1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রূপপুর প্রকল্পে যেভাবে লাভবান দেশের অর্থনীতি

ইবার্তা সম্পাদকীয় : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রূপপুর যা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে সূচনা হলেও বাস্তবায়নের পর্যায়ে পৌঁছে প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ড. এম ওয়াজেদ মিয়ার তত্ত্বাবধানে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে পাবনা জেলার ঈশ্বরদীর রূপপুর নামক স্থানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২৪ সাল নাগাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি (প্রথম ও দ্বিতীয়) ইউনিটের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ১২ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিয়েছে ১ বিলিয়নের কিছু বেশি এবং রাশিয়া লোন দিয়েছে ১২ বিলিয়নের মতো। আর ২টি রিএক্টর চালু হওয়ার পর প্রতি বছর কিস্তি পরিশোধ করতে হবে ৫৬৫ মিলিয়ন ডলার। যেহেতু কিস্তি পরিশোধ করতে হবে তাই এই প্রকল্পের লাভ থেকে কিস্তির অর্থ উঠে আসলে আর ভর্তুকি দিতে হবেনা।

বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে আয়

দুটি রিএক্টর থেকে বিদ্যুত পাওয়া যাবে ২৪০০ মেগাওয়াট বা ২৪,০০,০০০ কিলোওয়াট বা ইউনিট। এক ইউনিট বিদ্যুৎ যদি ৫ টাকায় বিক্রি করা হয় এক ঘন্টায় আয় হবে ২৪,০০,০০০ × ৫ বা এক কোটি বিশ লাখ টাকা। ১ দিনে ২৪ ঘন্টা হিসেবে দৈনিক আয় ১,২০,০০,০০,০০০ × ২৪ বা ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আর বছরে ২৮,৮০,০০,০০০ × ৩৫৬ বা ১০ হাজার ৫১২ কোটি টাকা আয় হবে।

যদি ডলারে হিসেব করা হয়, তাহলে বার্ষিক আয় ১০,৫১,২০,০০০,০০০ ÷ ৮৫ বা ১,২৩,৬৭,০৫,৮৮২ ডলার বা ১২৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মোট ব্যয়

প্রতি মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনে জ্বালানি খরচ হবে ৪.৫ থেকে ১১.২ ডলার এবং রক্ষণাবেক্ষণ-পরিচালনা খরচ হবে প্রতি মেগাওয়াটে ৮ থেকে ১৪ ডলার। এই দুই ধরনের ব্যয় মিলিয়ে প্রতি মেগাওয়াটে গড় খরচ হবে ১৬ থেকে ১৭ ডলারের মতো। এর বেশি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই কারণ এতে ব্যবহৃত হয়েছে VVER-1200 মডেলের সবচেয়ে আধুনিক রিয়্যাক্টর এবং রাশিয়ান জ্বালানি তুলনামূলক সস্তা।

প্রতি মেগাওয়াট ১৮ ডলার হিসেবে ২৪০০ মেগাওয়াটে খরচ হবে ২৪০০ × ১৮ বা ৪৩,২০০ ডলার বা ৩৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা প্রতি ঘন্টা। এক দিনে খরচ ৪৩,২০০ × ২৪ বা ১০,৩৬,৮০০ ডলার। এক বছরে খরচ ১০,৩৬,৮০০ × ৩৬৫ বা ৩৭,৮৪,৩২,০০০ ডলার বা ৩৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

যদি ২৪০০ মেগাওয়াটে এ না চলে ৯০% সক্ষমতায় চলে, তাহলে এর ব্যয় কমে দাঁড়াবে ৩৭৮ × ৯০% বা ৩৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

পাশাপাশি আয় ও কমে দাঁড়াবে ১২৩৬ × ৯০% বা ১১১২ মিলিয়ন ডলারে। আর বার্ষিক নিট লাভ দাঁড়াচ্ছে ৭৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

প্রতি বছর কমপক্ষে ৭৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার লাভ হলে ৫৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিশোধে প্রকল্পের কোনো বেগই পেতে হবেনা।

বিপুল লাভের আশা

এভাবে বিশ বছরে কিস্তি পরিশোধ করেও প্রতি বছর ২০০ মিলিয়ন ডলার লাভ হবে। আর এই ১২ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প থেকে ৬০ বছরে লাভ আসবে প্রায় ৬০ × ১১১২ বা ৬৬,৭৭৪ মিলিয়ন বা ৬৬ বিলিয়ন ৭৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাত ৬৬ ÷ ১২ বা প্রায় সাড়ে ৫ বার লাভ ফেরত আসবে। এছাড়াও ৬০ বছর পরেও আপগ্রেড করে চালানো যাবে।

আর্থিক লাভের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু লাভ হবে দেশের। এর ফলে যে দীর্ঘ মেয়াদী পাওয়ার সোর্স পাওয়া যাবে এবং টালমাটাল বিশ্ব পরিস্থিতিতে আমদানি নির্ভর জ্বালানি থেকে তৈরি বিদ্যুতের অনিশ্চয়তা থেকে বাঁচা যাবে। অর্থাৎ জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, যা এই প্রকল্পের সবচাইতে ইতিবাচক দিক।

এ প্রকল্পকে ঘিরে যে বিপুল পরিমান দক্ষ জনশক্তি তৈরি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন ডিপার্টমেন্ট খুলেছে, এর মাধ্যমেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দেশের জন্য প্রত্যক্ষ অবদান রাখছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ