চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের কিডনি ওয়ার্ডে রোববার থেকে আরও ১০টি ডায়ালাইসিস মেশিন চালু হয়েছে। এরই মধ্যে এসব ডায়ালাইসিস মেশিনে রোগীদের সেবা কার্যক্রমও শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে চমেক হাসপাতালের কিডনি ওয়ার্ডের তত্ত্বাবধানে ১৭টি মেশিনে ডায়ালাইসিস সেবা চালু হলো।
এর আগে ওয়ার্ডে চারটি মেশিন সচল ছিল। পরে করোনা ইউনিটে স্থাপন করা তিনটি মেশিনেও রোগীদের জন্য ডায়ালাইিসিস সেবা চালু করা হয়। এখন নতুন ১০টিসহ সব মিলিয়ে ১৭টি মেশিন চালু হওয়ায় প্রতিদিন অন্তত শতাধিক রোগীকে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া যাবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, কিডনি ওয়ার্ডে স্থাপন করা নতুন ১০টি মেশিনেও সরকারিভাবে কম খরচে রোগীরা ডায়ালাইসিস সেবা নিতে পারবে। ছয় মাসের ডায়ালাইসিস বাবদ সরকারিভাবে ২০ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা আছে। এতে প্রতি সেশনে একজন রোগীর ৪১৭ টাকা খরচ পড়বে।
চমেক হাসপাতাল ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্ডরের ডায়ালাইসিস ব্যয় পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সেশনপ্রতি চমেক হাসপাতালের যেই খরচ স্যান্ডরের (স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সেন্টার) তুলনায় তা অনেক কম। স্যান্ডরে সরকারি ভর্তুকি প্রদত্ত সুবিধায় সেশনপ্রতি খরচ বর্তমানে ৫৩৫ টাকা। বেসরকারি ফি (ভর্তুকি ছাড়া) সেশনপ্রতি ২৯৩০ টাকা। সে হিসাবে হাসপাতালের কিডনি ওয়ার্ডে অনেকটা কম খরচে ডায়ালাইসিস সেবা পাবে রোগীরা। স্যান্ডরে তালিকাভুক্ত অন্তত একশ রোগী হাসপাতালের ওয়ার্ডে ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এরই মধ্যে ৩০ জনের মতো রোগীকে কিডনি ওয়ার্ডে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নতুন ১০টি মেশিন যুক্ত হওয়ায় আরও অর্ধশতাধিক রোগী ডায়ালাইসিসের জন্য তালিকাভুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে। স্যান্ডরে তালিকাভুক্ত রোগীদের মধ্য থেকে তুলনামূলক বেশি অসহায় রোগী বাছাই করে কিডনি ওয়ার্ডে তালিকাভুক্তির জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তালিকাভুক্তির জন্য অসহায় রোগীদের কিডনি ওয়ার্ডে গিয়ে ডায়ালাইসিস ইনচার্জের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় চমেক হাসপাতালের নিচতলায় স্থাপন করা স্যান্ডর ডায়ালাইসিস সেন্টারে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ৭ জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভ করে রোগী ও তাদের স্বজন। বিক্ষোভের মধ্যে সরকারিভাবে ডায়ালাইসিস সেবার পরিসর বাড়ানোর জন্য জরুরি উদ্যোগ নেয় চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নতুন করে ১০টি ডায়ালাইসিস মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় হাসপাতালের কিডনি ওয়ার্ডে।
১১ জানুয়ারি ঢাকা থেকে নতুন দশটি ডায়ালাইসিস মেশিন হাসপাতালে পৌঁছে। এরপরই মেশিনগুলো স্থাপনের কাজ শুরু হয়। কিডনি ওয়ার্ডে আগে থেকে সচল চারটি মেশিনের পার্শ্ববর্তী ডাক্তারদের একটি কক্ষ একীভূত করে নতুন মেশিনগুলো স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়। হিসেবে ১০ দিনের মাথায় এসব মেশিন স্থাপনের কাজ শেষ করে ১১ দিনের মাথায় সেবা চালু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চমেকের কিডনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরুল হুদা জানান, কম খরচে রোগীদের সেবা দিতে জরুরি ভিত্তিতে নতুন ১০টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এরই মধ্যে রোগীদের এসব মেশিনে ডায়ালাইসিস করা হচ্ছে। এসব মেশিন যুক্ত হওয়ায় অপেক্ষাকৃত অসহায় রোগীরা বেশি উপকৃত হবেন।