তৈরি পোশাক কারখানার সংস্কারকাজের অগ্রগতি, ডলারের বিপরীতে টাকার মান বৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনী পণ্যের রপ্তানি আয় বাড়াতে দেশের রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেন, বড় রকমের বিপর্যয় না হলে চলতি অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন সম্ভব। গত সাত মাসের (জুলাই-জানুয়ারি) রপ্তানি আয়ে বৈদেশিক আয়ের প্রবৃদ্ধি পর্যালোচনা থেকেই বিষয়টি উঠে আসে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জানুয়ারি মাসে পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৩৪০ কোটি ৮৮ লাখ ৫০ হাজার ইউএস ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩.৫৪ শতাংশ বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে রপ্তানিতে আয় হয়েছে ২ হাজার ১৩২ কোটি ৪৯ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশমিক ২৩ শতাংশ কম।
গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিল ২ হাজার ১ কোটি ৩২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ৬.৫৫ শতাংশ বেড়েছে।
গত অর্থবছর রপ্তানি আয়ে বেশ মন্দা গেলেও এ বছর আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের এবং জাতীয় কর্মসূচির আওতায় ৩ হাজার ৯০০র বেশি কারখানা সংস্কারকাজ আজ বিশ্বে বেশ স্বীকৃত। ফলে এর ফলে বিশ্ববাজারে একটি ইতিবাচক ভাবমূর্তি কাজ করছে। আন্তর্জাতিক নীতি সহায়তায় সমন্বয় করা হলে কাঙ্খিত লক্ষ অর্জন করা সম্ভব।
গত অর্থবছরের জানুয়ারির চেয়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩.৫৪ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৭৬৫ কোটি ডলার। এ আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২.৭১ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৭.৫৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া নিটওয়্যার খাতে আয় হয়েছে ৮৯০ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩.৪৯ শতাংশ বেশি। ওভেন খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৮৭৪ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১.৯৩ শতাংশ বেশি।
দেশের তৈরি পোশাক খাতের সংস্কার অগ্রগতি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজনী পণ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির ফলে পুরো রপ্তানি খাত ভালোর দিকে যাচ্ছে। এর ফলে আশা করা যায়, বড় ধরনের কোনো ধাক্কা না এলে চলতি অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সক্ষম হবে।