1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

দেশে শুরু হয়েছে পনিরের বাণিজ্যিক উৎপাদন

বাণিজ্য প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২

পনির পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা বলেন, গবেষকরা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় পনির রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। গুণমানে ভাল হওয়ায় এদেশের পনিরের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিশোরগঞ্জসহ দেশের অনেক স্থানে উন্নতমানের দুগ্ধ আমিষ পনিরের বাণিজ্যিক উপাদন হচ্ছে। সুস্বাদু হওয়ায় প্রায় সবাই পনির পছন্দ করেন। দেশে ঠিক কতটুকু পনিরের চাহিদা আছে তার হিসাব এখানো করা হয়নি। বিদেশে এখানকার পনিরের সুনাম আছে। ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা: মনোজিৎ কুমার সরকার জানান, পনির হলো দুধ থেকে উৎপাদিত আমিষ জাতীয় খাদ্য। এটি দুগ্ধ আমিষের উত্তম উৎস। যা শিশু, কিশোর ও বয়োবৃদ্ধদের আমিষের পুষ্টি চাহিদা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মিটিয়ে থাকে। দৈনিক সামান্য পরিমাণে পনির খেয়ে আমিষের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এ ছাড়াও পনিরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন রয়েছে। পনির দুগ্ধজাত পণ্যের মধ্যে অন্যতম পণ্য। যা রেনিন নামক এনজাইম যোগ করে দুধ জমাট বাঁধিয়ে তৈরি করা হয়।

এদেশের অষ্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঠাকুরগাঁসহ বিভিন্ন স্থানে পনির তৈরি হয়ে থাকে। বর্তমানে দেশে দিন দিন পনিরের চাহিদা বাড়ছে এবং বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনও শুরু হয়েছে। পনিরের প্রকারভেদ আছে। তবে এদের স্বাদের খুব একটা পার্থক্য নেই। ইউরোপ, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, চীন, আমেরিকা ও ভারতে পনিরের ব্যবহার ব্যাপক।

পনির শরীর সুস্থ সবল রাখতে সাহায্য করে। হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করে। দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। ত্বকের লাবণ্য দিপ্তি দীর্ঘদিন বজায় রাখে। নিয়মিত সেবনে (লিনোলিক ও স্পাইনগো লিপিডম) ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পনিরে কার্বহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। পনিরে থাকা বিভিন্ন ভিটামিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তবে বেশি লবণাক্ত পনির শরীরের জন্য ভালো না। কারণ লবণ রক্তচাপ বাড়ায়। এ ছাড়া স্যাচুরেটেড ফ্যাটে পূর্ণ বলে বাড়াতে পারে হৃদরোগের ঝুঁকি।পনির তৈরির উপকরণের মধ্যে রয়েছে; গরু, মহিষ বা ছাগল, ভেড়ার দুধ। মাওয়ার পানি, অ্যালুমিনিয়াম পাত্র; ভ্যাট (পানি গরম করার আধুনিক পাত্র) ও গ্যাসের চুলা; আকৃতি দেওয়ার জন্য প্লাস্টিক ছাচ; প্যাকেটকরণ মেশিন; সংরক্ষণের জন্য ফ্রিজ এবং লবণ ইত্যাদি।

পাতলা সাদা কাপড় দিয়ে দুধ ছেঁকে নিতে হবে এবং পাত্রের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মেপে নিতে হবে। একটি বড় পাত্রে পানি নিয়ে ৪৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম করতে হবে এবং অন্য আরেকটি ছোট পাত্রে দুধ মেপে নিয়ে উক্ত গরম পানিতে রেখে দুধের তাপমাত্রাও ৪৫০ ডিগ্রী গরম করতে হবে। দুধের তাপমাত্রা ৪৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস হলে চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। পানি ও দুধের তাপমাত্রা ৪৫০ ডিগ্রি হলে দুধে মাত্রামতো আস্তে আস্তে মিশাতে হবে। ১৫ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যে ছানা হয়ে যাবে এবং জল আলাদা হয়ে যাবে। আবার তাপমাত্রা বাড়িয়ে (চুলা জ্বালিয়ে) ৫৫০ ডিগ্রি করতে হবে এবং চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। ২ ঘণ্টা পরে পনির আঠালো চুইংগামের মতো হবে। পাতলা সাদা সুতির কাপড় দিয়ে পনির ছেঁকে পুঁটলি বানিয়ে চাপ দিয়ে রাখতে হবে, ৪-৫ ঘণ্টা পরে সব পানি বের হয়ে যাবে। ট্রেতে করে ফ্রিজে রাখতে হবে পরের দিন। জীবাণুমুক্ত করার জন্য লবণ পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সুবিধাজনক আকার ও পরিমাণ তৈরি করতে ছাঁচ (প্লাস্টিকের) ব্যবহার করতে হবে। শক্ত করে ছাঁচে ভর্তি করতে হবে। শক্ত আকৃতি পাওয়ার পর ফুড গ্রেড পলিথিনে বায়ুরোধক প্যাক তৈরি করতে হবে।

স্বাভাবিক তাপমাত্রায় শীতকালে ২০ দিন গ্রীষ্মকালে ১০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। ফ্রিজে ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ২-৪ মাস এবং শক্ত পনির ৬-৯ মাস পযন্ত সংরক্ষণ করা যায়। পনি ড্রিপ ফ্রিজে রাখা যাবে না। দুধ একটি আদর্শ পানীয় কিন্তু অল্প সময়েই (৬-৭ ঘণ্টা) নষ্ট হয়ে যায়, সেখানে পনির অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। তাছাড়া জায়গা কম লাগে, পরিবহন করাও সহজ। পনির তৈরিতে অল্প মূলধন লাগে। খুব সহজেই একজন বেকার যুবক প্রশিক্ষণ নিয়ে এ কাজ করে সংসার আয় বাড়াতে পারেন। দেশের যে সব স্থানে পর্যাপ্ত পরিমাণে চিলিংপ্ল্যান্ট নেই বা দই মিষ্টির কারখানা নেই সেখানে পনির উৎপাদনের মাধ্যমে দুধকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানো সম্ভব। অনেক ভোক্তাই পনির কোনোদিন চোখে দেখেনি, স্বাদ কেমন? কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানে না, তাই পনিরের উপকারিতা ও ব্যবহার বিধি বিষয়ে অবগত করানো সরকারের দায়িত্ব। এ জাতীয় উদ্যোক্তা সৃষ্টির জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বিভিন্ন প্র্রকল্পের মাধ্যমে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ