1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সোনাগাজীর মুহুরী প্রজেক্ট : পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

নাজিম আজাদ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১ জানুয়ারি, ২০২২

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বঙ্গোপসাগরের উপকূল ঘেঁষে মুহুরী নদীর ওপর নির্মিত মুহুরী রেগুলেটর বা সেচ প্রকল্প। নদীর দুই পাড়ে সবুজ বনানীঘেরা মায়াবী পরিবেশের সঙ্গে সাগরের ঢেউ মিলেমিশে একাকার। প্রতিদিন জোয়ার-ভাটা দেখে অনাবিল আনন্দ পান দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। মুহুরী নদীতে চলে সারি সারি নৌকা। জেলেরা মাছ ধরেন। মাছ ধরা ও নৌকা ভ্রমণের দৃশ্য ভ্রমণপিয়াসী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। জেগে ওঠা চরে রয়েছে সারি সারি পুকুর। নৈসর্গিক শোভা ও মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে প্রতিদিন এখানে ছুটে আসেন হাজার হাজার পর্যটক। শীতকালে বাড়ে পর্যটকদের সংখ্যাও।

ছুটির দিনসহ অন্যান্য বিশেষ দিবসে জমে ওঠে এ পর্যটন এলাকা। শীতকালে অতিথি পাখির আগমন ও তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে আশপাশ। এখানে এলেই নিঃস্বার্থভাবে মুগ্ধ করে অপরূপ প্রকৃতি। নদীর পানিতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। তাই ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ভ্রমণপিপাসু মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসেন মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকায়।

জানা যায়, ১৯৮৬ সালে প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ সেচ প্রকল্প নির্মিত হয়। এ প্রকল্পের ৪০ গেটবিশিষ্ট রেগুলেটর ও ক্লোজার ড্যাম রয়েছে। এর ৫০০ গজ দূরে অবস্থিত দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র, যা ৬ একর ভূমির ওপর ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০৫ সালে স্থাপন করা হয়। এর ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নির্মিত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল বঙ্গবন্ধু শিল্প নগর। মুহুরী নদীতে ভাসমান মাছ চাষ, নদীতে জাল ফেলে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, ডেইরি ফার্ম, নার্সারি ও এগ্রো খামারসহ ইত্যাদি চোখ জুড়ানো দৃশ্য পর্যটকদের আকর্ষণ করার মতো।
খেটে খাওয়া মানুষ এ সেচ প্রকল্প ঘিরেই জীবিকা নির্বাহ করে। আবার কেউ কেউ জাল ফেলে সাগর থেকে ফেনী নদীতে ভেসে আসা চিংড়ি পোনা সংগ্রহ করে। ফেনী জেলা পরিষদের স্বল্প পরিসরে অবকাঠামো তৈরি করে জেলা পরিষদ পার্ক ঘোষণা করলে আশানুরূপ হয়নি। পর্যটন কেন্দ্র বা নগরী হিসেবে গড়ে ওঠার সব সম্ভাবনা থাকলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাদের সদিচ্ছার অভাবে কাক্সিক্ষত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। নেই কোনো ভালো মানের হোটেল বা মোটেল। তাই বিদেশি পর্যটক এখানে আসতে চান না। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় আধুনিক একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে সরকারের এখান থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হতো।

স্থানীয় দোকানদার আবুল হোসেন মাসুদ জানান, সোনাগাজী পৌর শহর থেকে মুহুরী সেচ প্রকল্পে যাতায়াতের একমাত্র বাহন সিএনজিচালিত অটোরিকশা। কিন্তু মুহুরী নদীর কোল ঘেঁষে যে পিচঢালা সড়ক, সেটি দিয়ে যাত্রীবাহী পরিবহন যেমন বাস, মিনিবাস চলাচল সম্ভব। এছাড়া একটি পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খেতে হয়। তিন যুগের অধিক সময়েও প্রকল্পে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই এখানে ছিনতাই হয়। আবার ভ্রমণের নাম করে কতিপয় লোকজনকে আপত্তিকর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে দেখা যায়। এ অবস্থায় বিব্রত এলাকার মানুষ। এলাকার উঠতি বয়সি বখাটে তরুণরা যুগলদের দেখলে সুযোগ বুঝে তাদের খারাপ মন্তব্য করে। এছাড়া টাকা-পয়সা, গহনা, দামি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। আবার কখনো নারী পর্যটককে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়।

এ ব্যাপারে সোনাগাজীর আমিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল আলম বলেন, এলাকা ও স্থাপনাগুলো মনোরমভাবে সাজানো ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। আর পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাতে পারলে এখানে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, পর্যটনের জন্য সম্ভাবনাময় এই এলাকা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রাজস্ব আয় বাড়ার পাশাপাশি বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেচ প্রকল্প এলাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার লোক প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে আসেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনী-৩ আসনের সংসদ সদস্য জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, মুহুরী প্রকল্প এলাকাকে সরকারিভাবে পর্যটন কেন্দ্র ঘোষণা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার প্রদান করা হয়েছে। আশা করি শিগগিরই পর্যটন এলাকা ঘোষণাসহ সার্বিক উন্নয়ন করা হবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ