1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

অর্ধেক আসন ফাঁকা : ভাড়া না বাড়িয়ে চলবে বাস ট্রেন ও লঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০২২

অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে আগামী শনিবার থেকে বাস চলাচল করবে। এর জন্য ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না। একইভাবে লঞ্চ ও ট্রেন আগের ভাড়াতে যাত্রী পরিবহন করবে। দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহনসহ ১১ দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। এর আওতায় সারাদেশে সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও সমাবেশ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

গতকাল বুধবার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, বিদ্যমান ভাড়ায় অর্ধেক আসন খালি রেখে বাস চলবে। গতকাল পৃথক বৈঠকে লঞ্চমালিকরাও একই সিদ্ধান্ত নেন। বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা ও লঞ্চমালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে একই সিদ্ধান্ত জানা গেছে। এর আগের দিন বাংলাদেশ রেলওয়ের বৈঠকে জানানো হয় অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে ট্রেন চলবে আগের ভাড়ায়।

তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, যত আসন তত যাত্রী পরিবহন করার দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের এ দাবি বিবেচনার জন্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে

বিআরটিএ। বৈঠকে বাস মালিকপক্ষের হয়ে অংশ নেওয়া সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, বিমান যেভাবে সব সিটে যাত্রী নেয়, সেভাবে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব সিটে যাত্রী বহনের দাবি জানিয়েছি। চালক-শ্রমিকদের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করছি। আমরা কোনোভাবেই ভাড়া বৃদ্ধি করতে চাই না।

সব সিটে যাত্রী বহনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে জাতীয় পার্টির এ নেতা বলেন, ‘অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গাড়ি চললে সংকট হবে। হঠাৎ করে বাসের সংখ্যাও বাড়ানো সম্ভব হবে না।’

এর আগে ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর সাধারণ ছুটি ঘোষণা দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত জানালে অর্ধেক যাত্রী বহন করার নির্দেশ দেওয়া হয়। জানানো হয়, নির্ধারিত ভাড়ার ৬০ শতাংশ আদায় করা যাবে।

বিআরটিএ কার্যালয়ে বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানায়, পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা বলেছেন, সব কিছু খোলা রেখে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস চালালে গণপরিবহনে সংকট তৈরি হবে। যাত্রীরা বাস পাবে না। এ ছাড়া পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যত আসন তত যাত্রী পরিবহন করলে সংকট কিছুটা কম হবে। এ পরিস্থিতিতে বিআরটিএর চেয়ারম্যান পরিবহন খাতের নেতাদের আশ্বস্ত করেন যে, তাদের দাবিটি প্রস্তাব আকারে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তারা সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।

বিআরটিএর সূত্র বলছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে বাস চালানোর যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা মানার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পরও যত আসন তত যাত্রীর দাবিটি বিবেচনায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থাৎ যত আসন তত যাত্রীর দাবি সরকার আমলে না নিলে শনিবার থেকে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখেই বাস চলবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, বাস্তবতা বিবেচনা করে যত আসন তত যাত্রীর প্রস্তাব তারা দিয়েছেন। এতে সরকার সায় দিলে পরিবহনে সংকট হবে না। তিনি জানান, সব চালক ও সহকারীকে টিকার আওতায় আনার বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। এ জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে পরিবহন শ্রমিকদের টিকাদান কর্মসূচি শুরুর দাবি জানানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বাসে স্যানিটাইজার রাখা, মাস্ক পরা নিশ্চিত করা- এসব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে।

গত বছরের ৫ এপ্রিল লকডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া বিধিনিষেধ আসার আগে আবার বাসে অর্ধেক যাত্রী বহন করতে বলা হয়। তখনো ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়। ৫ এপ্রিল লকডাউন দেওয়া হলে গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১ জুলাই থেকে শাটডাউন নামে বিধিনিষেধ দেওয়া হলে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয় গণপরিবহন। পরে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে তৃতীয়বারের মতো অর্ধেক যাত্রী তুলে ৬০ শতাংশ ভাড়া আদায়ের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে তিনবারেই দেখা যায়, প্রথমে দু-একদিন অর্ধেক যাত্রী তুললেও পরে প্রতি আসনেই যাত্রী তোলা হয়- এমনকি দাঁড়িয়েও যাত্রী নেওয়া হতে থাকে। তবে ভাড়া ঠিকই ৬০ শতাংশ বেশি আদায় করা হতে থাকে। এ অবস্থায় একপর্যায়ে অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

গত নভেম্বরে ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর পর বাস ভাড়া এমনিতেই বেড়ে গেছে। সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ২৬ থেকে ২৭ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়ে কিলোমিটারপ্রতি যে ভাড়া নির্ধারণ করেছে, ওয়েবিল নামে এক বিশেষ কৌশলে ঢাকায় আদায় হচ্ছে এর দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ। এর মধ্যে যখন আবার বিধিনিষেধের কথা আলোচনা হচ্ছিল, তখন মানুষের মধ্যে বাস ভাড়া বাড়ার বিষয়টি নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ