1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

তিন পার্বত্যাঞ্চলের বনে ফিরছে আদি বৃক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৬ জুন, ২০২২

সাধারণত কোনো বনাঞ্চলে দেড় হাজারের বেশি প্রজাতির বৃক্ষ থাকলে সেই অঞ্চলটিকে বায়োডায়ভার্সিটি হটস্পট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দেশের পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে যে প্রাকৃতিক বনাঞ্চল রয়েছে, সেগুলো ইন্দো-বার্মা বায়োডায়ভার্সিটি হটস্পটের অংশ।

হটস্পট হলেও প্রায় দেড় শ বছর ধরে এই বনাঞ্চলের আদি বৃক্ষগুলোকে হটিয়ে বাণিজ্যিক মূল্য আছে এমন গাছ রোপণ করা হয়ে আসছে। এতে এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকিতে পড়েছে। এর পাশাপাশি, নানা কারণে গাছ কেটে মানুষের বসতি স্থাপন বা চাষাবাদও এর জন্য দায়ী।

এবার এই বনাঞ্চলের আদি বৃক্ষগুলোকে ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে এ অঞ্চলের ৩ হাজার হেক্টর জমিতে বৈলাম, গর্জন, সিলিট ও উরিয়াম গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বন অধিদপ্তর।

প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, ‘পৃথিবীতে যে ২৫টি বায়োডায়ভার্সিটি হটস্পট আছে, তার মধ্যে এই অঞ্চলটিও একটি। এখানকার উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের এই বনাঞ্চলটি ফিরিয়ে আনা দরকার।

‘এই জায়গায় যে নদীগুলো আছে, সেগুলো ওয়াটার রিজার্ভার হিসেবে ওয়াটার সেড ম্যানেজমেন্টের একটি বড় অংশ। এই নদীগুলো থেকেই কর্ণফুলীর উৎপত্তি। কর্ণফুলী থেকে আবার চট্টগ্রাম শহরের পানি সরবরাহ হচ্ছে। এই নদীগুলো জীবিত রেখে তিন জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর পানির চাহিদা মেটাতে ১৮৮১ সালে একটি রিজার্ভ ঘোষণা করা হয়েছিল, যা রেডওয়াটার রিজার্ভ নামে পরিচিত।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে এই ন্যাচারাল ফরেস্টগুলো আমরা কেটে টিক (সেগুন) প্ল্যানটেশন করেছিলাম, এর কারণ টিকের একটি বাণিজ্যিক মূল্য আছে। টিকের পাতার একটি প্রভাব আছে, এর নিচে মাটিতে অন্য কোনো গাছ হয় না। এখন আমরা আমাদের আদি ইকো সিস্টেমে ফেরত যেতে চাই। এখানে সাইট স্পেসিফিক যে গাছগুলো আছে, যেমন- বৈলাম, গর্জন, সিলিট, উরিয়াম এই গাছগুলো আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছি।

‘আমরা গত তিন-চার বছর ধরে এই কাজগুলো শুরু করেছি। কাপ্তাই ও বিলাইছড়ির আশপাশে যে রিজার্ভ আছে, সেখানে আমরা সেই পুরাতন গাছের চারা দিয়ে রিপ্ল্যানটেশনের উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর প্ল্যানটেশন আমরা সেই এলাকায় করেছি। আমাদের একটিই অবজেকটিভ, ইন্দো-বার্মা যে বায়োডায়ভার্সিটি হটস্পট, এটি যেন আমরা আবার ফিরিয়ে আনতে পারি।’

গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের (জিএফও) তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১৮ বছরে দেশের মোট ৩ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাকৃতিক বন হারিয়ে গেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকাতেই উজাড় হয়েছে ৯ শতাংশের বেশি। দেশের প্রাকৃতিক বনভূমির ৪০ শতাংশ রয়েছে পার্বত্য তিন জেলায়।

এভাবে বনভূমি উজাড় হওয়ায় পার্বত্যাঞ্চলে বসবাস করা অনেক প্রাণী অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাতি ও চিতাসহ।

গহিন অরণ্যে আদি বনে গাছ কাটা হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রধান বন সংরক্ষক বলেন, ‘সাঙ্গু রিজার্ভ বান্দরবান শহর থেকেও প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে। এখান থেকে শুরু হয়ে মিয়ানমার সীমান্তে গিয়ে এই বনাঞ্চলটি শেষ হয়েছে। এখানে দুর্গম এলাকা আছে, সেখানে ৩০০ নৃতাত্ত্বিক পরিবার আছে। আমরা চেষ্টা করছি, তাদের সঙ্গে কীভাবে অংশীদারত্বের মাধ্যমে সেখানকার জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা যায়।

‘সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর যে সদস্যরা আছে, তাদের সঙ্গেও আমরা সাম্প্রতিক সময়ে কথা বলেছি, যাতে একটি উইন উইন সিচুয়েশনে আমরা সাঙ্গুর জীববৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে পারি।’

ইন্দো-বার্মা বায়োডায়ভার্সিটি হটস্পট ছড়িয়ে আছে প্রায় ২৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ছাড়াও এই অঞ্চলটি চীনের ইউনান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, প্রায় পুরো থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া উপদ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত।

৫০ লাখ গাছের চারা বিতরণ করবে ‘বনায়ন’

প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন এবং দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ‘বনায়ন’ তার ৪২তম বছরে পদার্পণ করে ৫০ লাখ গাছের চারা বিতরণ শুরু করেছে। এ উদ্যোগটি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য দেশজুড়ে ২০টির বেশি নার্সারিতে সযত্নে চারা তৈরি করছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ