1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

পদ্মা সেতুর জন্য গোপালগঞ্জে মাছচাষিদের আয় বাড়বে ২০০ কোটি টাকা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১২ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু চালু হলে গোপালগঞ্জে মাছচাষিদের আয় বাড়বে ২০০ কোটি টাকা। ধানের পর নিম্ন জলাভূমি বেষ্টিত গোপালগঞ্জ জেলার চাষিদের আয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তর খাত মৎস্য চাষ। মৎস্য চাষ করে জেলার পাঁচ উপজেলার ১৭ হাজার চাষি স্বাবলম্বী হয়েছেন। মিষ্টি পানিতে গোপালগঞ্জের উৎপাদিত মাছ খুবই সুস্বাদু। তাই সারা দেশে এ মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গোপালগঞ্জ থেকে চাষিরা তাদের উৎপাদিত মাছ মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান। তাই তারা মাছের ন্যায্যমূল্য পান না। পদ্মা সেতু চালু হলে তারা সরাসরি ঢাকার আড়তে মাছ বিক্রি করে আরো বেশি লাভবান হবেন।

গোপালগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় জানিয়েছে, গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় ১১৪টি বিল, ১২৫ টি খাল, পাঁচটি নদী ও ছয়টি বাওড় রয়েছে। এসব উৎসে প্রতি বছর ১০ হাজার মেট্রিক টন পুঁটি, ট্যাংরা, শৈল, মাগুর, কই, শিং, টাকি, খলিশা, গজার, রুই, কাতলা, বোয়াল, আইড়, চিংড়ি, ইলিশ, নান্দেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উৎপাদিত হয়। জেলার ১৬ হাজার ৯৯৮টি পুকুর, ঘের ও মৎস্য খামারে ১৬ হাজার ১৮৫ জন খামারি ৩০ হাজার ২০০ মেট্রিকটন রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া, গ্রাস কার্পসহ কার্প জাতীয় মাছ উৎপাদন করেন। এছাড়া ১ হাজার খামারি ১ হাজার ঘেরে ৭৫২ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন করেন। সব মিলিয়ে জেলায় ৪০ হাজার ৯৫২ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। প্রতি কেজি মাছ গড়ে ২০০ টাকা কেজি দরে চাষি ও মত্স্যজীবীরা বিক্রি করেন। সে হিসেবে এ জেলায় ৮১৯ কোটি ৪ লাখ টাকার মাছ উৎপাদিত হয়। পদ্মা সেতু চালু হলে চাষি সরাসরি ঢাকায় মাছ বিক্রি করতে পারবে। প্রতি কেজি মাছে তারা অন্তত ৫০ টাকা বেশি পাবেন। সে হিসেবে গোপালগঞ্জে মাছে আয় বাড়বে ২০৫ কোটি টাকা।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া গ্রামের মাছচাষি হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা বিলের শ্যাওলা, গমের ভুসি ও চালের কুড়া দিয়ে কার্প জাতীয় মাছ চাষ করি। তাই আমাদের মাছের স্বাদ নদী বা বিলের মাছের মতোই। আমরা সরাসরি ঢাকার কারওয়ান বাজারে এই মাছ নিয়ে বিক্রি করতে পারি না। পদ্মা সেতু চালু হলে আমরা সরাসরি ঢাকায় মাছ বিক্রি করতে পারব। এতে আমরা প্রতি কেজি মাছে ৫০ থেকে ৭৫ টাকা বেশি পাব। বেশি দামে মাছ বিক্রি করে পরিবহন খরচ বাদেও বছরে আরো অন্তত ২০ লাখ টাকা অতিরিক্ত আয় করতে পারব।

মুকসুদপুর উপজেলার উজানী গ্রামের মৎস্য চাষি খলিলুর রহমান সোহেল বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে আমরা সরাসরি ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাছ বিক্রি করে আরো বেশি টাকা আয় করতে পারব।

ফড়িয়া জামাল শেখ বলেন, গোপালগঞ্জের মাছ আমরা খামারির কাছ থেকে কিনে সাধারণত ফরিদপুরের ভাঙ্গা, ঢাকা, খুলনা, মাদারিপুরসহ বিভিন্ন জেলায় চালান করি। এতে আমাদের পরিবহন খরচ বাদে কিছু লাভ থাকে। এখন পদ্মা সেতু খুলে দিলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ হবে। খামারি সরাসরি মাছ বিক্রি করে লাভবান হবেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, গোপালগঞ্জ নিম্নজলাভূমি বেষ্টিত একটি জেলা। এ জেলার পাঁচ উপজেলাতেই মাছ চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মাছ চাষ করে এখন পর্যন্ত গোপালগঞ্জের ১৭ হাজার খামারি স্বাবলম্বী হয়েছেন। জেলায় বর্তমানে প্রতি বছর ৪০ হাজার ৯৫২ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। যার বাজার দর ৮১৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। পদ্মা সেতু চালু হলে কৃষক এ মাছ সরাসরি ঢাকায় এনে বিক্রি করতে পারলে প্রতি কেজি মাছে তারা কমপক্ষে ৫০ টাকা বেশি পাবেন। এতে তাদের আয় বাড়বে ২০৫ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুকে ঘিরে এ অঞ্চলে মৎস্য চাষ বৃদ্ধি , মৎস্য ও কৃষিনির্ভর শিল্প স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ