1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপির ঐতিহাস ৭ই মার্চ পালন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির আরেকটা প্রচেষ্টা মাত্র

সুলতান মির্জা : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৯ মার্চ, ২০২১

প্রশ্ন আসতে পারে কেন মনে করছি এইরকম… প্রথম কথা হলো স্বাধীনতার ৫০ বছর হিসেব ধরে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দলের জন্ম ৭৫ এর ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরিবর্তি সময়ে, সেই হিসেবে এখন চলছে ২০২১ সাল অর্থ্যাৎ ১৯৭৫ থেকে ২০২১ পর্যন্ত হয় ৪৬ বছর, এর মধ্যে বিএনপির জন্ম ১৯৭৮ সালে হলেও বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পরে জিয়া ছিলো ক্ষমতার ক্রীড়ানকের ভুমিকায়, তারপরেও ১৯৭৮ থেকে ২০২০ এই ৪২ বছরের বিএনপি একবার একদিনের জন্যেও ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের গুরত্ত্ব বুঝেনি, বুঝার চেষ্টা করেনি, বুঝতে চায়নি, সেই বিএনপি যখন তাদের প্রতিষ্ঠার ৪৩ বছরের মাথায় এসে ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের গুরত্ত্ব বুঝে ফেলেছে, পালন করছে তাও ঘোষনা দিয়ে… প্রশ্ন হচ্ছে কেন ? ৪২ বছর পালন করেনি পরেও যেই ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের গুরত্ত্ব এতটুকু কমেনি, ৪৩ বছরের মাথায় এসে ঐহাতিহাসিক ৭ই মার্চের গুরত্ত্ব কি এমন রসাতলে চলে গেছে যে বিএনপি তা পালন করে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছে…
সত্যি বলতে কি, বিএনপি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন করেছে এবারে নতুন আরেকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অংশ হিসেবে। প্রশ্ন হচ্ছে, ষড়যন্ত্র তত্ত্বটা কি ?
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের গুরত্ত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিই হলো বিএনপির ঘটা করে ৭ই মার্চ পালনের মুল উদ্দেশ্য। যারা জিয়ার বীরউত্তম খেতাব টিকিয়ে রাখার কৌশল হিসেবে বিএনপির ৭ই মার্চ পালন বিবেচনা করছেন, বলতে চাই আপনারা ভুল জায়গায় আছেন। মোটেও এমন কিছু না…
বিএনপি স্বপ্রনোধিত ভাবে ৭ই মার্চ পালন করছে ঠান্ডা মাথায় নতুন কিছু বিতর্ক তৈরি করতে।
প্রশ্ন হচ্ছে বিতর্ক গুলো কি কি ?
*দরকষাকষি
*স্বাধীনতার ঘোষনা বিতর্ক
সবচেয়ে চুম্বক লাইনটি ছিলো
*মির্জা ফখ্রুল বলেছে ‘এই ৭ মার্চ পালন করা উচিত, কি উচিত নয়– এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, ৫০ বছর আগে এই ঘটনাগুলো ঘটেছিল। আর ৫০ বছর পরে নতুন প্রজন্মের নতুন ইতিহাস জানার অধিকার রয়েছে।
অর্থ্যাৎ ৫০ বছরের পুরাতন ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনের নতুন ইতিহাস শুনতে হবে তাদের কাছ থেকে, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী রাজাকার, আল বদর, আল শামস, দালালদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুধু পুনর্বাসনই করেনি, প্রতিষ্ঠিত করেছে, ক্ষমতার ভাগীদ্বার বানিয়েছে, একসাথে জোট করেছে, এখনো জোটে ধরে রেখেছে, সেই দলের মহাসচিব বলবে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনের নতুন ইতিহাস। বিষয়টা কতটুকু হাস্যকর তা কল্পনা করলেও আপনার মাথায় ব্যাথা শুরু হতে পারে।
দরকষাকষি…
এই বিষয়ে একটা কথা বলতে হচ্ছে, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাংলাদেশে তিন পক্ষের লোক ছিলো,
১ম পক্ষ ছিলো যারা সেদিন রেসকোর্স ময়দানে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষন শুনেছিলো
২য় পক্ষ ছিলো যারা সেদিন রেসকর্স ময়দানে দেওয়া বঙ্গবন্ধুর ভাষন স্বশরীরে উপস্থিত থেকে শুনতে পারেনি কিন্তু লোকমুখে বা অন্য ভাবে শুনে বুঝতে চেষ্টা করেছিলো বঙ্গবন্ধু তাদের কে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছে।
৩য় পক্ষ ছিলো যারা সেদিন বঙ্গবন্ধুর ভাষনকে ইন্ডিয়ার দালালী বলে চিনহিত করে ভাষন সম্মন্ধে পাকিস্থানী জান্তার সাথে দরকষাকষির অপপ্রচার চালিয়েছিলো।
আজকে ২০২১ সালের ৭ই মার্চ এসে সেই ৩য় পক্ষটার সমর্থনকারী, সুবিদাভোগী, মদদকারীদের কাছ থেকে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনের দরকষাকষির শব্দটা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চরম দৃষ্টতা বলেই মনে করছি। এর জন্য বিএনপির মহাসচিবের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার দ্বাবী জানাচ্ছি।
স্বাধীনতার ঘোষনা বিতর্ক…
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনে এই প্রসঙ্গ আসবে কেন ? ঐসময়ে দেশ প্রেমিক যারা ছিলো অর্থ্যাৎ প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও স্বাধীন বাংলাদেশের শ্বপ্ন যারা বুকে ধারন করতো, সেই তাদের কাছে আনঅফিসিয়াললি ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষন ছিলো স্পষ্ট নির্দেশনা, যার যা কিছু আছে তা নিয়েও প্রস্তুত থাকতে হবে, বঙ্গবন্ধু যদি হুকুম দেবার না পারে তাহলে যেন যার যা কিছু আছে তা নিয়ে যেন ঝাপিয়ে পরে শত্রুর মোকাবেলা করতে। এখন এই ভাষনের সত্ত্বাধিকারী যারা এই ভাষন দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে স্বযত্নে ধারন, লালন ও অনুপ্রেরনার অংশ হিসেবে ধরে রেখেছে, সেই তারাই যদি অফিসিয়াললি ৭ই মার্চের ভাষন কে স্বাধীনতার ঘোষনা হিসেবে সনাক্ত না করে থাকে, সেখানে বিএনপি রাজাকার কোলে নিয়ে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষনে স্বাধীনতার ঘোষনা বিতর্ক টেনে আনে কিভাবে ? ৭ই মার্চ বিতির্কিত করে জিয়াকে সেটেল করতে ? আরে বেটা জিয়া যেই স্বাধীনতার ঘোষনা পাঠ করেছিলো রেডিও আরজে হিসেবে, সেই নির্দেশনাটাও ছিলো বঙ্গবন্ধুর পক্ষের, যা এক প্রকার অফিসিয়াল বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা ছিলো। এমন জায়গায় কিভাবে ৭ই মার্চের ভাষনে স্বাধীনতার ঘোষনা বিতর্ক যুক্ত করে বিএনপি কেন মুক্তিউদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অপরাধে অপরাধী হবে না ?
সোজা কথা বিএনপির ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ পালন ঠান্ডা মাথায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির দৃষ্টতা। অনতিবিলম্বে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ইতিহাস বিকৃতির অপরাধে অপরাধী বিএনপির মির্জা ফখ্রুল, মোশাররফ, মির্জা আব্বাস সহ আরো যারা বক্তব্য রেখেছে, ৭ই মার্চের বিষয়ে মিথ্যা ইতিহাস সেটেল করতে চাইচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
লেখক- সুলতান মির্জা, কলামিস্ট ও অনলাইন এক্টিভিস্ট। 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ