1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

নতুন স্বপ্নের উদ্বোধন 

এম নজরুল ইসলাম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

বাংলাদেশের স্বপ্নসারথি শেখ হাসিনা। দেশের উন্নয়ন এবং আজকের রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার অবদান অনস্বীকার্য। ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রনায়ক তিনি। তাঁকে ঘিরেই সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। সেই স্বপ্ন পূরণে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। বাস্তবায়িত হচ্ছে পরিকল্পনা। এ শুধু পরিকল্পনা নয়। একেকটি স্বপ্ন সত্যি হয়ে ধরা দিচ্ছে।

এমনই একটি স্বপ্নের নাম পদ্মা সেতু। ২০০১ সালের ৪ জুলাই বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের অনেক দিনের স্বপ্ন পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা আবারও সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই নিয়োগ করা হয় পদ্মা সেতুর ডিজাইন কনসালট্যান্ট। ২০১০ সালে প্রি-কোয়ালিফিকেশন দরপত্র আহ্বান করা হয়। এরপর ঘটনাবহুল সময় পেরিয়ে যায়। পদ্মা সেতুর মূল ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক নানা টালবাহানার পর ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পদ্মা সেতুর ঋণচুক্তি স্থগিত করে এবং পরে চুক্তি বাতিল করে দেয়। এরপর নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘নিজেদের টাকায়ই আমরা পদ্মা সেতু গড়ব।’

প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেওয়ার পরও সংশয় ছিল অনেকের মনে। অনেকের মনে সন্দেহ ছিল। পদ্মা সেতুর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য প্রকৌশলী আইনুন নিশাত বলেছেন, বিশ্বব্যাংক পুরোপুরি রাজনৈতিক কারণে সরে গেছে। তাঁর মতে, সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকারই এনে দিয়েছে সাফল্য।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের সামগ্রিক উৎপাদন, সেবা, পর্যটন, শিল্প-বাণিজ্যেও বিনিয়োগ বেড়েছে। নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ বাংলায় নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠতে যাচ্ছে। নতুন বিনিয়োগ নিয়ে তৈরি হচ্ছেন উদ্যোক্তারা।

উদ্বোধনের পর গত ছয় মাসে পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায় হয়েছে প্রায় ৩৯৫ কোটি টাকা। গত বছর ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর ২৬ জুন থেকে সেতু দিয়ে যান চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। সেই দিন থেকে ১৮৬ দিনে এই টোল আদায় হয়েছে। ২৬ জুন থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে যানবাহন পারাপার হয়েছে ২৭ লাখ ২২ হাজার ৯৮৩টি। আর এ থেকে প্রতিদিন গড় টোল আদায়ের হার দুই কোটি ১২ লাখ সাত হাজার ৭২৬ টাকার বেশি।

অন্যদিকে দেশের প্রথম মেট্রো রেল এমআরটি লাইন-৬-এর উদ্বোধন করা হয় গত ২৮ ডিসেম্বর। এর এক দিন পর থেকে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও মেট্রো রেল চালু হওয়ার পর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মেট্রো রেলে মোট তিন লাখ ৩৫ যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। এতে আয় হয়েছে দুই কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

এবার আরেকটি স্বপ্নের প্রকল্প উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ দেশের প্রথম পাতাল মেট্রো লাইন নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন। এমআরটি লাইন-১ হিসেবে চিহ্নিত এ প্রকল্পে বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, বাড্ডা, রামপুরা হয়ে কমলাপুর পর্যন্ত ১৯.৮৭ কিলোমিটারের পুরো অংশ হবে ভূগর্ভে। এ অংশে থাকবে মোট ১২টি স্টেশন।

আরেক অংশ হবে এলিভেটেড। সেই অংশ নতুনবাজার থেকে কুড়িল হয়ে যাবে পূর্বাচলে। ১১.৩৬ কিলোমিটারের এ অংশে থাকবে মোট ৯টি স্টেশন। পাতাল ও উড়াল মিলে মোট ৩১.২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এ মেট্রো রেল প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সাল নাগাদ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। দেশের প্রথম এই পাতাল রেল নির্মাণে ব্যয় হবে ৫২ হাজার কোটি টাকা। জাপানি ঋণ ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। আর বাকি অর্থ সরকারি তহবিল থেকে মেটানো হবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেডে জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এই ছয়টি মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ পর্যায়ক্রমে তিন ধাপে শেষ করা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ২০২৮ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন-৫ নর্দান রুটের নির্মাণকাজ শেষ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে ২০৩০ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন-৫ : সাউদার্ন রুট, এমআরটি লাইন-২ এবং এমআরটি লাইন-৪ নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।

তিন বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনীতি বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ঠিক সেই সময়ে সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা স্বস্তি দিয়েছে বাংলাদেশকে। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যখন নিজেদের অর্থনীতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ঠিক এমন একটি সময়ে একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ। নিয়েছে নতুন নতুন পরিকল্পনা। মেট্রো রেল ছিল গত বছরের শেষ চমক। অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ সমৃদ্ধ এক আগামীর স্বপ্ন দেখছে পদ্মা সেতু ঘিরে। তেমনি পাতাল রেল নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। এই স্বপ্ন দেশের মানুষকে দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশ এগিয়ে নিতে হলে সাহসী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেই সিদ্ধান্ত নিতে হলে নেতৃত্বকে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন হতে হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে পান। আর সে কারণেই তিনি দেখাতে পারেন নতুন নতুন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ করতে দ্বিধা করেন না তিনি। আজ নতুন এক স্বপ্নের উদ্বোধন করছেন তিনি।

লেখক : এম নজরুল ইসলাম – সভাপতি, সর্বইউরোপীয় আওয়ামী লীগ


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ