1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

উন্নয়ন-অগ্রগতিতে পদ্মা সেতু

শাহদাব আকবর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২২ জুন, ২০২২

বহুল আলোচিত ও প্রতীক্ষিত বাঙালী জাতির স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ক্ষণ গণনা প্রায় শেষের পথে। আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশরত্ন শেখ হাসিনার আত্মবিশ্বাসের প্রতীক, বাঙালী জাতির গর্ব, পৃথিবীর খরস্রোতা নদীর অন্যতম পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত পদ্মা সেতু। দেশী-বিদেশী হাজারো ষড়যন্ত্র, বিদেশী শক্তিধর দেশ ও বিশ্বব্যাংকের নির্লজ্জ চাপ প্রয়োগের চেষ্টা, সেতু তৈরিকালীন সময়ে নানাভাবে প্রতিবন্ধকতাসহ সকল ষড়যন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর বাংলাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তি প্রধানমন্ত্রী, অবিসংবাদিত নেতা শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা। ৩০ লাখ শহীদ ও তিন লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে বাঙালী জাতি আরেকবার প্রমাণ করেছে অদম্য বাঙালী জাতিকে কেউ দাবায় রাখতে পারবে না। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে সরাসরি স্থাপিত হবে সেতুবন্ধ। ফলশ্রুতিতে বদলে যাবে সম্পূর্ণ দক্ষিণবঙ্গসহ সংশ্লিষ্ট এলাকা। সড়ক ও রেলপথে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হওয়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। ঢাকা শহরের ওপর গ্রাম থেকে আসা মানুষের চাপ হ্রাস, পায়রা ও মংলা বন্দরের গুরুত্ব বৃদ্ধি, জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ইতিবাচক প্রভাব, নদীর অপর প্রান্তে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অগ্রতির ও উন্নয়নের অভিযাত্রা এগিয়ে যাবে দুর্বার গতিতে। পদ্মা সেতু ছাড়াও রাজধানীতে মেট্রোরেল, চট্রগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, ঢাকার এলিভেটেড হাইওয়ে, ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দৃষ্টিনন্দন তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ-সবই একে একে চালু হওয়ার পথে।

পদ্মা সেতু নিয়ে প্রচারিত গত ১৪ জুন বিবিসি বাংলা অনুষ্ঠানটি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক পৃথিবীর কয়েকটি সেতু নির্মাণের খরচের সঙ্গে পদ্মা সেতু নির্মাণে তুলনামূলক খরচ নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন এবং প্রমাণ করতে চেষ্টা করেছেন অন্যান্য সেতুর তুলনায় পদ্মা সেতুর নির্মাণ খরচ ব্যয়বহুল। স্বভাবতই সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের মনে হয়েছে, খরচের বিষয়ে আলোচনা করতে হলে যে সকল বিষয় যেমন- নদীশাসন, নদীর গতি প্রবাহ, কতটা খর¯্রােতা, পাইলিং গভীরতাসহ যে বিষয়গুলো আলোচনা করা প্রয়োজন ছিল, পর্যালোচনাকারী ভদ্রলোকটির সেই বিষয়ে আদৌ কোন জ্ঞান ছিল বলে মনে হয়নি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সমাজ ও অর্থনীতিতে কি সুফল বয়ে আনবে সে বিষয়েও আলোচনা না করে নেতিবাচক আলোচনা করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য।

ঋঅঙ এর সর্বশেষ তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায় যে, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে ধান উৎপাদনে তৃতীয়। কৃষি উৎপাদনে এই বৃদ্ধি সারাবিশ্বের কাছেই বিস্ময়। সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, আম উৎপাদনে ৭ম, আলু উৎপাদনে ৭ম। ২০০৯ সালে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৩৮ লক্ষ ৩৮ হাজার মেঃ টন। বর্তমানে খাদ্যশস্য বেড়ে হয়েছে ৪ কোটি ৫৩ লক্ষ ৪৪ হাজার মেঃ টন। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ ১ম, যা পরিমাণে প্রায় ৫ লাখ ৪৩ হাজার টন। বাংলাদেশ পাট রফতানিতে বিশ্বে ১ম এবং উৎপাদনে ২য়। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ তৃতীয়। গত ১০ বছরে মাছের উৎপাদন ৫৩ শতাংশ বেড়েছে এবং রফতানি বেড়েছে ২০ শতাংশ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সারাদেশে মোট ২৩,৯৭৯ টি নতুন শিক্ষাভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়াও ৭,৬৪১ টি বেসরকারী শিক্ষাভবন সংস্কার করা হয়েছে। গত ১০ বছরে ৪,২০০ মাদ্রাসায় নতুন একাডেমি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৩ টি নৌপথ খনন কাজ শেষ করেছেন। ১২৭০ কি.মি. নৌপথ উদ্ধারসহ ৩০০০ একর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের অবৈধ্য স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর পুরনো গতিপথ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্বের যে ৩টি দেশ সবচেয়ে এগিয়ে আছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ২০১৫ সালে যখন এস.ডি.জি গৃহীত হয়, তখন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫৯.১ শতাংশ। সে সূচক উন্নীত হয়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৬৩.৫ শতাংশ। বিশ্বের ১৬৫ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৯তম (২০২১ পর্যন্ত)। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে ভারত ও পাকিস্তান থেকে অনেক এগিয়ে। বিএনপি-জামায়াত সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ের কিছু তুলনামূলক চিত্র নিচে তুলে ধরা হলো জনগণের বোঝার সুবিধার্থে :

পরিশেষে বলতে চাই, শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ সরকারই যদি সব উন্নয়ন করে থাকে, প্রতিটা উন্নয়নের সূচক যদি এই সরকারের আমলেই উন্নীত হয়ে থাকে, তাহলে তাতে দেশী-বিদেশী মোড়লদের এত গাত্রদাহ কেন? কেনই বা সরকারকে নামানোর জন্য এত ষড়যন্ত্র? দলমত নির্বিশেষে সকলকে বলতে চাই- আসুন, পেছনের দরজার রাজনীতি পরিত্যাগ করে সকলে মিলে আমরা আমাদের এই দেশটাকে সোনার বাংলায় রূপান্তরের প্রত্যয়ে সর্বশক্তি দিয়ে আত্মনিয়োগ করি।

লেখক : শাহদাব আকবর – রাজনৈতিক বিশ্লেষক,বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকে ভূষিত।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ