পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে টিকটক ভিডিও করে আলোচনায় আসা যুবক মো. বাইজীদ ওরফে বায়েজীদ তালহা পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি বর্তমানে ব্যবসাসূত্রে ঢাকায় থাকেন।
পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন মোহন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী বায়েজিদের বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার তেলীখালী গ্রামে। তার বাবা আলাউদ্দিন মৃধা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
এই বাইজিদ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের অনুসারী ছিলেন। বিপ্লব এখন যুবদল করেন।
বাইজীদ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন মোহনের নিকটাত্মীয় বলেও দাবি করছেন পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের একাধিক নেতা।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, বাইজিদ অতীতে ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী আশফাকুর রহমান বিপ্লবের সময়ে বিএনপি ও ছাত্রদলের মিছিল-মিটিংয়ে নিয়মিত অংশ নিতেন তিনি।
জেলা ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় মোহনের সঙ্গেও বাইজীদ রাজনীতি করেছেন।
এদিকে বায়েজিদ ছাত্রদল করলেও তার আত্মীয় নন বলে জানিয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন মোহন।
বাইজীদকে রাজধানীর শান্তিনগর থেকে রোববার (২৬ জুন) সন্ধ্যার দিকে আটক করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
সিআইডির সাইবার ইন্টিলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ বলেন, আটকের পর তাকে সিআইডি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সেখানে একাধিক ইউনিটের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে কথা বলছেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, বাইজীদের বাড়ি পটুয়াখালী হলেও তিনি ঢাকার শান্তিনগরে থাকেন। পদ্মা সেতুতে নাট খোলার বিষয়টি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র কি না- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বাইজীদ পদ্মা সেতুতে ওই টিকটক ভিডিও বানানোর পর নিজের টিকটক প্রোফাইলে পোস্ট করে। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে তিনি ভিডিওটি মুছে ফেলেন। একই সঙ্গে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল ডিএক্টিভেট করে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন।
পরে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে তাকে শান্তিনগরের বাসা থেকে আটক করে সিআইডি।
রোববার সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পর দিনের বিভিন্ন মানুষ পদ্মা সেতুতে ওঠেন। এসময় ভিডিওটি করেন বাইজীদ। ৩৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবক সেতুর রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে দুটি বল্টুর নাট খুলছেন। যিনি ভিডিও করছিলেন তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এই লুজ দেহি, লুজ নাট, আমি একটা ভিডিও করতেছি, দেহ।
নাট হাতে নিয়ে জবাবে বাইজীদ বলেন, ‘এই হলো আমাদের পদ্মা সেতু। দেখো আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু। এই নাট খুইলা এহন আমার হাতে। ’
এ সময় পাশে থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘ভাইরাল কইরা ফালায়েন না।’
পদ্মা সেতু নিয়ে বিতর্ক ছড়াতেই এভাবে নাট খোলা হইছে। পদ্মা সেতুতে কর্মরত প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, খালি হাতে সেতুর নাট খোলা সম্ভব নয়। টুলবক্স দিয়ে নাট খোলা হয়েছে।