1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সেপ্টেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চূড়ান্ত হচ্ছে

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৪ জুলাই, ২০১৮

আলী আসিফ শাওন: আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন একটু আগেভাগেই সম্পন্ন করতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সাধারণত নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী চূড়ান্তের প্রক্রিয়া শুরু হলেও এবার আগেভাগেই করে রাখতে চাচ্ছে দলটি। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চায়। প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতা বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত যোগ্যতার কমবেশির কারণে আগামী নির্বাচনে ৮০ থেকে ১শ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানা গেছে।
দলের উচ্চ পর্যায়ের ওই নেতারা জানান, আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, এমনটি ধরে নিয়েই তিন ধাপে দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ার কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায়
৩শ আসনের মধ্যে ২শটি নিজ দলের জন্য রাখা হবে। বাকি ১০০ আসনে দরকষাকষি করবে। নির্বাচনী জোটের শরিক জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা তো আছেই, পাশাপাশি অন্য দলগুলোকেও পক্ষে আনার চেষ্টা করা হবে। তবে শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন ভাগাভাগির বিষয়টি নির্ভর করবে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে জোট শরিকরা কম আসন পাবে, আর অংশ না নিলে শরিকরা বেশি আসন পাবে বলেও জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।
দলের নেতারা জানান, শুরুতে ১৫১ আসনের দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে আওয়ামী লীগ, তাদের ১০০ জনকে ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলতি জুলাই ও আগামী আগস্টের মধ্যে বাকি ১০০ প্রার্থীকে মনোনয়নের বিষয়টি জানানো হবে। সেপ্টেম্বরে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বাকি ১০০ আসনের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের কাছে আসন চেয়ে তালিকা দিয়েছে জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।
মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তিন যোগ্যতাকে মাপকাঠি হিসেবে ধরছে আওয়ামী লীগ। প্রথমত এলাকার জনগণের কাছে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা/অবস্থান কেমন? দ্বিতীয়ত দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রার্থীর সম্পর্ক এবং তৃতীয়ত নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ এলাকায় উন্নয়ন করার সক্ষমতা রয়েছে কিনা? বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব মানুষ দিয়ে সারাদেশে একাধিক জরিপ চালানো হচ্ছে। জরিপের ফল দেখেই প্রার্থী বাছাই করা হবে। দলটির নেতারা জানান, জরিপের প্রাপ্ত ফলে দেখা গেছে ৩০০ আসনের মধ্যে ৮০ থেকে ১০০ আসনে বর্তমান এমপিদের অবস্থা সুবিধাজনক নয়। ওইসব আসনের বর্তমান এমপিদের বদল করে নতুন প্রার্থী দেওয়া হবে।
নেতারা আরও জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এখন ধারাবাহিকভাবে বিশেষ বর্ধিতসভা করছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে দুটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে দলের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দায়িত্বশীল নেতাদের উদ্দেশ্যে আগামী নির্বাচনের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রেখেছেন। বিশেষ বর্ধিতসভার পর তৃণমূলের নেতাদের কাছে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য পদপ্রত্যাশীদের নামের তালিকা চাইবে আওয়ামী লীগ। এরপর আসনভিত্তিক মতবিনিময়ের পরিকল্পনাও রয়েছে দলটির শীর্ষ নেতাদের। তবে বিষয়টি সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এখনো দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়নি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড ও সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ গতকাল আমাদের সময়কে বলেন, ইতোমধ্যে ১০০ আসনের প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগস্টের মধ্যে দলের বাকি ১০০ প্রার্থীকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেপ্টেম্বরে জোটের সঙ্গে আলোচনা করে বাকি ১০০ প্রার্থী ঠিক করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান আমাদের সময়ের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর থেকেই প্রার্থী চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হতে পারে। ইতোমধ্যে সারাদেশে পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে আমাদের দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ জোরেশোরেই চলছে। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, জরিপের ফলের ভিত্তিতে ৮০ থেকে ১০০ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে এবার।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এ বিষয়ে আমাদের সময়কে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী চূড়ান্তের আগে দলের তৃণমূলের নেতাদের কাছ থেকে লিখিত মতামত নেওয়া হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী আসনভিত্তিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বসার ইচ্ছাও রয়েছে আমাদের। তবে এটা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় কোন ফরমেটে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি।
একই বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে যারা নৌকা প্রতীক পাবেন, তাদের বিষয়ে ইতোমধ্যে একটা ‘মাইন্ডসেট’ করে নিয়েছেন নেত্রী। বিভিন্ন জরিপ এবং এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এ কাজটি তিনি নিজের মতো করে অনেকখানি গুছিয়ে এনেছেন।
আগাম মনোনয়ন প্রক্রিয়ার কারণ জানতে চাইলে দলটির নেতারা বলেন, মনোনয়ন চূড়ান্তে দেরি হলে পদপ্রত্যাশীরা নিজ নিজ এলাকায় আগে থেকেই টাকা-পয়সা খরচ করে ফেলেন, পরে আর তারা বসতে চান না। তাদের বসাতে বেগ পেতে হয়। আগাম মনোনয়নের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হলে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বুঝতে পারেন দলের হাইকমান্ডের সিগন্যাল কার দিকে। তখন তারা নিজেরা প্রার্থী হওয়ার দৌড় থেকে বিরত থেকে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারেন। আর এবার দলের সিদ্ধান্ত আমান্যকারীদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ইতোমধ্যে এই বার্তাটিও তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে তাই আগাম মনোনয়ন চূড়ান্তেই লাভ দেখছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ