1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের স্থায়ী ক্ষতি করেছেন

হামজা রহমান (অন্তর) : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩

পাকিস্তান আর্মির অনুগত অফিসার হিসেবে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে পদক পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও কমাণ্ডার ও সেনা কর্মকর্তা কোটায় পদক জুটেছিলো, কিন্তু তাকে কখনো সম্মুখ সমরে দেখা যায়নি। একটা ছোটখাটো অপারেশনেও তাকে ফ্রন্টে পাওয়া যায়নি। জেনারেল ওসমানী তার এসব মতিগতি বুঝতে পেরে কমাণ্ডার পদ থেকে অপসারিত করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারি করেছিলেন যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে। জেড ফোর্স নামে একটা ব্রিগেডে কমাণ্ডার হলেন ঠিকই, কিন্তু যুদ্ধের ময়দানে এতো বড় ফোর্সের হয়ে তার কোনো বীরত্বের হদিশ কেউ দিতে পারে নি। যেনো পাকিস্তানের হয়ে মুক্তিযুদ্ধে “ডাবল এজেন্ট” তিনি! এসব প্রমাণ আরও স্পষ্ট হয় তার ক্ষমতা পাবার পর, রাজাকার প্রেম দেখে।

যুদ্ধের শুরুতে বাঙালি নিধনের জন্য পাকিস্তান থেকে আগত মারণাস্ত্র বোঝাই “সোয়াত” জাহাজের থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে অস্ত্র খালাশের দায়িত্ব ছিলো তার উপর, পাকিস্তানের এতোটা বিশ্বস্ত ছিলেন তিনি।

চট্টগ্রামে অবস্থানরত সবচাইতে সিনিয়র অফিসার কোটায় তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নির্দেশে ৮ম ব্যক্তি হিসেবে ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও পাঠ করলেন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে।

স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সবচাইতে বেশি সুবিধাভোগী তিনি, তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে একবারই একটা পদ সৃষ্টি করা হয়েছিলো, সেটা উপ-সেনাপ্রধান। ক্ষমতার কাছাকাছি যখনই গিয়েছে রাজাকারের প্রেমে পড়েছেন, তাদের পুনর্বাসন করেছেন, প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত করেছেন। তিনি মুগ্ধ ছিলেন স্বাধীনতা বিরোধীদের চরিত্রে। জাতিরপিতার হত্যাকারীদের পুরষ্কৃত করলেন, তাদের বিচারের সম্ভাবনা বন্ধ করতে সংবিধান সংশোধনের কুশীলব হলেন। কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইন হিসেবে বৈধতা দিলেন। পবিত্র সংবিধানে ধর্মীয় বিষবাষ্প ছড়ালেন, ছিন্নভিন্ন করলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিটি স্তম্ভ। অভ্যুত্থান দমনের নামে ক্যান্টনমেন্টের পর ক্যান্টনমেন্ট খালি করে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার ও সৈনিকদের হত্যা করে। তারপরও তাকে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা বলতে হবে? এরচেয়ে প্রহসন আর কিছু বোধহয় নেই।

রাষ্ট্রের বেতনভুক একজন জেনারেল সারাজীবন চাকরি করে হঠাৎ করে ক্ষমতা দখল করলেন, সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি রাজনীতিটাও করবেন। দল বানালেন। পয়সাওয়ালা, দুর্নীতিবাজ, মুনাফাখোর চোর-বাটপারদের তিনি রাজনীতির মাঠে নিয়ে আসলেন, যাদের অবৈধ টাকার কাছে জাত রাজনীতিবিদরা হারিয়ে যেতে লাগলো। তিনি রাজনীতির সংজ্ঞা পাল্টে দিলেন। ঘোষণা দিয়ে বললেন, “আই শ্যাল মেইক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর পলিটিশিয়ান।” বাস্তবে করলেনও তাই। দামি ঘড়ি ও সানগ্লাস পড়ে ক্যামেরার সামনে খাল কেটে তিনি শো-অফের রাজনীতি চালু করলেন। ঠিকঠাক বাংলা বলতে পারতেন না, তাই জনগণের সাথে কথা না বলে হেটে বেড়াতেন সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে। বক্তৃতা দেওয়ার সময় অযথা হাত নাড়াচাড়া করতেন যাতে তার অস্পষ্ট বাংলা উচ্চারণের দিকে কেউ খেয়াল না করে।

“দশটা হোন্ডা, বিশটা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠান্ডা” স্লোগান তুলে হ্যাঁ/না নামে একক প্রার্থিতার অদ্ভুত এক আইয়ুবীয় নির্বাচনও দেখালেন, যেখানে তার পক্ষে নাকি ভোট পড়েছে ৯৮.৯ ভাগ ভোট!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জুতাপেটার মুখোমুখি হয়ে এর প্রতিশোধ নিতে ছাত্রদের মধ্যে নিজের লাঠিয়াল বাহিনী বানাতে তৎপর হলেন। ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদেরকে ছাত্রদলে এনে থাইল্যান্ডের হোটেলে মদ আর নারীর নেশায় বুঁদ করে দিলেন। সৌদি আরবগামী হজ্বযাত্রীদের জন্য ‘হিজবুল বাহার’ নামে একটি জাহাজের ব্যবস্থা করেছিলো বঙ্গবন্ধু সরকার। এই জাহজে করেই ছাত্রদলকে প্রমোদে পাঠালেন তিনি। ইসলামের সেবায় নিয়জিত জাহাজকে বানালেন ছাত্রদলের অবৈধ কার্যকলাপের হেরেম। ছাত্রনেতারা হয়ে উঠলো মাফিয়া। ছাত্ররাজনীতিতে লেজুড়বৃত্তি চালু করে মূল দলের সরাসরি অঙ্গসংগঠন বানালেন। রাজনীতিটা তিনি রাজনীতিবিদের জন্য আসলেই চিরতরে কঠিন করে দিলেন।

তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের স্থায়ী ক্ষতি করে গিয়েছিলেন। ইতিহাসের কোথায় আছেন তিনি? ঠিকই আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। কেউ মনে রাখে না তার জন্মদিন, মৃত্যুদিন। এমনকি তার খুনের বিচারটাও কেউ চায় না, দু-দুবার ক্ষমতায় এসে তার নিজের পরিবারও চায় নি কোনদিন।

(কলামিস্ট ও ছাত্রনেতা হামজা রহমান অন্তর এর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে)


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ