২০০৯ সাল থেকে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার মাধ্যমে ১০ লাখ ২২ হাজার ৯৫৮ জন মানুষ বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৪৫ কারাবন্দিকে ৬৪টি জেলা কমিটির মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৬৪টি জেলা লিগ্যাল এইড অফিস, সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস, ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেল, সরকারি আইনি সহায়তায় জাতীয় হেল্পলাইন কলসেন্টার (টোল ফ্রি-১৬৪৩০) নম্বরের মাধ্যমে বিনামূল্যে ১০ লাখ ২২ হাজার ৯৫৮ জনকে আইনি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে ১৮৭ কোটি ৪৪ লাখ ৬১ হাজার ৬৮৭ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’র আওতায় বিনামূল্যে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৪৫ জন কারাবন্দি আইনি সহায়তা পেয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে (২০১৫ সালের ৮ সেপ্টম্বর সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস উদ্বোধন করা হয়) চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৪২৪ জন। দেশের ৬৪ জেলায় স্থাপিত জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ২ হাজার ৪০৭ জন। এই সময়ে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে ১৮০ কোটি ৯১ লাখ ২৫ হাজার ৪২৫ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়।
এর মধ্যে গত ১২ বছরে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি সেবার (এডিআর) মাধ্যমে নিষ্পত্তিকৃত মামলা/বিরোধের সংখ্যা ১ লাখ ১১ হাজার ৪টি এবং এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তিকৃত মামলা/বিরোধে উপকারভোগীর সংখ্যা ২ লাখ ১২ হাজার ৩৫৯ জন। এ সময়ে ৬৪ জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের আইনি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার ৯৫৩টি।
প্রতিবেদনে আরও হয়েছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ২৮ হাজার ৩৩০ জন। এ সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলের মাধ্যমে ৬ কোটি ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার ২৬২ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়। এর মধ্যে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির সেবার (এডিআর) মাধ্যমে নিষ্পত্তিকৃত মামলা/বিরোধের সংখ্যা ১ হাজার ৯০৯টি। এই সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলের আইনি সহায়তার মাধ্যমে নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ৫৮১টি।
এ সময়ে সরকারি আইনি সহায়তায় জাতীয় টোল ফ্রি হেল্পলাইনের (২০১৬ সারের ২৮ এপ্রিল আইনি সহায়তায় টোল ফ্রি জাতীয় হেল্পলাইন ১৬৪৩০ উদ্বোধন করা হয়) মাধ্যমে আইনি সহায়তাপ্রাপ্ত উপকারভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯৭ জন। এ ছাড়া ২০১২ সাল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৪৫ জন কারাবন্দি আইনি সহায়তা পেয়েছেন।
দরিদ্র ও অসহায় বিচারপ্রার্থীদের সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০০০ সালে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করে। এ আইনের আওতায় সরকার ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ প্রতিষ্ঠা করে এবং দরিদ্র অসহায় মানুষের আইনের আশ্রয় ও প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশে এ সংস্থার অধীনে প্রত্যেক জেলায় জেলা ও দায়রা জজকে চেয়ারম্যান করে একটি করে জেলা কমিটি গঠন করা হয়।
উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা লিগ্যাল এইড কমিটি এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করা হয়। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টেও একটি লিগ্যাল এইড কমিটি রয়েছে। যার চেয়ারম্যান হচ্ছেন হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি। এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের শ্রম আদালতে দুটি শ্রমিক আইনগত সহায়তা সেলের মাধ্যমে আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে।