1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী : একটি গানে অমর তিনি

তুষার আবদুল্লাহ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ২০ মে, ২০২২

তখন আমি ‘চলতিপত্র’ পত্রিকায়। পুরানা পল্টনে পুরাতন সন্ধানী প্রেসের পাশের অফিসে বসি। টেলিফোন সম্পাদক বিভু’দার (বিভুরঞ্জন সরকার) টেবিলে। সেদিন সকালে তখনো দাদা আসেননি। ফোন বাজতেই আমি গিয়ে রিসিভার উঠালাম।

ও প্রান্ত থেকে জানতে চাইলেন, বিভু কই? জানালাম, দাদা আসেননি এখনো। ও প্রান্ত থেকে জানতে চাইলেন, তুমি কে বলছ? নিজের পরিচয় দিলাম। তিনি বললেন, চিনি তোমাকে। তোমার লেখা পড়েছি।

পড়ালেখা শেষ কি না, চলতিপত্রের পরের সংখ্যায় কী লিখছি, এ নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললেন। আমি ‘জি’ এবং ‘হ্যাঁ’র মধ্যে রয়ে গেলাম। কারণ আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর সঙ্গে কথা চালিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য আমার ছিল না। এখনো হয়নি।

সেদিনের কথা সেখানেই শেষ হয়েছিল। আমি ওই কথা বলার আবেগ ও উত্তেজনায় কম্পমান ছিলাম বেশ কিছুদিন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন আড্ডায় গাফ্‌ফার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার গল্প তুলেছি নানা ছুতোয়। সঙ্গীদের এই অভিজ্ঞতা নেই। আমার আছে, তাও অনার্স সেকেন্ড ইয়ার পড়ুয়া আমার। সুতরাং আনন্দের সীমা ছিল না।

তখন ১৯৯৭ সাল। বিভুদা একদিন ঘোষণা দিলেন, গাপ্পু ভাই আসছেন। বিভুদা মজা করে গাফ্‌ফার ভাইকে আমাদের আড্ডায় এভাবেই ডাকতেন। ঠিক হলো, তিনি এলে চলতিপত্র থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

সংবর্ধনা আয়োজনের দায়িত্ব পড়ল আমার এবং কাকলী প্রধানের ওপর। অনুষ্ঠানের ভেন্যু ঠিক হলো সন্ধানী’র সম্পাদক গাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদের গাজী ভবনের বেইজমেন্টে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গানের আয়োজন রাখার কথাও বললেন বিভুদা। আমি আর কাকলী গায়ক রফিকুল আলমের বাড়ি গেলাম। অল্প বাজেট। শুধু গাফ্‌ফার ভাইয়ের জন্যই তিনি তার দলবল নিয়ে এলেন।

চলতিপত্রের দেওয়া সংবর্ধনা সন্ধ্যায় তিনি যখন এলেন, তখন বেশ ক্লান্ত। আরও কয়েকটি অনুষ্ঠান শেষ করে এসেছেন। খুব একটা প্রাণের যোগ ছিল না সেই অনুষ্ঠানে। ফুল নিলেন, বিদায় নিলেন সামান্য কিছু কথা বলে।

রফিকুল আলম ভাইয়ের গানও শোনা হয়নি ক্লান্তির জন্য। পুরো অনুষ্ঠানে আমি দূরেই ছিলাম। একবারও কাছে গিয়ে নিজের পরিচয় দেওয়ার ইচ্ছে হয়নি। কাছে ঘেঁষে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। তাও যাইনি। মনে ভয় ছিল, টেলিফোনে যতটুকু পেয়েছি, ততটুকু যদি না পাই।

তিনি ফিরে গেলেন লন্ডনে। বেশ কিছুদিন পর আবার ওনার টেলিফোন তুলি আমি। প্রথমেই জানতে চান- গাজীর বাড়ি’র অনুষ্ঠানে তোমাকে দেখলাম না যে। ছিলে না? জানালাম- ছিলাম। তাহলে?

উত্তর দিই, ভয়ে কাছে যাইনি। তিনি হেসে বললেন, রিপোর্টারের ভয় পেতে নেই।

আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী দুর্দান্ত এক বর্ণাঢ্য জীবন কাটিয়ে গেলেন। নানামাত্রিক প্রতিভায় নিজেকে বিকশিত করেছিলেন তিনি। যখন যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই পেয়েছেন সাফল্য। একজন সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ হিসেবে অনেক বেশি সমাদৃত তিনি।

তবে একজন গীতিকার হিসেবে আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরীর নাম বাংলাদেশের বুকে থেকে যাবে চিরকাল। অমর হয়ে রইবেন তিনি অমর একুশের গানটির জন্য।

লেখক : তুষার আবদুল্লাহ, গণমাধ্যমকর্মী।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ