1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আমেরিকার মূল্যস্ফীতি আঘাত হেনেছে বিশ্ব অর্থনীতিতে

ই-বার্তা ডেস্ক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২

ভোক্তা চাহিদা অর্থনীতির প্রাণ ভোমরা। বিশ্ব অর্থনীতির সংকটকালে পরিত্রাণের পথও সেখানেই। কয়েক দশক ধরে মার্কিন ভোক্তারা এভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিত্রাতার ভূমিকা পালন করেছেন। কিন্তু, আমেরিকার (যুক্তরাষ্ট্র) সরকারের সাম্প্রতিকতম মুক্তকচ্ছ খরচ আশীর্বাদ না হয়ে, বিশ্ব অর্থনীতিতে হেনেছে আঘাত।

মহামারিকালে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের বিপুল প্রণোদনা ও অর্থ সহায়তা দিয়েছে মার্কিন সরকার। উন্নত অন্যান্য দেশও দিয়েছে। ফলে এ সময় বিশ্বব্যাপী টেলিভিশন, ল্যাপটপসহ ঘরে থেকে শরীরচর্যার উপকরণসহ হাজারো পণ্যের বহুল বিক্রিবাট্টা হয়েছে। অন্য ধনী দেশগুলোর চেয়ে মার্কিন ভোক্তারাই এসবের পেছনে বেশি অর্থ ব্যয়ও করেছেন।

ভোক্তা চাহিদার এমন পুনরুদ্ধার দেখে খুচরা পণ্যের বৃহৎ বিক্রেতা- টার্গেট কর্পোরেশন এবং ওয়ালমার্ট ইনকর্পোরেশনের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যসম্ভারে আরও বিপুল মজুদ যুক্ত করে। এসব পণ্য বিশ্ববাজার থেকে আমেরিকামুখী হওয়ায় এবং মহামারির কারণে সরবরাহ চক্রের ব্যাঘাতের ফলে– আদতে মার্কিন চাহিদা অন্য দেশগুলিতে পণ্যগুলির দাম বহুলাংশে বৃদ্ধি করে।

অর্থাৎ, নিজ অর্থনীতির মহামারির অভিঘাত থেকে পুনরুদ্ধার শুরুর সময় থেকে মূল্যস্ফীতিকে রপ্তানি করছে আমেরিকা।

এতে বিশ্ব অর্থনীতির এক আমূল পরিবর্তনের আভাসও মেলে। যেমন প্রাক-মহামারিকালে পণ্যের সরবরাহ ছিল বিপুল, সে তুলনায় ক্রেতা খুঁজে পাওয়াই ছিল চ্যালেঞ্জের। জার্মানি ও চীনের মতো যেসব দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে বিপুল উদ্বৃত্ত ছিল–তাদের প্রতি অন্যদের অভিযোগ ছিল যে, দেশদুটি পৃথিবীর অন্য দেশের বাজার থেকে ফায়দা লুটছে এবং সে তুলনায় নিজেরা যথেষ্ট আমদানি করছে না।

সে তুলনায়, আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতিকে অন্যান্য অর্থনীতির জন্য বরাবর আশীর্বাদ হিসেবে দেখা হয়েছে। পরিতাপের বিষয় হলো- সব পণ্যের সংকটের এই কালে সে কাহিনি উল্টে গেছে।

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক জেসন ফারম্যান বলেন, ‘সবকিছু আজ পাল্টে গেছে। আগে চাহিদার কমতিটা ছিল স্বাভাবিক। এখন সরবরাহই নগণ্য। আর কম যোগানের এই বিশ্বে যে দেশটি অর্থাৎ আমেরিকা চাহিদা সৃষ্টি করতো– সে এখন নিজের সমস্যা মূল্যস্ফীতিকে অন্যত্র রপ্তানি করছে।’
আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি কমাতে ও অর্থনীতিতে চাহিদার জোয়ার নিয়ন্ত্রণে সুদহার বৃদ্ধি করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক- ফেডারেল রিজার্ভ। আর তাতে করে, মার্কিন ভোক্তাদের চাহিদা কমে আসারই ইঙ্গিত মিলছে।

ফেডের সুদহার বৃদ্ধিতে বিনিময় দর বেড়েছে মার্কিন ডলারের। বিশ্ব বাণিজ্যের প্রধানতম মুদ্রা হওয়ায় শক্তিশালী মার্কিন ডলারই এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে প্রধান উদ্বেগের। কারণ এপথেও এখন আমেরিকা মূল্যস্ফীতিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।

ইউরো জোন ও জাপানের তুলনায় মার্কিন নীতিনির্ধারণী সুদহার বৃদ্ধি দ্রুতলয়ে হওয়ায় ডলারের দর ক্রমে ঊর্ধ্বমুখী। গত সপ্তাহে মুদ্রাটি দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো ইউরোর সাথে সমমূল্যতাকে ছাড়িয়ে যায়। ফলস্বরূপ; আমেরিকা থেকে আমদানি করা পণ্যের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের মতো যেসব পণ্যের দাম ডলারে পরিশোধ করতে হয়–সেসব আমদানির খরচ অন্য দেশগুলির জন্য আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

ফারম্যান বলেন, ‘আমেরিকার চাহিদাও কমবে, কিন্তু যে ব্যবস্থার মাধ্যমে এটিকে কমানো হচ্ছে–তা আরও শক্তিশালী ডলার সৃষ্টির জন্য দায়ী হবে। এর ফলে অন্য দেশে আমেরিকার রপ্তানি করা মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতির সমাধান হবে না’।

অর্থাৎ, আমেরিকার পদক্ষেপ যে বিশ্বের ঘাড়ে উভয় সংকটের বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন এ বিশেষজ্ঞ।

তা ছাড়া, ভোক্তাচাহিদা বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির একমাত্র কারণ নয়– এমনকি তা যুক্তরাষ্ট্রেও প্রধান কারণ নয়, যেখানে করোনার প্রণোদনা সবচেয়ে বেশি দেওয়া হয়েছে। মূখ্য ভূমিকা আরও রাখছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। এতে করে, ইউরোপসহ বিশ্বের অন্যান্য স্থানে খাদ্য ও জ্বালানির আকাশচুম্বী দর মূল্যস্ফীতির নয়া-চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। যুদ্ধের কারণে এসব পণ্যের বিশ্ববাজারে সরবরাহ বিচ্ছিন্নতাও সেজন্য দায়ী।

সূত্র: ব্লুমবার্গ অবলম্বনে


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ