1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বাসন্তীর ভরণপোষণ দিচ্ছে সরকার, পেয়েছেন ঘর-টেলিভিশন 

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ৫ মার্চ, ২০২৩

১৯৭৪ সালের আলোচিত জন্মগত বাকপ্রতিবন্ধী বাসন্তী দাস। দৈনিক ইত্তেফাকের ফটোগ্রাফার আফতাব আহমেদের পরিকল্পনায় একটি ‘সাজানো’ ছবি তোলার পর তা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। বাসন্তী জন্মগত বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় সেই সুযোগে এমন ছবি তোলা হয়। বর্তমানে সেই বাসন্তীর বয়স ৭৪ বছর।

অভাব-অনটনেই এতদিন কেটেছে বাসন্তীর। অবশেষে তার ভাগ্য খুলেছে। ঠাঁই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘরে। সেই ঘরে বসে অবসর সময় কাটছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা প্রশাসনের দেওয়া টেলিভিশন দেখে। মাসে মাসে ভরণপোষণের জন্য পাচ্ছেন সাড়ে চার হাজার টাকা। আজীবন তিনি এ সরকারি সহায়তা পাবেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সরকারের দেওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন বাসন্তী দাস। পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ভরণপোষণের জন্য বাসন্তীকে প্রতি মাসে সাড়ে চার হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে তাকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়া হয়েছে। বিনোদনের জন্য দেওয়া হয়েছে একটি টেলিভিশনও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাসন্তী দাস কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের জোড়গাছ ইউনিয়নের জেলেপাড়া গ্রামের বাকপ্রতিবন্ধী নারী। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জেলেপাড়া গ্রামের মৃত কান্দুরা রাম দাস ও মৃত শুটকি বালা দাসের মেয়ে তিনি। চার ভাই-বোনের মধ্যে বাসন্তী দ্বিতীয়। তার ছোট ভাই বিষ্ণু চন্দ্র দাস ও ছোট বোন দুর্গা রানী দাস মারা গেছেন। বেঁচে আছেন তার বড় ভাই আশু চন্দ্র দাস (৮০)।

বাকপ্রতিবন্ধী বাসন্তীর কপালে স্বামীর সংসার টেকেনি। বিয়ের মাত্র এক মাসের মাথায় স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। নদীভাঙনে বাবার ভিটেমাটি হারিয়ে ঠাঁই হয় ছোট ভাই বিষ্ণু চন্দ্রের বাড়িতে। বিষ্ণু মারা গেলে বাসন্তীর দেখভাল করেন তারই স্ত্রী নিরোবালা দাস। বর্তমানে নিরোবালা ও তার সন্তানদের সঙ্গে দিন কাটছে তার।

বিষ্ণু চন্দ্র দাসের স্ত্রী নিরোবালা দাস বলেন, ‘আগে খুব কষ্টে ছিলেন বাসন্তী। প্রতিবন্ধী ভাতার কিছু টাকা এবং ত্রাণ সহায়তা পেয়ে কোনো রকমে জীবন চলছিল। এখন বাসন্তী অনেক ভালো আছেন। সরকার ভরণপোষণের জন্য তাকে টাকা দিচ্ছে। তা দিয়ে প্রতি মাসে চাল, ডাল, তেল, সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে আনছি। ঘরে বসে সময় কাটে না। এজন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে টেলিভিশনও পেয়েছেন। বাসন্তীর এখন আর দুঃখ-কষ্ট নেই।’

বাসন্তীর ভাতিজার স্ত্রী ফুলো রানী। তিনি বলেন, ‘সরকার আমার ফুফুশাশুড়ির থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ভগবানের কৃপায় তার কোনো অসুখ নেই। তিনি সুস্থ আছেন, ভালো আছেন।’

বাসন্তীর ভাতিজা কমল চন্দ্র। তিনি পেশায় একজন মৎস্যজীবী। কমল বলেন, ‘বাসন্তী দাস আমার ফুফু। আমার মা, ফুফু, স্ত্রীসহ আমরা এক সংসারে বসবাস করছি। ইউএনও অফিস থেকে যে সহযোগিতা পাই, তা দিয়ে কোনোরকমে তার চলে যাচ্ছে। ফুফুর অসুখ-বিসুখ হলে আমরাও সহযোগিতা করি। এভাবে চলছে ফুফুর দিনকাল।’

চিলমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘আমরা চাই, বাসন্তী যতদিন বেঁচে থাকবেন, তার যেন খাবারের কষ্ট না হয়। চিকিৎসার অভাব যেন না হয়। তার থাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী একটি ঘর দিয়েছেন, একটি টেলিভিশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসন্তী যাতে কোনো ধরনের কষ্টে না থাকেন, সে বিষয়ে আমরাও সচেষ্ট আছি।’

চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘চিলমারীতে ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর বাসন্তী দাসের খোঁজ-খবর নিয়েছি। তার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসন্তীর জন্য মাসিক সাড়ে চার হাজার টাকার আজীবন আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে আমি বাসন্তীর খোঁজ রাখবো।’


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ