1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

স্যালুট অদম্য সাহসী মু‌ক্তি‌যোদ্ধা শেখ জামাল

শরিফুল হাসান : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১

পাকিস্তানি সেনাবা‌হিনীর ব‌ন্দিদশা থেকে পালিয়ে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে। অস্ত্র হাতে সরাসরি যুদ্ধ করেছিলেন। দারুণ একজন ক্রিকেটার ছিলেন তি‌নি। ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট। সেনা কর্মকর্তা কিংবা একটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সন্তান হয়েও খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। কিন্তু আফসোস মাত্র ২১ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্বপরিবারে তাকেও হত্যা করা হয়।
বল‌ছি শেখ জামালের কথা। বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমানের দ্বিতীয় ছেলে শেখ জামাল। বড় ছেলে শেখ কামাল সম্পর্কে মোটামুুটি তথ্য পাওয়া গে‌লেও অনলাই‌নে শেখ জামাল সম্পর্কে খুব বে‌শি তথ্য নেই। আচ্ছা আওয়ামী লীগ কী শেখ জামাল সম্পর্কে বিস্তা‌রিত কোন বই প্রকাশ করেছে? জানা নেই।
বহু খোঁজাখুঁজি বিশেষ করে করে প্রবীণ সাংবাদিক এ বি এম মুসার বই‌ ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. বায়েজিদ সরোয়ারের শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের দুঃসাহসিক জীবন থেকে যা পেলাম তাই নিয়ে তিন বছর আগে লেখাটা লিখেছিলাম। আসলে শেখ জামাল সম্পর্কে জানলে মুগ্ধ হতে হয়।‌ সে কারণেই আবার শেয়ার করা।
গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল আজকের দিনে জন্মগ্রহন করেন। ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ থেকে ম্যাট্রিক পাস ক‌রেন তিনি। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্য‌মিক। তিনি দারুন গিটার বাজাতেন। ভাল ক্রিকেটার ছিলেন। বিনয়ী শেখ জামাল সবার খুব প্রিয় ছিলেন।
১৯৭১ সা‌লে মহান মু‌ক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে গ্রেপ্তার করা হয় শেখ জামালকে। ধানমন্ডির ১৮ নম্বর রোডে পাকিস্তানী বন্দিদশায় ছিলেন। তিনি সব সময় চিন্তা করতেন কি করে এখান থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া যায়। সত্যি সত্যি একদিন পালালেন। যোগ দিলেন মুক্তিযুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু বি‌রোধী অনেকই কথায় কথায় বলে, মু‌ক্তিযুদ্ধের সময় তো বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যরা গ্রেপ্তার ছিলেন। কী কনেছেন তারা? অথচ বঙ্গবন্ধুকে যখন ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের জেলে ফাঁ‌সিতে ঝুলিয়ে হত্যার হত্যার জন্য হুম‌কি দেওয়া হচ্ছে, তি‌নি যখন মৃত্যভয়কে উপেক্ষা ক‌রছেন। ও‌দিকে তাঁর দুই ছেলেই তখন স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করছে।
১৯৭১ সা‌লের ২৫শে মার্চ কালরাতে বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হ‌লেন। পুরো পরিবার ব‌ন্দি। বঙ্গবন্ধুর বড় ‌ছে‌লে শেখ কামাল কামাল তখন যশোর সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যান। এরপর ভারতের বেলুনিয়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচের ক্যাডেট হিসেবে পাসিং আউট ক‌রে মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি কর্ণেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন ক‌রেন। আর শেখ জামাল বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস (বিএলএফ) সদস্য হিসেবে যুদ্ধ করেন। পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লং কোর্সের প্রথম ব্যাচের কমিশন্ড অফিসার হিসেবে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট হন।
শেখ কামাল শুরুতে ভারতে পালাতে পারলেও শেখ জামালের জন্য বিষয়টা ছিল খুবই ক‌ঠিন। কারণ শেখ কামালের মতো তি‌নি শুরুতেই সেনাবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতে পারেননি। পরিবারের বাকি সদস্যদের সাথে তাকে গ্রেপ্তার করে ধানম‌ন্ডির বাড়িতে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রক্ত যার ধমনীতে তাকে কে আটকে রাখবে?
মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য কিশোর শেখ জামাল ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট ধানমণ্ডির তারকাঁটার বেড়া দেওয়া পাকিস্তানি বাহিনীর বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে ভারতে যান। ধানমণ্ডি থেকে পালিয়ে ভারতের আগরতলা পৌঁছানো ছিল রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা।
একাত্তরের আগস্টের একদিন সকালে মা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব আবিষ্কার করলেন, তার সন্তান জামালকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্বামী এবং এক সন্তানকে আদৌ আর কখনো দেখতে পাবেন কিনা জানেন না, এর মধ্যেই শেখ জামালকে খুঁজে না পেয়ে চরম আতংকিত হ‌য়ে উঠ‌লেন।
উদ্বিগ্ন ফজিলাতুন্নেন্সা মুজিব তার সন্তানকে অপহরণের অভিযোগ তুললেন পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। তার এই অভিযোগ আলোড়ন তুললো সারা বিশ্বে। অনেকগুলো বিদেশী পত্রিকা নিউজ করলো, পাকিস্তানীরা গুম করেছে বন্দী শেখ জামাল‌কে।
শেখ জামাল তখন কোথায়? বুকের মধ্যে তখন তার মুক্তির গান। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে পালিয়েই শেখ জামাল সরাসরি চলে গিয়েছিলেন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে। তারপর ট্রেনিং শেষ করবার পর তাকে মুজিব বাহিনীতে নেওয়া হয়। এরপর শুরু ক‌রেন অস্ত্র হাতে যুদ্ধ। কিন্তু শেখ জামালের এই খবরটা প্রবাসী সরকার গোপন রা‌খে যা‌তে করে পা‌কিস্তা‌নি বা‌হিনী ব‌ন্দি মু‌জিব প‌রিবা‌রের কাউ‌কে হত্যার কথা ভাবতেও না পারে। আর বন্দী অবস্থায় পাক বা‌হিনীর হেফাজত থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ছেলের গায়েব হয়ে যাওয়ার খব‌রে প্রচন্ড সমালোচনার মুখে পড়েছিলপা‌কিস্তা‌নিরা।
তবে ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বর লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকায় মুক্তিযুদ্ধের যেসব আলোকচিত্র ছাপা হয়েছিল, তার একটিতে সীমান্তের ১০ মেইল ভেতরে সাবমেশিনগান হাতে শেখ জামালকে যুদ্ধ করতে দেখা যায়। এই ছ‌বিটা তু‌লে‌ছি‌লেন প্রয়াত খ্যাতিমান সাংবাদিক এবিএম মুসা।
মুসা ভাই তাঁর মুজিব ভাই বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় শেখ জামাল সম্পর্কে লিখেছেন, “জামাল সবসময় চুপচাপ থাকতো। কোনদিন ৩২ নম্বরে গেলে খাবার ঘরের পশ্চিম কোনে একটা ছোট্ট কক্ষে তাকে লেখাপড়া করতে দেখতাম। সেই মুখচোরা লাজুক তরুণকে যুদ্ধের ময়দানে পেলাম এক অসম সাহসী জামাল হিসেবে। যুদ্ধ এলাকায় একটা পরিখায় চাইনিজ রাইফেল হাতে জামালকে দেখলাম। সাংবাদিকরা যাকে বলে স্কুপ সেই সুযোগ ছাড়তে আছে। আমার ক্যানন এসএলআরে ছবি তুললাম। পাঠালাল লন্ডনের দা টাইমসে। সেই খবর আর ছবি ছাপা হওয়ায় মুজিবনগর সরকার আমার উপর ক্ষিপ্ত হলো। তাদের রুষ্ট হওয়ার কারণ জামাল নিখোঁজের খবর দিয়ে তারা পাকিস্তান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু আমার ছবির পর সেই সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হলো।”
যারা বাংলা‌দে‌শের জন্য বঙ্গবন্ধুর প‌রিবা‌রের আত্মত্যাগ নি‌য়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করেন, তা‌রা একবার ভাবুন তো বাবা বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হয়ে পাকিস্তানের জেলখানায়। মা-বোনেরা পা‌কিস্তা‌নিদের হাতে বন্দি। আর দুই ছেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পা‌লি‌য়ে মু‌ক্তিযু‌দ্ধে। কেউ কারও খোঁজ জা‌নেন না। একটা প‌রিবা‌র দে‌শের জন্য আর ক‌তোটা আত্মত্যাগ কর‌তে পারে!
দেশ স্বাধীন হলে যুদ্ধের পোশাকেই যুদ্ধের ফ্রন্ট থেকে শেখ জামাল ঢাকায় ফেরেন ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর। বড় বোন শেখ হাসিনা, ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছোট ভাই শেখ রাসেলের সে কী আনন্দ! ওই দিনই বিকেলে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আয়োজিত স্বাধীন বাংলায় ঢাকার পল্টনে প্রথম জনসভায় উপস্থিত ছিলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধ শেষে শেখ জামাল কমিশন পেয়ে সেনাবাহিনীর সাধারণ লেফটেন্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। ২৯ জানুয়ারি ১৯৭৪। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো। সেনাবাহিনী সম্পর্কে শেখ জামালের আগ্রহ দেখে মার্শাল টিটো তাঁকে যুুগোস্লাভ মিলিটারি একাডেমিতে সামরিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব দেন। সেখান থেকে শেখ জামালকে ছয় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্টে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরামর্শ দেন।
১৯৭৪ সালের শরতে স্যান্ডহার্স্টে সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের লক্ষ্যে শেখ জামাল লন্ডনে এসে পৌঁছেন। তবে স্যান্ডহার্স্টের পূর্বশর্ত হিসেবে জামালকে (ব্রিটেনের) আর্মি স্কুল অব ল্যাঙ্গুয়েজ, বেকনসফিল্ড থেকে প্রয়োজনীয় পূর্ব-প্রশিক্ষণ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সামরিক একাডেমির মধ্যে স্যান্ডহার্স্ট অন্যতম।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. বায়েজিদ সরোয়ারের একটা লেখা থেকে পেয়েছি, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন সেখানকার পাসিং আউটে ছিলেন রাজকুমারী এলিস। বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কমিশন লাভ করেন তিনজন গর্বিত তরুণ। তাঁদের দুজন হলেন অফিসার ক্যাডেট আলাউদ্দিন মো. আবদুল ওয়াদুদ ও মাসুদুল হাসান। তৃতীয় তরুণের নাম শেখ জামাল।
ব্রিটিশ পত্রপত্রিকায় কমিশনপ্রাপ্ত বাংলাদেশের এই তিনজন তরুণের ছবিটি বিশ্বকে এক প্রতীকী বার্তা দিয়েছিল—লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ তার সামরিক বাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে চায়।
প্রকৃতি খুব ভালোবাসতেন শেখ জামাল। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. বায়েজিদ সরোয়ার লেখাতেই পেয়েছি, ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্যান্ডহার্স্টের ‘এক্সারসাইজ ভার্জিন সোলজারের’ প্রশিক্ষণ চলাকালে সারা দিন হেঁটে তরুণ ক্যাডেটদের একটি দলটি বনে পৌঁছল। সন্ধ্যাবেলা খাওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লেন ক্লান্ত জামাল। মধ্যরাতে আকাশে মস্ত বড় চাঁদ আর তারা ঝলমলে জ্যোত্স্নায় বার্চ আর পাইনের বন অপার্থিব সৌন্দর্যে দেখে তাঁবুর বাইরে এসে জেগে ছিলেন বহুক্ষণ। বন্ধু মাসুদ আর ওয়াদুদও তাঁবু থেকে বেরিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ান। বার্চগাছের সারি ঢালু হয়ে নেমে গেছে সামনের উপত্যকায়, তারপর সেই পাহাড় সারির ওপর সেই অদ্ভুত পূর্ণিমা। তিন বাঙালি তরুণ স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখেন স্যান্ডহার্স্টের ‘প্রথম পূর্ণিমা’।
স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে ফিরে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের পোস্টিং হলো ঢাকা সেনানিবাসস্থ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। ব্যাটালিয়নের চার্লি কম্পানির কম্পানি কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম ভূঁইঞা, বীরপ্রতীক (পরবর্তীকালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল, প্রতিমন্ত্রী, বর্তমানে সংসদ সদস্য)। ক্যাপ্টেন নজরুলের অধীনে শেখ জামালের রেজিমেন্ট জীবনের হাতেখড়ি হলো ‘কম্পানি অফিসার’ হিসেবে।
দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে জামালের চাকরিকাল ছিল প্রায় দেড় মাস। কিন্তু এই স্বল্প সময়ে অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে তিনি অসাধারণ পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহেই জামাল অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তাঁদেরই একজন হয়ে যান। ট্রেনিং গ্রাউন্ডে, রণকৌশলের ক্লাসে, অবস্টাকল ক্রসিংয়ে অংশ নিয়ে সৈনিকদের মুগ্ধ করেন।
সন্ধ্যায় কখনো কখনো সৈনিক মেসে সৈনিকদের সঙ্গে খাবার খান। নিজের অর্থে কম্পানির সৈনিকদের জন্য উন্নত মানের প্লেটের ব্যবস্থা করেন। ইউনিটের অফিসাররা বিস্মিত হন নবাগত কনিষ্ঠতম অফিসারের সাবলীল রেজিমেন্টাল কর্মকাণ্ডে। মনে হতো সেনাবাহিনীই যেন তাঁর নিয়তি। আফসোস সেই সেনাবাহিনীর কতোগুলো দুর্বৃত্তদের হাতে প্রাণ দিতে হয় তাকে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট যেদিন শহীদ হন, তার আগেরদিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। এবিএম মুসা লিখেছেন,“১৪ আগষ্ট রাতেই তার চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু বেগম মুজিব স্নেহভরা মুখে বলেছিলেন আজ রাতটুকু থেকে ভোরে যাস”। কিন্তু তাকে আজীবনের জন্য চলে যেতে হয়।
ধানমণ্ডির বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে শেখ জামালের কক্ষে দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে (সাতক্ষীরার) কালীগঞ্জ রণাঙ্গনে তোলা রাইফেল কাঁধে শেখ জামালের মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি ছবি। দেখলেই মনে হবে দেশপ্রেমিক এক বীর মুক্তিযোদ্ধা।
আমার মাঝে মধ্যে মনে হয়, শেখ কামাল, শেখ জামাল বেঁচে থাকলে কেমন হতো আজকের বাংলাদেশ? আফসোস এই দু’জনকে তো হত্যা করা হয়েছেই সাথে আট বছরের শিশু রাসেলকেও হত্যা করা হয়েছে‌। মৃতদের বয়স বাড়ে না। যে বয়সে মারা গেছেন সেই বয়সেই আজীবন স্মরণ করা হয়‌। ২১ বছ‌রের এক তরুণের শেখ জামালের জন্য আজ শু‌ভেচ্ছা। স্যালুট মু‌ক্তি‌যোদ্ধা শেখ জামাল।
লেখক- শরিফুল হাসান, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ