1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে জামায়াত ছাড়ার পরামর্শ স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্যের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ৬ জুলাই, ২০২০

সালমান তারেক শাকিল: ২০১৮ সালের আগস্টে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটগত সম্পর্ক ছেড়ে আসার পরামর্শ দেয় বিএনপির তৃণমূল। প্রায় দুই বছর পর এবার দলের স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্যের মতামতেও উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দলটির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের বিষয়টি। বিএনপির স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য মনে করছেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে ভবিষ্যত রাজনীতিতে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর গুরুত্ব অনেকাংশেই কম। সে কারণে জামায়াতের সঙ্গে বিদ্যমান জোটগত সম্পর্ককে নতুনভাবে দেখা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্য মৌখিক ও লিখিতভাবে বিএনপির ভবিষ্যৎ রূপরেখার সঙ্গে এসব অভিমত জানিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে। স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে এই বিষয়টি জানা গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্তত পাঁচ জন সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরুর আগে থেকে বিএনপির ভবিষ্যত রাজনীতি কী হবে—এ নিয়ে সরাসরি পরামর্শ চান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এরপর দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি এজেন্ডা হিসেবে গৃহীত হয়। পর্যায়ক্রমে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিনা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু নিজেদের মতামত ও কৌশল উপস্থাপন করেছেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এ প্রক্রিয়াটি সাময়িক বন্ধ থাকায় আবার শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই থেকে সীমিত পরিসরে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর আবারও এই এজেন্ডা আলোচ্যসূচিতে যুক্ত হলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মতামত দেবেন।
দলটির স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য জানান, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের আগে তারেক রহমান দলের ভবিষ্যত রাজনীতি ও কৌশল নির্ধারণে করণীয় সম্পর্কে মতামত চান স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে। এরপর এজেন্ডা হিসেবে গ্রহণের পর সদস্যরা মতামত দেন। এসব মতামতে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোটগত সম্পর্কের ওপর বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই আলোচনায় কোনও কোনও সদস্য বলেছেন, দলটির সঙ্গে যে সম্পর্ক এখন বিদ্যমান আছে, এই সম্পর্কের ভিত্তিতে আগামী দিনে ক্ষমতাকেন্দ্রিক অবস্থান তৈরি করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ‘আমি মনেকরি, বর্তমান বৈশ্বিক ও ভূরাজনৈতিক দিক থেকে ধর্মভিত্তিক শক্তিগুলোর অবস্থান নব্বই দশক ও তার পরবর্তী সময়ের মতো শক্তিশালী অবস্থানে নেই। এছাড়া বাংলাদেশে ভোটভিত্তিক রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। বিশেষত রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার আপাতত কোনও বাস্তবতা নেই। আর এই প্রেক্ষিত করোনাভাইরাসের কারণে আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতে এখন পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় কয়েকটি পরাশক্তির ওপর নির্ভর করে। আর এই সমীকরণে ধর্মভিত্তিক বা জামায়াতে ইসলামীর মতো বিতর্কিত সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে শক্ত অবস্থান গড়ে তোলা প্রায় অসম্ভব।’
জামায়াতের বিষয়ে জোটগত সম্পর্কের বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়াটি আবারও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শুরু হবে বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছিলাম। এখন তো সেভাবে নেই। করোনার সমস্যা সমাধানের আগে হবে না। তবে এটা করতে হবে। কারণ এখানে দুটো ব্যাপার আছে, আমরা মিশিয়ে ফেলেছি। নির্বাচনি জোট এক জিনিস, আন্দোলনের জোট আরেক জিনিস। আমরা জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনি জোট করেছিলাম, সারা দুনিয়াতেই এটা চলছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জোট হতেই পারে, ভারতেও হয়, আমাদের দেশেও হয়।’
স্থায়ী কমিটির অন্যতম একজন সদস্য এ প্রতিবেদককে জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় একক প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি ওই সময় শীর্ষ নেতৃত্বকে এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, জামায়াতের মতো র‌্যাডিক্যাল ইসলামী সংগঠনকে সঙ্গে রেখে বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অসম্ভব। ওই সময় আওয়ামী লীগও একক প্রার্থী দিয়েছিল, এ বিষয়টিকেও যুক্তি আকারে তুলে ধরতে সম্মত হন মওদুদ আহমদ। যদিও পরে জোটগতভাবেই প্রার্থিতা করে বিএনপি। ওই সময় জামায়াতকে বাদ দেওয়ার একটি সুযোগ ছিল বলে মনে করেন স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য নিজের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধের কথা বলেছি। ওরা তো আল্লার শাসন চায়। দুটো দলের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ। তারাও বলে দুদলের মধ্যে আদর্শিক মিল নেই। এটাকেই জনগণের কাছে পরিষ্কার করা দরকার। এ প্রক্রিয়া বর্তমান সংকট থাকা পর্যন্ত করা যাবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য বলেন, বিএনপির রাজনীতি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ হিসেবে দেখানো হলেও সাধারণ মানুষের কাছে ‘বিএনপি-জামায়াত’। দল, সংগঠন ও আগামী দিনের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এই পরিচয় থেকে বের হতে হবে ।
‘১৯৯৯ সালে যখন ৪ দলীয় জোট গঠন হয়, তখন সেটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই হয়েছিল। কিন্তু এই জোট থেকে গেলো, এখন এটি ২০ দলীয় জোট। আমাদের এমন অবস্থা দাঁড়ালো ..অনেকটা.. বেশি বললে টেলিফোনে ট্যাপ হয়ে যাবে। এটা থেকে বের হওয়ার সুযোগ ছিল’—বলে উল্লেখ করেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী কমিটির এক সদস্য। এরপর ২০১৮ সালে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেও অনেকখানি দুরত্ব রক্ষা করা সম্ভব ছিল বলে জানান এই নেতা। তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতের বাইরে বাকি গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একত্র করে বিএনপির রাজনীতি প্লে করার সুযোগ ছিল।’
স্থায়ী কমিটির সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে দেওয়া প্রস্তাবে ড. মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, সেলিনা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জামায়াতের বিরুদ্ধে সংশয়ী অবস্থান ব্যক্ত করেন। তারা শীর্ষ নেতৃত্বের সামনে বিতর্কিত দলটির সঙ্গে সম্পর্ক, মন্ত্রিত্ব ভাগাভাগি ও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক থাকার বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘আমাদের দলের স্থায়ী কমিটিতে রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়েও আলোচনা শুরু হয়েছিল। অনেকে মতামত দিয়েছেন। আরও কয়েকজন বাকি আছেন। এখনই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’
তবে স্থায়ী কমিটির সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও নজরুল ইসলাম খান জামায়াতের সঙ্গে জোটগত সম্পর্ক রক্ষার পক্ষে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করার সুযোগ থাকলেও কোনও কোনও নেতার আগ্রহে ধানের শীষে প্রার্থিতা করে জামায়াতের প্রার্থীরা। এ বিষয়টিও নির্বাচনে পরাশক্তিদের কাছে বিএনপিকে নতজানু করেছে বলে দাবি করেন একাধিক সদস্য।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির একজন প্রবীণ সদস্য বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে জোট করার বিষয়ে আমাদেরও ভুল আছে কিছু। কারও কারও দুর্বলতা আছে রাখার ব্যাপারে, তবে নাম বলতে চাই না।’
একাধিকবার আলাপে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেছেন, ‘ভোটের এসপেক্ট থেকেই জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিলো বিএনপি। ভোটের হিসাবে জামায়াতের ভোটের সংখ্যাতাত্ত্বিক তাৎপর্য রয়েছে।’ তবে, তিনি এও মনে করেন, বিষয়টিকে নতুনভাবে পুনর্পাঠ করার সুযোগ আছে।
জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের সূচনার বিষয়টি নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির প্রথম সখ্যতা তৈরি হয় ১৯৯১ সালে সরকার গঠনের সময়। ১৭টি আসন পেয়ে বিএনপিকে সমর্থন করার পরই দলের হাইকমান্ড জামায়াতকে আস্থায় নিয়েছিল।’
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, যাদের আগ্রহে জামায়াতকে জোটসঙ্গী করে বিএনপি, তাদের প্রায় সবাই মারা গেছেন। এখন আগ্রহীর সংখ্যা কম। তবে কোনও-কোনও পক্ষ রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে দুর্বল করে রাখতে জামায়াতকে সেঁধিয়ে রাখতে চাইছে। সূত্রের দাবি, ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়ার আগ্রহ থাকলেও বর্তমানে তার অবস্থানে অনেক পরিবর্তন এসেছে। একইসঙ্গে মায়ের পথ ধরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও জোটসঙ্গীদের নিয়ে আগ্রহ দেখাননি।
তবে জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারা মনে করছেন, ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়, সে জোট কোনও সাফল্য আনতে পারেনি। ওই সময় ফ্রন্টের উদ্যোগ নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডকে দলীয় সন্দেহের বিষয়টিও জানায় জামায়াত। উপরন্তু ওই বছর নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার পতনের লক্ষ্যে বিএনপিকে রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তাব দিয়েছিল জামায়াত। রাজপথে নেতাকর্মীদের শক্ত অবস্থান করে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তাব দেওয়া হলেও ওই প্রস্তাবে সায় দেয়নি বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বরং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারেই নির্বাচনের সম্মতি দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তবে ফ্রন্টের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আড়ালে যোগাযোগ রেখেছেন জামায়াতের একাধিক নেতাস।
জামায়াতের একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি জামায়াত সম্পর্কে পুনর্মূল্যায়ন করলেও জামায়াতের অবস্থান আগের মতোই আছে। পরিস্থিতি তৈরি না হলে এ বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না দলটি। তবে এক্ষেত্রে ‘সমঝোতার’ সুযোগ রয়েছে বলে জানান একজন শীর্ষ নেতা। অফ দ্য রেকর্ডে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ একজন বলেন, ‘জামায়াত ও বিএনপির সম্পর্ক নাই বলে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ বলবে না। ধরে নিতে হবে সম্পর্ক আছে। ফলে, ২০ দলের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে গেছে, এটাও এখন বলার সময় আসেনি।’
জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের জোটগত যে সম্পর্ক আছে, তা আগের মতোই বহাল আছে। জামায়াত এ বিষয়ে আগের অবস্থানেই আছে। আমরা মনে করি, বিএনপি যে কারণে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল, তারা তাতে সফল হতে পারেনি। রাজনীতিতে মাঠের শক্তিকে উপেক্ষা করে সাফল্য আসে না। বাস্তবতা হচ্ছে, জামায়াত বাংলাদেশের রাজনৈতিক বড় শক্তি। যেকোনও পরিবর্তনেই জামায়াত বড় ফ্যাক্টর। গত ২০ থেকে ৩০ বছরের রাজনৈতিক বাস্তবতা তাই বলছে। জামায়াত কারও প্রতি মুখাপেক্ষি শক্তি নয়, দলের নিজস্ব আদর্শ আছে, সাংগঠনিক পরিক্রমা আছে। জামায়াত বাস্তবতার নিরিখেই সিদ্ধান্ত নেবে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের পর থেকে দলের নানা শুভাকাঙ্ক্ষী মহল ও গোষ্ঠী থেকেও জামায়াত ছাড়তে বিএনপিকে পরামর্শ দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন এই পরামর্শ দেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে-পরে ড. কামাল হোসেনও জামায়াত নিয়ে আপত্তির কথা জানান বিএনপিকে। এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগের পর আবারও বিএনপিতে জামায়াত ছাড়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে। ওই সময় দলটির কয়েকজন নেতাও একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান জামায়াতকে।
শনিবার (৪ জুলাই) বিকালে বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ভোটের হিসাবের বিষয়টি এখন রাজনীতিতে নেই। ভোটের অধিকার যেখানে নেই, সেখানে ভোটের সংখ্যার হিসাব গুরুত্বহীন। তবে, প্রেক্ষাপট তৈরি না হলে জামায়াতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে না বিএনপি। উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলে এ বিষয়টির সুরাহা এবার দলের বর্তমান নেতৃত্ব করবেন, এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে এ সূত্রটি।
জানতে চাইলে বিএনপি-জামায়াত জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমি তো জোটের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। কাজেই এ বিষয়ে আমি কোনও আলোচনা করতে পারছি না। জোটবদ্ধ সব দলের যেখানে আমি প্রতিনিধিত্ব করছি, সেখানে এ ধরনের চিন্তা যিনি বা যারা করছেন, সেটা নিজস্ব ব্যাপার। জোটে যে পর্যন্ত সিদ্ধান্ত না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কিছু বলতে পারছি না। আমরা মনেকরি, জোট যেভাবে আছে, সবাই একসঙ্গেই কাজ করছে।’ নজরুল ইসলাম খান জানান, রবিবার ২০ দলীয় জোটের ভার্চুয়াল বৈঠক আছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ