চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে বেসরকারি খাতে নির্মিত দেশের সবচেয়ে বড় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো ১২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের (তাপবিদ্যুৎ) বিদ্যুৎ প্রকল্পে আয়োজিত এক এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়। সুইচ অন করে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযোগ ঘটান বিদ্যুৎ উৎপাদন গ্রিডের সাথে সংযুক্ত কমিটির প্রধান ও পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির বাংলাদেশের প্রধান প্রকৌশলী (পিজিসিবি) মোর্শেদ আলম খান। তবে বিদ্যুৎ মূল উৎপাদনে যেতে কমিশনিং শুরু হবে আগামী সোমবার থেকে। এপ্রিল মাসে বিদ্যুৎ মূল উৎপাদনে গিয়ে সরকারকে বিদ্যুৎ দেয়া হবে।
এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের প্রকল্প পরিচালক দীপংকর মজুমদার বলেন, কয়লাভিত্তিক সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টের ৪০০ কেভি গ্যাস ইনসুলেটেড সুইচইয়ার্ডকে এনারজাইজ করেছে এবং বাংলাদেশ পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) থেকে ব্যাক-ফিড পাওয়ার গ্রহণ করেছে। এতে করে দুপুর ১টা ৫৬ মিনিটে ১২২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ইতিমধ্যে ৯৪ শতাংশেরও বেশি অগ্রগতি অর্জন করেছে। প্ল্যান্টের প্রধান নির্মাণ কার্যক্রম ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। তবে কয়লাভিত্তিকে হলেও এই বিদ্যুৎ প্রকল্পটিতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। এই প্রকল্প বাংলাদেশের এবং এস আলম গ্রুপের জন্য একটি বিশাল অর্জন ও মাইলফলক।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় এই বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও এসএস পাওয়ারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ সময় বিদ্যুৎ কেনাবেচা সংক্রান্ত চুক্তিও স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে বলা হয়- ২৫ বছর ধরে পিডিবি এই কেন্দ্রে উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ কিনবে। এসএস পাওয়ার ওয়ান লিমিটেড কোম্পানিটি বাংলাদেশের বড় শিল্পগ্রুপ এস আলম গ্রুপের (৭০% শেয়ারহোল্ডিং) এবং চীনের সেপকো থ্রি (৩০% শেয়ারহোল্ডিং)-এর একটি যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ ২০২৩ সালের ৩১ মে। প্রকল্প ব্যয় ২.৫০৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার, ঋণের পরিমাণ ১.৭৮২ বিলিয়ন ইউএস ডলার, ইকুইটির পরিমাণ ৭২৪.৬৭৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার, প্রকল্প থেকে প্রত্যক্ষভাবে অর্জিত সুবিধাসমূহের মধ্যে বিনিয়োগকৃত বৈদেশিক মুদ্রার পরিমান সর্বমোট ২০১২ মিলিয়ন ইউএস ডলার, ঋণের পরিমাণ ১৭৮২ মিলিয়ন ইউএস ডলার, ইকুইটির পরিমাণ ২৩০ মিলিয়ন ইউএস ডলার, মানুষের কর্মস্থান নির্মাণ পর্যায়ে গড় ৫০০০ জন, উৎপাদন পর্যায়ে গড় ১২০০ জন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিরেক্টর (টেকনিক্যাল) প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম, পিজিসিবি মোর্শেদ আলম খান, প্রধান ফাইনান্সিয়াল অফিসার ইবাদত হোসেন, ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান, ডিপিডিই ফাইজুর রহমান, ডিজিএম (মেকানিক্যাল) মো. আশরাফুল হক, ডিপিডিবি আতিকুল হক, প্রকল্প সমন্বয়কারী ফারুক আহমেদ, বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দীন, প্রকৌশলী মুজিবুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক।