1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

দ্বীপ-চরাঞ্চলে হচ্ছে দুর্যোগ সহনশীল ঘর ও ভাসমান অ্যাম্বুলেন্স

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩

বাংলাদেশের উপকূলীয় দ্বীপ এবং নদীর চরাঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠী প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনে ওই সব এলাকার মানুষগুলোর জলবায়ু অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রযুক্তিযুক্ত সহনশীল বাড়ি মেরামত, ভাসমান অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী জলযান, বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানে ন্যানো-গ্রিড স্থাপন, ক্লাস্টার হাউজ নির্মাণ এবং ঝুঁকি ও বিপদাপন্নতা মানচিত্র নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। বিদেশী অনুদানে এসব সহায়তা প্রদানের পরিকল্পনা আগামী পাঁচ বছরে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প প্রেক্ষাপট থেকে জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। স্থানীয় কৃষিনির্ভর জীবিকার কারণে এই ঝুঁকি আরো তীব্রতর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের জলবায়ুজনিত দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। এসবের মধ্যে রয়েছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, প্রচণ্ড উঞ্চতা, খরা ইত্যাদি। উপকূলীয় দ্বীপ এবং নদীর চরাঞ্চলে বসবাসরত জনগোষ্ঠী প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এই ঝুঁকি মোকাবেলা করার লক্ষ্যে এই প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ৭৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা অনুদানের ব্যাপারে জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সাথে গত বছর জুনে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে। রংপুর জেলার গঙ্গাচড়ার লক্ষ্মীটারি ইউনিয়নের নদীর ছোট ছোট চরগুলো এবং ভোলা জেলার চরফ্যাসন উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়নের উপকূলীয় নদীর ছোট ছোট চরগুলো এবং চরফ্যাসন, লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরজহিরউদ্দিন, চরমমতাজ, চরমনপুরায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির জন্য ছয়টি দ্বীপাঞ্চল প্রকল্পের এলাকাভুক্ত।

প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রমগুলো হলো- ৯০০টি জলবায়ু সহনশীল ঘর মেরামত করা ও সাড়ে ৪০০ থেকে ৬টি পরিবারকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেবার জন্য ৩০টি ন্যানো গ্রিড স্থাপন। পানির দুষ্প্রাপ্য এলাকায় ভূউপরিস্থ পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য কমিউনিটিভিত্তিক পানি ব্যবহারকারী ১০টি দল গঠন করে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা। ৫০০ পরিবারকে জলবায়ু সহনশীল ও কার্যকর বৃষ্টির পানি সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ বা যন্ত্রপাতি প্রদান করা। দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য ২০টি ক্লাস্টার হাউজ নির্মাণ। যার ৫০ শতাংশ উপকারভোগী হবে নারী।

মুজিবনগরে ৬ কিলোমিটার এবং গঙ্গাচড়া ১৮ কিলোমিটার বাঁধ মেরামত এবং মুজিবনগরে একটি ইরিগেশন পাইপ আউট লাইন স্থাপন করা হবে। মুজিবনগর এবং গঙ্গাচড়ায় ২৪ কিলোমিটার বাঁধ শক্তিশালী ও টেকসই করা। বঙ্গোপসাগরের নির্ধারিত ১০টি দ্বীপ নদীর চরগুলোতে জলবায়ু ঝুঁকি এবং বিপদাপন্নতা মানচিত্র প্রণয়ন করা। আটটি ভাসমান অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি উদ্ধারকারী জলযান কেনা। জলবায়ু সহনশীল কৃষি পদ্ধতির উপর সাড়ে সাত হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা। আর মুজিবনগরে এবং লক্ষ্মীটারিতে দু’টি করে মোট চারটি কোল্ডস্টোরেজ ইউনিট স্থাপন করা হবে এ প্রকল্পের আওতায়। এ ছাড়া প্রতিটি প্রকল্প এলাকায় দু’টি করে মোট চারটি অভিযোজন উদ্ভাবন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে আগামী ২০২৭ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বলে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

প্রকল্পের খরচের হিসাব থেকে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ চরগুলোতে ৯০০টি জলবায়ু সহনশীল ঘর মেরামতে মালামাল কিনতে ব্যয় হবে ১৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রতিটি ঘর মেরামতে যাবে দেড় লাখ টাকা। চারটি অভিযোজন শিক্ষাকেন্দ্র নির্মাণ খরচ এক কোটি ৫২ লাখ ১৪ হাজার টাকা। প্রতিটিতে ব্যয় হবে ৩৮ লাখ টাকা। ঝুঁকিপূর্ণ চরগুলোতে ২০টি গুচ্ছ বাড়ি নির্মাণে খরচ হবে ৬ কোটি ৭৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা। প্রতিটি গুচ্ছ বাড়িতে খরচ হবে ৩৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২৪ কিলোমিটার বাঁধ মেরামতে খরচ হবে পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এখানে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা। ওই বাঁধকে আবার শক্তিশালী করতে ব্যয় হবে দুই কোটি ৪৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এখানে খরচ কিলোমিটারে ১০ লাখ ২৪ হাজার টাকা। ফলে এই ২৪ কিলোমিটার বাঁধে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হবে ৩৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। এক কোটি ৫৪ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হবে ৮টি ভাসমান অ্যাম্বুলেন্স বা জনযান।

বাঁধ মেরামতের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বলছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শে গঙ্গাচড়া ও চরফ্যাশন উপজেলায় মোট ২৪টি কিলোমিটার বাঁধ মেরামত ও শক্তিশালীকরণ এবং সেচ পাইপ আউটলেট স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগ বলছে, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উপকূলীয় দ্বীপ ও চরে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য এবং বৈশ্বিক জলবায়ু তহবিল থেকে অনুদান পেতে এই প্রকল্পটি প্রণয়নে সহায়তা করে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দ্বীপ ও উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠীর জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ