1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

ছাত্রদের রক্তে পা মাড়িয়ে নারী নিয়ে ফূর্তি মামুনুলের বিকৃত মস্তিষ্কের বহিঃপ্রকাশ

জাফর ইকবাল : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৫ এপ্রিল, ২০২১

মামুনুল হক তার ওয়াইফ/ অন্যের ওয়াইফ/ প্রেমিকা কিংবা ভাড়া করা কল গার্ল নিয়ে রিসোর্টে গেলো কি -না, সেটা তাদের ব্যক্তিগত অভিরুচি।
একটি সেকুলার রাষ্ট্রে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের তাদের ইচ্ছেমতো যৌন চাহিদা নিবারণের অধিকার রয়েছে।
সেই হিসেবে প্রাপ্ত বয়স্ক মামুনুল কিংবা ওই নারী অথবা অন্য যেকোন নারী নিয়ে মামুনুল হক কিংবা অন্য যে কেউ, কি করলো; সেটা মূখ্য বিষয় নয়।স্বেচ্ছাচারীতা মানে ধর্ষণ না হলেই হয়।
এবার প্রশ্ন, তাহলে মামুনুলের বেলায় বিপত্তি কেন?
প্রথমত মামুনুল হক, একজন ইসলামিক স্কলার, সারা বাংলাদেশে তার লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার।
এই মামুনুল হকেই বাংলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র বানানোর জন্য গলাবাজি করেছে। কথায় কথায় বিধর্মীদের হত্যা হুমকি দিয়েছে।
সময়-অসময়ে মানুষকে কাফের হিসেবে ফতুয়া দিয়েছে।
আর ইসলামে অবৈধ উপায়ে যৌন চাহিদা নিবারণ জগন্য অপরাধ। এর শাস্তি বুক পর্যন্ত মাটিতে পুতে পাথর নিক্ষেপ করতে করতে হত্যা করা।
এছাড়াও ২০১৩ সালে হেফাজতের দেওয়া ১৩ দফার ৪ নং দফা ছিলো, অবৈধ যৌনাচার, পরকীয়া এবং বিবাহ বহিঃ ভূত যৌন সম্পর্ক নিয়ে।
এখন, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বেলায় কি, তার মুরিদানেরা এই আইনের বাস্তবায়ন চাইবে?
চাইবে না, বরং বোরকার কালার নিয়ে মামুনুলকে সাধু প্রমাণে ব্যস্ত তারা। অথচ মূর্খ্যের দল জানে না, নীল কালার কম লাইটে কালো দেখায়।
 
একাত্তর টিভি একটি কল রেকর্ড পাবলিক করেছে। যেখানে মামুনুল হক তার প্রথম স্ত্রীকে বলেন, তিনি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কারণে বলেছেন, ওই নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী।
বাস্তবিক অর্থে ওই নারী তার পরিচিত ভাই জনৈক জাফর শহিদুল ইসলামের স্ত্রী।
বুঝে – না বুঝেই ; অন্ধভক্ত কুল ওই রেকর্ড মিথ্যে,এডিটেড বলে প্রচারণা শুরু করে দিলো! অথচ তার কিছুক্ষণ পরেই মামুনুল হক লাইভে এসে স্বীকার করলেন, সে তার বন্ধুর স্ত্রীকে বিয়ে করেছেন। যা মুলত ওই কল রেকর্ডের স্বীকারোক্তিই।
ভিডিওতে মামুনুল হক নিজে বলেছেন, তার দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে তার পরিবার জানে না। এদিকে ওই নারীর এলাকায় খোঁজ নিয়েও জানা গেছে নারীর মা -বাবা,কিংবা পরিবারের কেউ অথবা গ্রামের কেউ এই বিষয়ে কিছু জানে না।
তাহলে মামুনুল হক বিয়েটা একা একাই আকাশ -বাতাস সাক্ষি রেখে করলেন?
গত ২৪ ঘন্টার অধিক সময়েও মামুনুল হক সাহেব একাধিক ফেসবুক স্টেটাস প্রসব করলেও তিনি কেন কাবিন নামা বা কোন প্রমাণ পত্র দেখাতে পারলেন না কেন?
এদিকে মিজানুর রহমান আজহারির একটি ওয়াজ ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তিনি হাদিসের রেফারেন্স টেনে বলছেন, গোপনে বিয়ে করা যেনা করার সামিল!
এখন এই হাদিস মামুনুল হকের বেলায় তার ভক্তকুল বাস্তবায়ন চাচ্ছে না কেন?
একটি মানবিক বিয়ে শিরোনামে মামুনুল হক তার ফেসবুকে লিখেন, ওই নারী তার বন্ধুর স্ত্রী ছিলো। তার বন্ধুর সাথে ডিভোর্স হলে ওই নারী অসহায় হয়ে পরেন।তখন মামুনুল ওই নারীকে আর্থিক সহায়তার জন্য তাকে বিয়ে করেন।
ইসলামী শরীয়াহ কোথায় আছে কোন নারীকে আর্থিক সহায়তা করতে হলে কাউকে না জানিয়ে গোপনে তাকে বিয়ে করতে হবে?
এটাকে কি কোন নারীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার উপর বিকৃত যৌন লালসা পূরণ করা বললে বেশি ভুল হবে?
 
ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নিতে হয়। এখন মামুনুল হকের বেলায় প্রথম স্ত্রীর অনুমতি বিহীন দ্বিতীয় বিয়ে শরীয়াহ লঙ্ঘন হবে না কেন?
লোকজন যখন মামুনুল হক কে ধরল তখন ওই নারী মামুনুলকে বাঁচাতে সামনে না এসে বাথরুমে পালালো কেন?
কোন স্বামী বিপদে পরলে তার স্ত্রী কি তাকে ফেলে পালায়?
মামুনুল হককে যখন তার অন্ধভক্তকুল রিসোর্টে হামলা করে পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়াসলো তখন মামুনুলেই বা তার স্ত্রীকে ফেলে চলে গেলো কেন?
একজন দ্বিনদার আলেম কি তার হক স্ত্রীকে ফেলে পালায়?
মামুনুল হক ভিডিওতে বললেন, ওই নারীর নাম আমেনা ত্যয়েবা। আর ওই নারী জানালো তার নাম জান্নাত আরা ঝর্ণা। বাস্তবিক অর্থে মামুনুল হকের প্রথম স্ত্রীর নাম আমেনা ত্যয়েবা।
মামুনুল হক বললো তার শ্বশুর বাড়ি খুলনা আর ওই নারী জানালো তার বাড়ি ফরিদপুর।
মামুনুল হকের তিন ছেলে অথচ ওই নারী ভিডিওতে বললো মামুনুলের চার ছেলে?
এত মিথ্যাে আর গোঁজামিল কেন?
অপরাধকে মিথ্যে প্রমাণ করতে
বলা এই সকল মিথ্যেগুলোও অপরাধ।
 
এই রকম হাজারো প্রমাণ আর যুক্তি দিলেও মামুনুলের অন্ধ ভক্তকুলের চোখ খুলবে না, এটা আমিও জানি। তাই এই বিষয়ে কথা বাড়িয়ে লেখাটাকে আর দীর্ঘায়িত না করি।
তবে এটা এখন প্রমাণীত চরিত্রহীন মামুনু্ল হকের কাছেই এতদিন ইসলামের ইজারা দেওয়া ছিলো৷
আর মামুনুল হকের নিয়ে যাওয়া নারীটি একটি পার্লারে কাজ করে । সোজা ভাষায় বললে ওই নারী ছিলো “কল গার্ল”।
এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে যাই –
গতকিছুদিন পূর্বেই হেফাজতের অান্দোলনে সহিংসতায় হেফাজতের একাধিক নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। যাদের অধিকাংশই বিভিন্ন মাদ্রাসায় পড়িত ছাত্র।
যেই শিক্ষার্থীদের রক্তের দাগ এখনো শুখায় নাই। পরিবারগুলোতে শোকের মাতম চলছে অন্যদিকে মামুনুল হকের রিসোর্টে গিয়ে ১৮০০০ টাকা দিয়ে রুম ভাড়া করে যৌন লীলা, তার চরিত্রের অকৃতজ্ঞতা, পৈশাচিকতার বহিঃপ্রকাশ।
একজন শিক্ষক কতটা বিকৃত মস্তিষ্কের হলে ছাত্রদের রক্তের উপর পা মাড়িয়ে রিসোর্টে গিয়ে নারী নিয়ে ফূর্তি করতে পারে। হে অন্ধভক্ত কুল ভাবুন, ভাবুন ট্রাই করুন।
 
অন্যদিকে কিছুদিন পূর্বে আমার হালকা ঠান্ডা আর জ্বর আসলে কভিট-১৯ ভেবে আমার কলেজের অধ্যক্ষ ম্যাম দুইবার এবং উপাধ্যক্ষ স্যার একাধিকবার ফোন দিয়ে খবর নিয়েছে। এছাড়াও একাধিক শিক্ষক প্রতি মূহুর্তে খোঁজ খবর রেখেছে।
আমি ছয়/সাতদিন অসুস্থ ছিলাম। প্রতিদিন ২০+ বার শুধু আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক/ শিক্ষিকাদের ফোনেই ছিলো।
হে মাদ্রাসার ছাত্রসমাজ, হিসাব মিলাও, মিলানোর চেষ্টা করো।
এই মামুনুলের ডাকে আন্দোলনে এসে পূনরায় তোমরা রাস্তায় গুলি খেয়ে পরে থাকলেও এই মামুনুলরা তোমাদের রক্তের উপর পা মাড়িয়ে তোমাদের মাথা বেচা টাকা দিয়ে আবার কথিত তৃতীয় স্ত্রী নিয়ে রিসোর্টে গিয়ে ফূর্তিই করবে।
মানবদেহের একসাথে বিশটি হাড় ভাঙার সমান ব্যাথা সহ্য করে তোমাকে জন্ম দেওয়া তোমার মায়ের কোলেই শুধু খালি হবে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তোমার খরচ যোগানো বাবার স্বপ্নই শুধু অপূর্ণ থেকে যাবে।
ওই রিসোর্টগুলো পশ্চিমা সংস্কৃতি ফলো করে তৈরী যা শরীয়াহ সম্মত নয়। তাহলে ইসলামের ইজারা নেওয়া একজন প্রথম শ্রেণীর আলেম/ ধর্মীয় নেতা, কিভাবে শরীয়াহ সম্মত নয়, এমন যায়গায় যায়?
মামুনুল হক সাহেব বর্তমানে রাস্ট্র ক্ষমতায় যেতে চায়। তার বক্তব্য ও গতিবিধি দেখে মনে হয় তিনি রাস্ট্র প্রধান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।এটা অবশ্যই অপরাধ নয়।একটি গণতান্ত্রিক রাস্ট্রে যেকেউ রাস্ট্র প্রধান হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে। সেই লক্ষে তিনি খেলাফত মজলিশ নামে একটি দলও গঠন করেছেন।
তিনি সেই লক্ষ পূরণের নিমিত্তে ইতোমধ্যেই হেফাজতকে ব্যবহার করে দেশের মধ্যে ব্যাপক অরাজকতাও সৃষ্টি করেছেন? শুধুমাত্র বি-বাড়িয়াতেই প্রায় ২৭ টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাংচুরসহ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে তার হেফাজত কর্মী বাহিনী।
গত শুক্রবারেও জুমার নামাজের পর তার কর্মী সমর্থকরা সরকার দলীয় সকল সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাফের বলে স্লোগান দিয়েছেন।
যা ছিলো মোটামুটি এমন-
ছাত্রলীগ-কাফের,
যুবলীগ – কাফের,
স্বেচ্ছাসেবকলীগ- কাফের,,,,
একটা একটা কাফের ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর।
 
এখন আমার মনে হয় ৫ বছর একটা শিশুও বুঝবে, এমন একজন মানুষকে গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নজরদারিতে রাখবে।
এই সামান্য বিষয়টা বুঝতে পারেন নি মামুনুল হক। তাই দেশের এই সিচুয়েশানে তিনি গেছেন রিসোর্টে নারী নিয়ে ফূর্তি করতে!
এই সামান্য হিসেবটা যে মেলাতে পারে না আমি মনে করি সে রাস্ট্র তো দূরে থাক বরং গ্রামের একটি ইউনিয়নের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতা রাখে না।
মোদ্দাকথা, হযরত মোহাম্মদ(সঃ) কর্তৃক জান্নাতের টিকিট প্রাপ্ত, রাসুল (সঃ) এর দুই মেয়ের জামাই, পবিত্র কুরআনের সংকলক এবং ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রাঃ) কে, কুরআন অবমাননার দায়ে হত্যাকারী আর বর্তমান হেফাজত নেতা মামুনুল হকের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।
 
লেখকঃ সাংবাদিক জাফর ইকবাল


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ