভবিষ্যত কী হবে? তাদের পরিবার, সন্তানেরা খাদ্য-শিক্ষা-চিকিৎসার খরচ চালাবে কীভাবে?
আগে বাংলাদেশের পোশাকে লেখা থাকতো মেইড ইন বাংলাদেশ। আতিক সাহেবের পদক্ষেপের কারণে এখন লেখা থাকে মেইড ইন বাংলাদেশ উইথ প্রাইড। বিশ্বের নিরাপদ গার্মেন্টস কারখানার তালিকায় এখন বেশিরভাগই বাংলাদেশের। বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাত যতটা শ্রমিকবান্ধব ও নিরাপদ হয়েছে তার নেপথ্যে যারা কাজ করেছেন তার একজন আতিকুল ইসলাম।
ঢাকা উত্তরের মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণের তিন দিন পর থেকে শুরু করেন নিরলসভাবে কাজ করেছেন আতিক। একের পর এক ভবনে ও মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রতিরোধে যখন ব্যস্ত, তখন শুরু হয় ডেঙ্গু। ঢাকাবাসীর জন্য কাজ করতে যেয়ে পা ভেঙ্গেছিলেন। দু’দিন পর ভাঙ্গা পা নিয়েও ছুটে বেড়িয়েছেন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে। মশা ঔষুধে ভেজাল পেয়ে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন সিন্ডিকেট। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করে প্রথমবারের মতো চালু করেন ওপেন টেন্ডার।
মিরপুরের কালশীর জলাবদ্ধতার সমস্যা ছিল স্বাভাবিক ঘটনার মতো, যে কারণে ভোগান্তির শিকার হতো এলাকাবাসী। মাত্র নয় মাসের দায়িত্ব পালনকালে কালশীর জলাবদ্ধতা দূর করার মতো অসাধ্য সাধন করেছেন তিনি। এখন সেই কালশীতে জলাবদ্ধতা নেই।
ওয়াসা, রাজউক এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খাল উদ্ধার অন্যদিকে স্মার্ট সিটি গড়তে অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স সহ অন্যান্য সেবা ডিজিটাল করার কাজ করে গেছেন। দুর্নীতিবাজদের দুদকে হস্তান্তর করেছেন।
ঢাকার একটি অ্যাপ এর কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। যেখানে আপনি চলার পথে বাতি নেই, স্যুয়ারেজের ঢাকনা নেই থেকে শুরু করে যে কোন সমস্যা ছবি তুলে অ্যাপে জানালেই ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সমাধান হবে। ১০ কিলোমিটার ডেডিকেটেড বাইসাইকেল লেইনের কাজ চলমান। ঢাকা উত্তর সিটিতে মোট ২৮টি স্মার্ট মাল্টিপারপাস মাঠ চালু হবে, খেলার মাঠ থাকবে, থাকবে উন্নত ড্রেনেজ সিস্টেম, থাকবে না জলাবদ্ধতা।
এছাড়াও নতুন যে ১৮টি ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে সেখানে থাকবে আধুনিক সকল ব্যবস্থা। নগর সেবা ডিজিটালাইজেশনের পাইলট প্রকল্প শুরু হচ্ছে। আরও কত কাজ করেছেন তার সব পরিসংখ্যান আমার জানা নেই। মাত্র নয় মাসে তিনি যা করেছেন সেজন্য সুপার মেয়র হিসেবে ভূষিত হওয়ার যোগ্য তিনি।
কেমন মেয়র চাই এর জবাব খুঁজতে গিয়ে আমি আমার দলের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারি নি। নম্র, ভদ্র, অভিজ্ঞ, পরিশ্রমী, নির্লোভ, জনদরদী ও নিরহংকারী আতিকুল ইসলাম আতিকদের মতো নেতার বড় প্রয়োজন। আমার বিবেক বলেছে আমার ভোটটি যেন আতিকের পক্ষেই যায়। আমরা মুখে যত বড় বড় কথা বলি না কেন, বাস্তবিকভাবে যোগ্য মানুষকে বেছে না নিলে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি যেমন সম্ভব নয়, তেমনি দুর্নীতিমুক্ত সরকার ও সুশাসন প্রত্যাশা করাও দূরাশা মাত্র। তাই সবাই মিলে সবার ঢাকা গড়তে আতিকের বিকল্প নেই।
মাওলানা মাসুদুল হক,
সাংগঠনিক সম্পাদক
জাতীয়তাবাদী ওলামা দল, ঢাকা মহানগর উত্তর।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ