1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

স্বাস্থ্যসেবায় শেখ হাসিনার অনন্য দৃষ্টান্ত

অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৩

গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হসপিটালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় একটি নতুন মাত্রা সংযোজিত হয়। কারণ হাসপাতালটি শুধু আরেকটি নতুন হাসপাতাল ভবন নয়, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চলমান ধারাবাহিকতায় দেশের নানা সেক্টরে অসংখ্য-অজস্র অবকাঠামোর সংযোজন—তার ক্রমবর্ধমান ফিরিস্তি এমন একটি কলামের পরিসরে লিখে-বলে শেষ করা এককথায় অসম্ভব। এই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ সংযোজন ঢাকা মেট্রো রেল আর অন্যতম সাম্প্রতিক সংযোজন আমাদের সাম্প্রতিক সময়ের আলোচিত এই হাসপাতালটি। এটি আমাদের স্বাস্থ্য খাতে সাম্প্রতিক সময়ে সংযোজিত এবং সংযোজনাধীন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ-২, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ-২, সম্প্রসারিত নিটোর কিংবা সম্প্রসারণাধীন নিমসের মতো নতুন হাসপাতালগুলোর চেয়ে একেবারেই ভিন্ন মার্গের। এটি অপারেশনাল কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালের বর্ধিত অংশ নয়, বরং এটি ‘হসপিটাল উইদিন হসপিটাল’, প্রচলিত স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবার নতুন একটা টায়ার।

বিএসএমএমইউয়ের এই সুপার স্পেশালাইজড হসপিটালটির ভেতরে যাঁরা একবার প্রবেশ করেছেন, তাঁরা অবশ্যই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন যে এমন দ্বিতীয় কোনো স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ৫৫ হাজার বর্গমাইলের ভেতর তাঁদের হয়ে ওঠেনি। কারণ এই দেশের রাজধানী এবং প্রধান বাণিজ্যনগরী কেন্দ্রিক যে আধুনিক, করপোরেট হাসপাতালগুলো, তার কোনোটিই কি হাসপাতাল ভবনের নান্দনিকতা, কি আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম কিংবা অন্য কোনো বিবেচনায়ই নতুন এই হাসপাতালটির ত্রিসীমানায়ও ঘেঁষতে পারবে না। এ দেশের বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে আমার প্রায় দেড় যুগের যে সংশ্লিষ্টতা, পাশাপাশি প্রায় একই সময় ধরে দেশীয় করপোরেট হাসপাতালের কাজ করার যে অভিজ্ঞতা, তার আলোকে আমি এ কথা হলফ করেই বলতে পারি। আমি কয়েক দিন আগে লিখেছিলাম যে এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার এই হাসপাতাল হতে যাচ্ছে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের গেম চেঞ্জার। এর অবশ্য সংগত কারণও আছে। হেলথ ট্যুরিজম বা উন্নত স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির প্রত্যাশায় বিদেশভ্রমণ দেশে দেশে যুগে যুগে বাস্তবতা। এই বাস্তবতা আমার দেশের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য; এবং তাতে অবাক হওয়ারও কিছু নেই। তবে যা বিস্ময়ের তা হলো সংখ্যাটি। এই দেশ থেকে যে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিবছর ভারত, থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিতে যায়, তা ব্যাখ্যাতীত। আমার কাছে একটি ব্যাখ্যা অবশ্য আছে। আমার দেশের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের জন্য যেসব দেশে যায় সেই জায়গাগুলোতে তারা মূলত বেসরকারি করপোরেট হাসপাতালেই গিয়ে থাকে। আমার হিসাবে এর একমাত্র ব্যতিক্রম ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মিশন হাসপাতাল, কিন্তু সেটিও একটি মিশনারি হাসপাতাল। এর পেছনে যৌক্তিক কারণও অবশ্য আছে। পৃথিবীর যেকোনো দেশেই আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সূচনাটা হয়েছে সরকারের হাত ধরে, যেমনটি হয়েছে বাংলাদেশেও। কিন্তু তারপর একটি দেশে স্পেশালাইজড স্বাস্থ্যসেবার যে উন্নতি, তার পুরোটাতেই পুরোধা ভূমিকায় থাকে বেসরকারি, করপোরেট স্বাস্থ্য খাত আর সরকার নেয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার দেখভালের দায়িত্বটা। একমাত্র ব্যতিক্রম আমার জানা মতে বাংলাদেশ, যেখানে প্রাইমারি থেকে টার্শিয়ারি—স্বাস্থ্যসেবার সব টায়ারের উন্নয়নের দায়িত্বটা সরকারের হাতে সঁপে দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে বেসরকারি খাত। শুধু তা-ই নয়, সরকারি খাতের অর্জনগুলো থেকে সরাসরি লাভবানও হচ্ছে তারা।

নিজের কথা দিয়েই বলি। আমি সারা দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক-চিকিৎসক। আবার এই আমিই সূর্যাস্তের পর ঢাকার একটি স্বনামধন্য করপোরেট হাসপাতালের লিভারের কাণ্ডারি। আমার সরকারি খাত থেকে অর্জিত যে আধুনিক জ্ঞান, লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় স্টেম সেল থেকে শুরু করে লিভার ক্যান্সারে ট্রান্স-আর্টারিয়াল কেমো এম্বোলাইজেশন কিংবা ইমিউনথেরাপি—সবই আমি সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেও প্রয়োগ করছি এবং এতে দোষের কিছু নেই, বরং এটি আমাদের স্বাস্থ্য খাতের অনিবার্য বাস্তবতা। কারণ এ দেশে স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের ৪০ শতাংশ অবদানের বিপরীতে বেসরকারি খাতের কন্ট্রিবিউশন ৬০ শতাংশ। অথচ কেউ খেয়াল করে না, এই যে বেসরকারি ৬০ শতাংশ সমপরিমাণ স্বাস্থ্যসেবা, তার মূল চালিকাশক্তি সরকারি চিকিৎসক এবং অনেক ক্ষেত্রেই সরকারি টেকনিশিয়ান ও নার্সরা। আমাদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা বছরে ৩৬৫ দিন ২৪/৭ ওভারটাইম খেটেই চলেছেন।

সংগত কারণেই বাংলাদেশের সবুজ পাসপোর্টটি নিয়ে যখন কেউ প্রতিবেশী কোনো দেশের কোনো করপোরেট হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে যায় এবং সেবাটি নিয়ে দেশে ফিরে আসে তখন এ দুই স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে তার অবচেতন মনে যে তুলনাটা চলে আসে, সেখানে দেশের স্বাস্থ্যসেবার মানটা তার বিবেচনায় কখনোই তুলনীয় হয়ে ওঠে না। অন্যদিকে দেশের হাসপাতালে হাসপাতালে খেটে মরা ‘কলুর বলদ’রা মাথার ঘাম পায়ে ঝরিয়েও বুঝে উঠতে পারেন না তাঁদের দোষটা কোথায়। এই করোনাকালে রেকর্ড সংখ্যায় মৃত্যুবরণ করে করোনা মোকাবেলায় দেশের জন্য এত রেকর্ড বয়ে আনার পরও কেন তাঁরা দেশের আপামর জনগণের মনটা পান না।

যেকোনো দেশের যেকোনো সমস্যার সমাধান হতে হবে দেশীয় প্রেক্ষাপটে দেশের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। বিদেশ থেকে চাপিয়ে দেওয়া প্রেসক্রিপশনে দেশের রোগ সারে না। এ ব্যাপারটি যিনি সবচেয়ে ভালো বোঝেন তিনি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। পদ্মার দুই কূলকে জুড়তে গিয়ে তিনি বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করেননি। তাঁর নিজস্ব প্রেসক্রিপশনেই বাঙালির পদ্মা জয়। দেশের স্বাস্থ্যের চিকিৎসায়ও তিনি এবার এগিয়ে এসেছেন তাঁর নিজস্ব প্রেসক্রিপশন নিয়ে, যার প্রথম উদাহরণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হসপিটালটি। এখানে বিশ্বমানের এমবিয়েন্সে চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন দেশের স্বনামধন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎকরা। আমাদের নার্সিং সেবা, পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার আর হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আমাদের মধ্যবিত্ত আর উচ্চমধ্যবিত্তের যে হাজারো অভিযোগ, আশা করা যায় তারও ব্যাপ্তিটা সংকুচিত হবে হাসপাতালটির চার দেয়ালে এসে। কারণ এই সেবা যাঁরা দিয়ে থাকেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি তাঁদেরও বিদেশ ঘুরিয়ে প্রশিক্ষিত করে নিয়ে আসা হয়েছে এর মধ্যেই।

নতুন বছরের প্রথম দিনে নতুন এই হাসপাতালটিতে নতুন আরেকটি চেম্বারে বসে রোগী দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আমি যা লিখেছি, বিশ্বাস করুন, তার প্রতিটি জিনিস হাসপাতালটিতে অন্তত একটি দিন কাজ করে বিশ্বাস করেই বুঝেশুনে লিখছি। হাসপাতালটিতে বসে যখন রোগী দেখছিলাম তখন বারবার শ্রদ্ধায় অবনত হচ্ছিলাম মহীয়সী ওই নারীর প্রতি, কারণ তাঁর এই সর্বশেষ প্রেসক্রিপশনটি শুধু যে বাঙালির স্বাস্থ্যসেবায় বিদেশমুখিতাই শুধু কমাবে, তা নয়; এটি আমাদের স্বাস্থ্য খাতের সেবকদের মনের খেদটুকুও দূর করবে। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, দেশের মানুষের ঘাম ঝরানো বিদেশি টাকাগুলো বিদেশে আর এত বেশি বেশি ব্যয় হবে না। বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালাইজড হসপিটালটি তাই যেকোনো বিবেচনায়ই স্বাস্থ্যসেবায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরেকটি অসাধারণ ডকট্রিন।

লেখক : ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল – ডিভিশন প্রধান, ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সদস্য সচিব, সম্প্রীতি বাংলাদেশ।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত

পাকিস্তানের অপকর্ম ফাঁস করবেন আদনান সামি

পদ্মা সেতু হয়ে নীড়ে ফিরছেন দক্ষিণ-পশ্চিমবঙ্গের মানুষ

কুসিকে আ’লীগের একক প্রার্থী রিফাত, সরে দাঁড়াচ্ছেন ইমরান

ছাত্রলীগের আয়োজনে শেখ হাসিনার সমাবেশের জন্য ট্রাফিক নির্দেশনা

সম্ভাবনার হাতছানি: লালমাই পাহাড়ে শুরু হয়েছে চা চাষ

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যবস্থা করছে সরকার

১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা : শুনানির জন্য রোববারের কার্যতালিকায়

হামলার ঘটনায় আমি নিন্দা জানাই : নবনির্বাচিত সাংসদ আরাফাত

রোজায় দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে আমদানি বাড়াতে ডলার দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

পাকিস্তানি মিডিয়ায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদ