1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

১৯ মার্চ ১৯৭১ : ইতিহাসের এই দিনে

ইবার্তা সম্পাদকীয় : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩

১৯৭১ সারের ১৯ মার্চ, মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ঢাকার উত্তরে জয়দেবপুরে (বর্তমান গাজীপুর) অকুতোভয় মুক্তিকামী বাঙালিরা পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। শহীদ হন নেয়ামত, হুরমত ও মনু খলিফা। তাই স্বাধীনতার ইতিহাসের এ দিনটি গাজীপুর তথা দেশবাসীর একটি গৌরবময় দিন। প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস আজ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চে দেওয়া ভাষণে (তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে) বলিয়ান হয়ে ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই ঢাকার অদূরে জয়দেবপুরে অকুতোভয় মুক্তিকামী বাঙালিরা সশস্ত্র সেনাবাহিনীর সামনে প্রথমবার রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। হাজার হাজার জনগণ অবতীর্ণ হয়েছিলেন সেই সম্মুখযুদ্ধে।

মার্চের প্রথম দিকে দুই ধাপে জয়দেবপুর মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। প্রয়াত হাবিব উল্লাহ এমপির নেতৃত্বে প্রয়াত মণিন্দ্রনাথ কুমার গোস্বামী ও প্রয়াত শ্রমিক নেতা এমএ মুত্তালিবকে সদস্য করে ৩ সদস্যের হাইকমান্ড এবং বর্তমান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে আহ্বায়ক করে অ্যাকশন কমিটি গঠন করা হয়। গাজীপুরের তৎকালীন নাম ছিল জয়দেবপুর। ১৯৭১ সালে জয়দেবপুর সেনানিবাসের ভাওয়াল রাজবাড়িতে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কার্যালয় ছিল। সেখানে ২৫-৩০ জন ছাড়া সবাই ছিলেন বাঙালি সেনা কর্মকর্তা। পাকিস্তানিরা বাঙালি দমনের নীল নকশা নুযায়ী ১৫ মার্চের মধ্যে অস্ত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। বাঙালি সেনারা রাজি না হলে ১৯ মার্চ সকালে ঢাকা ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জাহানজেব অস্ত্র ও গোলা বারুদ নিতে জয়দেবপুর সেনানিবাসে আসেন। এ খবর জানাজানি হলে জয়দেবপুর (বর্তমান গাজীপুর) থানা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের যৌথ নেতৃত্বে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জনতা, লাঠি, তীর-ধনুক নিয়ে জয়দেবপুর বটতলায় জড়ো হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। ওই প্রতিরোধযুদ্ধে মনু খলিফা, কিশোর নিয়ামত, ফুটবলার হুরমত আলী ও কানু মিয়া শহীদ হন। আহত হন আরও অনেকে। জয়দেবপুরে হানাদারদের সঙ্গে এ সম্মুখ যুদ্ধে সারাদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সমগ্র বাংলাদেশে স্লোগান উঠে ‘জয়দেবপুরের পথ ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর’।

১৯ মার্চের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে চান্দনা চৌরাস্তায় নির্মাণ করা হয়েছে স্মারক ভাস্কর্য ‘জাগ্রত চৌরঙ্গী’ এবং জয়দেবপুর বটতলায় ‘মুক্তমঞ্চ’। প্রতি বছর পরম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় গাজীপুরবাসী এ দিনটি উদযাপন করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরের প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে স্বহস্তে লিখে একটি বাণী দিয়েছেলেন। মহান স্বাধীননতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এ বাণী বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। ওই সময় বাণীতে বঙ্গবন্ধু বলেন, ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসে আরও একটি স্মরণীয় দিন। এ দিন পাক মিলিটারি বাহিনী জয়দেবপুরে ক্যান্টনমেন্টে অবস্থিত দ্বিতীয় বেঙ্গল রেজিমেন্টের জওয়ানদের নিরস্ত্র করার প্রয়াস পেলে জয়দেবপুর থানা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের যৌথ নেতৃত্বে কৃষক, ছাত্র, জনতা সবাই বিরাট প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। ফলে মিলিটারির গুলিতে তিনটি অমূল্য প্রাণ হারায়। যার কাছে যা আছে, তাই দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলো। জয়দেবপুরবাসীরা তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। আমি তাদের মোবারকবাদ জানাই।

জাতির পিতা বলেন, কোনো মহৎ কাজ ত্যাগ ব্যতিত হয় না। জয়দেপুরের নিয়ামত, মনু, খলিফা ও চান্দনা চৌরাস্তায় হুরমতের আত্মত্যাগও বৃথা যায়নি। শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। তাই আজ লাখো শহীদের আত্মত্যাগের ফলে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু বলেন, দেশকে স্বাধীন করার সংগ্রাম শেষ হয়েছে। আসুন আজ আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ার সংগ্রামে লিপ্ত হই। তিনি জয় বাংলা বলে বাণীটি শেষ করেন।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ