1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

১১৬ ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ নজরদারিতে

বিশেষ প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২

মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ১১৬ ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ ও মৌলবাদী তৎপরতায় যুক্ত এক হাজার মাদ্রাসার নামের তালিকা সংবলিত ‘শ্বেতপত্র’ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে জমা দিয়েছে দেশের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত গণকমিশন। চিহ্নিত ১১৬ ধর্ম ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সারাদেশে মৌলবাদী তৎপরতা, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও, অনিয়ম, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ করা হয়েছে এ শ্বেতপত্রে।

গণকমিশনের চেয়ারপারসন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল বুধবার দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ ও মানবাধিকার কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের হাতে ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক ২ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার এ শ্বেতপত্র তুলে দেন।

অপরাধ তদন্ত করে এই ‘ধর্ম ব্যবসায়ী’ ও মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে গণকমিশনের শ্বেতপত্রে। সে মোতাবেক প্রশাসনিক নজরদারিও শুরু হয়েছে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

শ্বেতপত্র জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন গণকমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, কমিশন সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কাজী মুকুল, সদস্য আসিফ মুনীর তন্ময় ও ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী।

দুদকে শ্বেতপত্র জমা দেওয়ার পর ঢাকায় দুদক কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের গণকমিশনের চেয়ারপারসন বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক জানান, তারা ৯ মাস তদন্ত করে ২ হাজার ২০০ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র তৈরি করেছেন। তাতে বহু ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। জঙ্গিবাদ ছড়াতে জামায়াতে ইসলামী ও ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করার তথ্যও মিলেছে। তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা ও দুর্নীতির তথ্য দুদকে জমা দেওয়া হয়েছে। তাদের আর বাড়তে দেওয়া যায় না।

দেশের বিভিন্ন স্থানের ডিসি, এসপি, ইউএনওসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে এ শ্বেতপত্রে জানানো হয়েছে, তারা মৌলবাদী ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে উস্কানি দিচ্ছেন।

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে গণকমিশনের চেয়ারপারসন দুদক চেয়ারম্যানকে উদ্ধৃত করে বলেন, তিনি জানিয়েছেন, অর্ধশতাধিক ‘ওয়াজ’ ব্যবসায়ীর দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। শ্বেতপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুদক আইন অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে। জেলে আটক মাওলানা মামুনুল হকসহ যারা মৌলবাদী তৎপরতা ও ধর্মীয় সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলমান।

গণকমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ১ হাজার মাদ্রাসা ও ওয়াজকারীদের নাম-পরিচয় শ্বেতপত্রে বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। এখানে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও হেফাজতের কর্মকাণ্ড উঠে এসেছে। তাদের অর্থনৈতিক জবাবদিহিতার আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়েছে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও গণকমিশনের সমন্বয়ক কাজী মুকুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই শ্বেতপত্র তৈরি করা হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, মৌলবাদী গোষ্ঠীর অর্থের প্রবাহ চলমান রয়েছে। এতে তরুণ সমাজ বিপথে যাচ্ছে। গণকমিশন সব মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক শক্তির চেহারা উন্মোচন করছে।

গতকাল বুধবার দুদক চেয়ারম্যানের কাছে শ্বেতপত্র জমা দেওয়ার সময় দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহাবুব খানও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মান্ধদের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা অনুসন্ধানে সহযোগিতার আশ্বাস দেন গণকমিশনের নেতারা। পরে সাংবাদিকদের দুদকের ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, গণকমিশন যে শ্বেতপত্র দুদকে জমা দিয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। শ্বেতপত্রে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেলে সে ব্যাপারে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

গণকমিশন সূত্র জানায়, গত ১২ মার্চ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আনুষ্ঠানিকভাবে শ্বেতপত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন।

১১৬ ‘ধর্ম ব্যবসায়ীর’ নাম

গণকমিশনের শ্বেতপত্রে সারাদেশে ওয়াজ-মাহফিলের মাধ্যমে জঙ্গি মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বিস্তারে জড়িত ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন- মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মুফতি রেজাউল করিম, মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করিম, মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ (বাশার), মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মুফতি দিলওয়ার হোসাইন সাইফী, মাওলানা সাইয়ে্যদ কামাল উদ্দিন জাফরী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভূজপুরী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা মুহিব খান, মুফতি সাঈদ আহমদ কলরব, মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, মাওলানা গিয়াস উদ্দিন তাহেরী, মাওলানা আবদুর রহিম বিপ্লবী, মাওলানা আরিফ বিল্লাহ, মাওলানা বজলুর রশিদ ও মুফতি নাজিবুল্লাহ আফসারী।

এ তালিকায় আরও রয়েছেন- মাওলানা ওয়াসেক বিল্লাহ নোমানী, মুফতি নূর হোসেন নূরানী, মুফতি কাজী ইব্রাহিম, মাওলানা গোলাম রাব্বানী, মাওলানা মুজাফফর বিন মহসিন, মাওলানা মোস্তফা মাহবুবুল আলম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবি, মাওলানা শায়েখ সিফাত হাসান, মাওলানা মোহাম্মদ রাকিব ইবনে সিরাজ, মাওলানা ফয়সাল আহমদ হেলাল, মাওলানা মতিউর রহমান মাদানী, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা হাফিজুর রহমান ছিদ্দীকী, মাওলানা আজিজুল ইসলাম জালালী ও মাওলানা মেরাজুল হক কাসেমী।

তালিকায় আরও রয়েছেন- মুফতি মুহসিনুল করিম, মাওলানা আবদুল বাসেত খান, মাওলানা আবদুল খালেক সাহেব শরিয়তপুরী, মুফতি মাহমুদ উল্লাহ আতিকী, মুফতি উসমান গণি মুছাপুরী, মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, মুফতি শিহাবুদ্দীন, মুফতি মুসতাঈন বিল্লাহ আল-উসওয়ায়ী, মাওলানা আশরাফ আলী হরষপুরী, মাওলানা জাকারিয়া, মুফতি আমজাদ হোসাইন আশরাফী, মুফতি আনোয়ার হোসাইন চিশতী, মাওলানা আতিকুল্লাহ, মাওলানা বশির আহমদ, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মিরপুরী, মাওলানা রিজওয়ান রফিকী, মাওলানা আবরারুল হক হাতেমী, মাওলানা রাফি বিন মুনির ও মাওলানা আনোয়ারুল ইসলাম জাবেরী।

এ ছাড়া রয়েছেন- মাওলানা মোতাসিম বিল্লাহ আতিকী, মুফতি শেখ হামিদুর রহমান সাইফী, মাওলানা আজহারুল ইসলাম আজমী, মাওলানা কামাল উদ্দিন দায়েমী, মাওলানা কামাল উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন নুরী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম মাজহারী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফেরদাউস, মুফতি এহসানুল হক জিলানী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান জিহাদি, মুফতি আব্দুল হক, মুফতি শাহিদুর রহমান মাহমুদাবাদী, মাওলানা ইসমাঈল বুখারী, মাওলানা জয়নুল আবেদীন হাবিবী ও মাওলানা ইউসুফ বিন এনাম।

এ ছাড়া রয়েছেন মাওলানা শাববীর আহমদ উসমানী, মুফতি জাহিদুল ইসলাম যায়েদ, মাওলানা আবদুল কাইয়ুম জামী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা ইসমাইল হোসাইন, মুফতি আবদুর রহিম হেলালী, মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, মাওলানা মুশাহিদ আহমদ উজিরপুরী, মাওলানা কাজিম উদ্দীন (অন্ধ হাফেজ), মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান, মুফতি হারুনুর রশিদ, মাওলানা আবুল কাসেম, মুফতি ওয়ালী উল্লাহ, মাওলানা আবু নাঈম মুহাম্মাদ তানভীর, মাওলানা জাকারিয়া নাটোর ও মাওলানা আবুল হাসান (সাদী)।

এ ছাড়া অন্য যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- মুফতি রুহুল আমিন নুরী, মুফতি মামুনুর রশিদ কামালী, মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ, মাওলানা ডা. সিরাজুল ইসলাম সিরাজী (নওমুসলিম), মাওলানা শামসুল হক যশোরী (নওমুসলিম), মুফতি হাবিবুর রহমান মিসবাহ, মাওলানা মুফতি ওলিউল্লাহ, মাওলানা বেলাল হুসাইন ফারুকী, মুফতি ওমর ফারুক যুক্তিবাদী, মাওলানা আমির হামজা, মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী, মাওলানা তারেক মনোয়ার, মাওলানা আবদুল হালিম বোখারী, মাওলানা আতাউল্লাহ হাদেমী, মাওলানা আফম খালিদ হোসেন, মাওলানা মামুনুল হক (বর্তমানে কারাগারে), মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা মুশতাকুন্নবী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা কুতুব উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা বেলাল উদ্দীন, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মাওলানা রুহুল আমিন যুক্তিবাদী, মাওলানা আবুল কালাম বয়ানী, মাওলানা রফিকুল্লাহ আফসারী, মাওলানা আবদুল্লাহ আল-আমিন, মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসাইন সাইফী, মাওলানা আলাউদ্দীন জিহাদি, মাওলানা আবু বকর মোহাম্মদ জাকারিয়া, জৈনপুরী সিলসিলার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ও মাওলানা মাহবুবুর রহমান জৈনপুরী।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ