1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রোজার আগেই ৯৬ হাজার টন ছোলা আমদানি

বাণিজ্য প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে সাত সপ্তাহের বেশি বাকি। এর মধ্যেই দেশে ছোলা আমদানি হয়েছে প্রায় ৯৭ হাজার টন। শুধু গেল সপ্তাহেই আমদানি হয় ৪৩ হাজার টন। রোজার মাসে দেশে ছোলার চাহিদা এক লাখ টনের মতো।

গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ছোলা আমদানি হয় সাড়ে ৫৩ হাজার টন। এ নিয়ে রোজার মাসে ছোলা সংকটের আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে এক সপ্তাহে ৪৩ হাজার টন ছোলা আসায় শঙ্কা কেটে গেছে। এ ছাড়া সরকার ভারত থেকেও ছোলা আমদানির অনুমতি দিয়েছে। সেখান থেকে দ্রুত আমদানি করা যায়। এটা হলে রোজার মাসে ছোলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর—এই তিন মাসে ছোলা আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে সাড়ে ৭৫ হাজার টনের। এর বেশির ভাগই আনছেন দেশের শীর্ষ শিল্পগ্রুপগুলো। সেই ছোলা জাহাজে আসার পথে। রোজা শুরু এখনো সাত সপ্তাহের বেশি বাকি। এর মধ্যেই সেসব ছোলা পৌঁছে যাবে।

এদিকে ভারত থেকে স্থলপথে প্রচুর ছোলা আসছে। এসব ছোলা আনছেন ছোট আমদানিকারকরা। তাঁরা বলছেন, ঋণপত্র জটিলতা কাটিয়ে সেগুলো সঠিক সময়ে পাইকারি বাজারে পৌঁছানো গেলে সংকট নয়; বরং ছোলা উদ্বৃত্ত থাকবে।

বহির্নোঙরে এই মুহূর্তে সাড়ে সাত হাজার টন ছোলা নিয়ে এসেছে ‘উডগেইট’ জাহাজ। ২৬ জানুয়ারি সেটি বহির্নোঙরে পৌঁছে। এর আমদানিকারক ভোগ্য পণ্যের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের কর্ণধার আবুল বশর চৌধুরী বলেন, ‘যে পরিমাণ ছোলা পাইপলাইনে আছে সেগুলো যদি ঋণপত্র জটিলতা ছাড়াই দেশে পৌঁছতে পারে তাহলে রোজায় সংকটের সুযোগ আমি দেখছি না। এখন প্রয়োজন সেই ছোলা সঠিক সময়ে দেশে পৌঁছে বাজারজাত নিশ্চিত করা।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, পুরো বছরে ছোলার চাহিদা থাকে এক লাখ ২০ হাজার টনের। আর রোজায় চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ইফতারি হিসেবে ছোলা এবং ছোলা দিয়ে তৈরি খাবারের জন্য প্রয়োজন হয় এক লাখ টন। ছোলার প্রায় পুরোটাই আমদানি করে মেটানো হয়; অবশ্য দেশেও কিছু ছোলা উৎপন্ন হয়।

কাস্টমসের হিসাবে, ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ছোলা আমদানি হয়েছে সাড়ে ৫৩ হাজার টন। ২০২১ সালের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৬৭ হাজার ৬৪০ টন। সেই হিসাবে আমদানি কমেছিল ২১ শতাংশ। আমদানি কমার কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এমন শঙ্কায় বাজারে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল। দাম বাড়াও শুরু হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে সেই শঙ্কায় ইতি টানার মতো ঘটনা ঘটে।

বাজার তদারকি কমিটির বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুক্তি ছিল যে পরিমাণ ঋণপত্র খোলা হয়েছে তা নিষ্পত্তি এবং ডলার সরবরাহ দিয়ে সেগুলো আনতে পারলে সংকট থাকবে না।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক সোলায়মান বাদশা বলেন, এই মুহূর্তে ভারত থেকে ছোলা আমদানি সবচেয়ে সহজ। এটা দ্রুত সম্ভব। অস্ট্রেলিয়া থেকে আনতে যেখানে দুই মাস লাগে; সেখানে ভারত থেকে আনা ছোট আমদানিকারকদের মাত্র এক সপ্তাহেই আনার এটি বড় সুযোগ। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ২০০ টন ছোলা ভারত থেকে আনার জন্য ঋণপত্র খুলতে অনেক ব্যাংকে ধরনা দিয়েছি। কিন্তু ব্যাংক সাড়া না দেওয়ায় আনা সম্ভব হয়নি। বড় শিল্পগ্রুপগুলো ব্যাংকের মালিক। তাঁরা দ্রুত ঋণপত্র খোলার সুযোগ পাচ্ছে। ছোট আমদানিকারকদের জন্য ভারত থেকে আমদানি একটা বড় সুযোগ; সরকারের উচিত সেটি কাজে লাগানো।’

এদিকে সংকট হবে এমন অজুহাতে পাইকারি বাজারে এক সপ্তাহ ধরে দাম বেড়েছে ছোলার। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভারত, তানজানিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার ছোলা বিক্রি হচ্ছে। কেজি হিসেবে পাইকারিতে মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল কেজিতে ৭২ থেকে ৮০ টাকা। সেই হিসেবে কেজিতে দাম বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলছেন, মিয়ানমার থেকেও ছোলা আসছে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে। আর ভারত থেকে আসার গতি অব্যাহত থাকলে বাজারে দাম আর বাড়বে না। একই সঙ্গে সরবরাহ সংকটও হবে না।

এদিকে মটর ডাল নিয়ে বন্দরের বহির্নোঙরে ভিড়েছে একে একে চারটি জাহাজ; যেখানে আছে এক লাখ ১২ হাজার টন। রোজায় আস্ত ছোলা ভেঙে বিভিন্ন খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এ ক্ষেত্রেও বিপুল পরিমাণ মটর ডাল ছোলার বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলছেন, এখন শুধু বাজার তদারকি করে জাহাজ থেকে ছোলা নামিয়ে বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলেই সংকট বা বাজারে অস্থিরতার সুযোগ থাকছে না। আর সংকটের অজুহাতে বাজারে দাম বাড়ার সুযোগ থাকবে না।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ