1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

পদ্মা সেতুর আইনগত ও মানবাধিকার প্রেক্ষিত

ড. শাহজাহান মণ্ডল : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ২৯ জুলাই, ২০২২

মানুষের জন্য জীবনের পর সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো মর্যাদা ও সম্মান। তেমনি বাংলাদেশের জন্য রাষ্ট্রীয় জীবনের পর সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও সম্মান। বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মার বুকে ঢাকার অদূরে নির্মিত ৬.১৫ কিলোমিটার (স্থল অংশসহ ৯ কি.মি.) দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থের সড়ক ও রেলপথযুক্ত পদ্মা সেতু ১৮ কোটি মানুষের জন্য নাগরিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এ পাঁচ পরিমণ্ডলে মর্যাদা ও সম্মান প্রতিষ্ঠার এক মহাযজ্ঞ। বর্তমান বিশ্বে মানুষের উন্নয়ন এই পাঁচ সূত্র ধরে চলমান। এগুলো বস্তুত মানবাধিকারের পাঁচটি ধরন। সব ধরন টিকতে পারে যদি একটিমাত্র মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, যার নাম জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণ বা আত্মনির্ধারণ অধিকার (peopleÕs right to self-determination)।

বাঙালী জনগোষ্ঠী যেমন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভালবাসা ও অপরিমেয় নেতৃত্বগুণে প্রথমবারের মতো আত্মনির্ধারণ অধিকার চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশকে স্বাধীন করে মুক্তির পথে ধাবিত হয়, তেমনি একান্ন বছর পর এ জনগোষ্ঠী ২০২২ সালের ২৫ জুন বঙ্গবন্ধুতনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালবাসা ও অপরিমেয় নেতৃত্বগুণে ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধনের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো আত্মনির্ধারণ অধিকার চর্চা করে মুক্তির পথে অগ্রসর হবার সুযোগ পাচ্ছে। জাতিসংঘ প্রণীত একটি ঘোষণা ও দুটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে এ অধিকারের উল্লেখ আছে, যথা (র) কলোনিভুক্ত দেশ ও জনগোষ্ঠীসমূহকে স্বাধীনতা প্রদান ঘোষণা ১৯৬০ (Declaration on the Granting of Independence to Colonial Countries and Peoples ev DGICCP), (ii) নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি ১৯৬৬ (International Covenant on Civil and Political Rights ev ICCPR) এবং (ররর) অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি ১৯৬৬ (International Covenant on Economic, Social and Cultural Rights ev ICESCR)। চুক্তি দুটো বাংলাদেশ রেটিফাই করেছে যথাক্রমে ২০০০ সালে ও ১৯৯৮ সালে বিধায় বাস্তবায়ন করতে বাধ্য, না করলে আন্তর্জাতিক ফোরামে জবাবদিহি করতে হয়। প্রথমটির ২ অনুচ্ছেদ এবং পরের দুটির ১(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: সকল জনগোষ্ঠীর আত্মনির্ধারণের অধিকার রয়েছে। এ অধিকারের গুণে তারা তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের পথে ধাবিত হয়। দূরদর্শী পিতা শেখ মুজিবের যোগ্য উত্তরসূরি জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সাহসী সিদ্ধান্তে দেশ-বিদেশের শত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু আজ বাস্তব ও দৃশ্যমান হয়ে বাঙালীর আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করছে এবং ‘আত্মনির্ধারণ’ নামক মানবাধিকার বাস্তবায়ন করছে। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যেই ‘বাংলাদেশ’ নামক রাষ্ট্র বিশ্ব দরবারে রাজনৈতিক মর্যাদা উত্তম করতে পেরেছে এবং তার জনগণ অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবার সুযোগ পাচ্ছে। উপরন্তু, পদ্মা সেতু জনগণের বৈধ ভোটাধিকারের মাধ্যমে ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত ও আইনানুসারে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামী লীগ সরকার তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সৃষ্টি করা ঘৃণা-বিদ্বেষ ও বৈরিতার উচিত জবাব দিতে পেরেছে। সর্বোপরি জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও জাতীয়তা-ভাষা-সংস্কৃতি নির্বিশেষে সারা বাংলাদেশের সকল মানুষের মনে আনন্দ এনে দিয়েছে। এর থেকে পবিত্রতম কাজ আর কী হতে পারে! পদ্মা সেতু বিষয়ে তিনটি পয়েন্টে আলোচনা হতে পারে। প্রথম দুটো মানবাধিকার বিষয়ক, পরেরটি আইন বিষয়ক।

নাগরিক রাজনৈতিক:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানের ৩য় ভাগে জনগণের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক ও রাজনৈতিক ধরনের ১৮টি অধিকার তথা মৌলিক অধিকার সন্নিবেশিত হয়, যেগুলো মানুষেরা দেশের যেকোন স্থানেই চর্চা ও উপভোগ করতে পারে, কিন্তু লঙ্ঘিত হলে এর প্রতিকার কেবলমাত্র সুপ্রীমকোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ) দিতে পারে যা ঢাকায় অবস্থিত। যেমন আইনের দৃষ্টিতে সমতার অধিকার, বৈষম্যহীনতা ও সরকারী চাকরিতে সুযোগ-সমতার অধিকার, রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক সভা-সমাবেশ-সংগঠন ও মতপ্রকাশ করার অধিকার, ধর্মপালনের অধিকার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এগুলো মূলত মানবাধিকার। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ (প্রায় ৬ কোটি) জনগণ সুপ্রীমকোর্টের এই সেবা পাওয়ার জন্য দ্রুত ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে। উপরন্তু ২১ জেলার মানুষ আপন আপন জেলার আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করার জন্য দ্রুত ঢাকায় এসে সুপ্রীমকোর্টে পৌঁছাতে পারছে। এটি জাতীয় বিচার আদালতের নিকট থেকে প্রতিকার পাবার অধিকার বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করার বা বিচার সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর নামান্তর।

অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক:

পদ্মা সেতুর মাধ্যমে জনগণের জন্য অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রী ঢাকা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ২১ জেলায় পৌঁছানো অতি সহজ হচ্ছে। অপরদিকে জেলাগুলো থেকে ঢাকার ২ কোটি মানুষের জন্য শাকসব্জি বা চালডাল সহজে চলে আসছে। এতে আগের মতো ৫-১০ ঘণ্টা নয়, মাত্র ১-৫ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন হচ্ছে যা বহু মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। রোগগ্রস্ত বা দুর্ঘটনাপীড়িত বাবা-মা-ভাই-বোনকে নিয়ে যে ব্যক্তি লঞ্চে বা গাড়িতে বেলার পর বেলা অপেক্ষা করেছে সে ভাল বুঝতে পারছে পদ্মা সেতু কোন আশীর্বাদের নাম। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে পটুয়াখালী-বাগেরহাট-খুলনা প্রভৃতি যে জেলাগুলো সমুদ্রের তাণ্ডবে দিশেহারা হয়, তাদের জন্য উদ্ধারকারী জনবল, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সামগ্রী রাজধানী থেকে অত্যল্প সময়ে হাজির করা প্রশাসনের জন্য সহজ হবে এবং রেহাই পাবে মানুষ একথা অনস্বীকার্য। অতি আনন্দের ও গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, পদ্মার দু’পাশের মানুষের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ত্বরান্বিত হওয়া শুরু করেছে। পদ্মা সেতু বিষয়ে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের সেপ্টেম্বর ২০২১ মূল্যায়ন হলো, বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে ১.২৩%, উল্লিখিত ২১ জেলার জিডিপি বৃদ্ধি পাবে ২.৩%। যে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের কিছু পথভ্রান্ত লোকের দ্বারা ভুল বুঝে সেতুর জন্য ঋণপ্রদান বন্ধ করেছিল, তার স্বাধীন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষাও স্বীকার করেছে যে, দেশের জিডিপি ১% এবং উল্লিখিত জেলাগুলোর জিডিপি ২% বাড়বে। বিশ্বব্যাংকের দেখাদেখি যে জাপানী সংস্থা জাইকা অর্থায়ন বন্ধ করেছিল, তার সমীক্ষামতে এ হার হলো যথাক্রমে ১.২% ও ৩.৫%। দেখা যাচ্ছে, কেউ বলেনি যে, পদ্মা সেতু কোন ক্ষতিকর প্রজেক্ট বরং স্বীকার করেছে যে এটি বাংলাদেশের জন্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিদেশের জন্যও লাভজনক।

অদূর ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে দেশব্যাপী, খুলনার মঙ্গলাপোর্ট, পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের কর্মক্ষমতাও হবে বেগবান, যাতে বিনিয়োগের রিটার্ন রেট হবে ১৯%, যদিও আদর্শ রেট হলো ১২%। অচিরেই পদ্মার দু’পাশের জেলাগুলোতে শিল্পকারখানা ও পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটবে, বিদেশী পর্যটক তথা ডলার-রুবোলসহ বৈদেশিক মুদ্রার বেশি আগমন হবে, রফতানি বাণিজ্যে আসবে আশাতীত সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, বাস্তবায়িত এই মানবাধিকার। প্রত্যেকেরই সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে এবং জাতীয় উদ্যোগ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও দেশীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তার মর্যাদার জন্য অপরিহার্য অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অধিকার প্রাপ্তি/উপভোগের অধিকার রয়েছে। এভাবে পদ্মা সেতুর মহিমায় আমাদের সংবিধানের ২য় ভাগে স্বীকৃত ও বর্ণিত অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মানবাধিকারগুলো বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রধান জনপ্রতিনিধি শেখ হাসিনার উদ্যোগ সফলতার দিকে আরও এগিয়ে যেতে শুরু করেছে।

আইনগত:

পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক আইনী বিষয় গভীর চিন্তার দাবিদার। সবাই জানে, জনগণের ঈপ্সিত প্রাণের পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য বিশ্বব্যাংক ১.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিতে চেয়েছিল কিন্তু কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগে ঋণ দেয়নি। কানাডার এসএনসি-লাভালিন কোম্পানি সেতু নির্মাণের কাজ পাবার আশায় একজন বাংলাদেশী কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়েছিল মর্মে অর্থাৎ দুর্নীতি হয়েছিল মর্মে অজুহাত দেখিয়ে বিশ্বব্যাংক ঋণ প্রদানের প্রতিশ্রুতি বাতিল করে। বিশ্বব্যাংকের চাপে এডিবি ও জাইকাও অর্থ সহায়তা প্রদান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এদেশের কিছু ব্যক্তি আন্তর্জাতিকমানের ক্ষমতা খাটিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি হয়েছে মর্মে প্রচার করে এবং বিশ্বব্যাংককে প্রভাবিত করে। ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে তাঁর ভাষণে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বলেন যে, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মাদ ইউনুস বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহারে ভূমিকা রাখেন। কানাডার আদালতে এসএনসি-লাভালিন অফিসারদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার বাদীর ভিত্তি ছিল দুটি, টেলিফোনে আড়িপাতা কথা এবং রমেশ সাহা নামক কোম্পানির এক অফিসারের ডায়েরি যাতে লেখা ছিল যে, কয়েকজন বাংলাদেশী মিলে ১০-১২% কমিশন পেতে যাচ্ছে। লেখা ছিল ৪% যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, ২% সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, ২% প্রধানমন্ত্রীর ভাগ্নে/ভাতিজা নিক্সন, ১% সেতু বিভাগ সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া এবং ১% প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান। বাকি ২% একজনের জন্য যার নামোল্লেখ ছিল না। আদালত ২০১৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আড়িপাতা কথা ও ডায়েরি সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যান করেন। বিচারপতি ইয়ান নরধেইমার আড়িপাতার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যকে ধারণা, গল্প ও রটনার বেশি মনে করেননি।

আদালত মামলাটি কৌশলগত কারণে খারিজ করেন এবং অফিসারদের বেকসুর খালাস দেন। আরও উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাংকের চাপে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমেও তদন্ত করে কিন্তু ৫৩ দিনের তদন্তে দুর্নীতির কিছুই পাওয়া যায়নি। ফলত ঢাকা জেলা জজকোর্ট দুর্নীতি ষড়যন্ত্র মামলায় ৭ অভিযুক্ত সরকারী কর্মকর্তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। কল্পিত দুর্নীতির অজুহাতে যখন বিশ্বব্যাংক ঋণপ্রদান বন্ধ করে তখন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মান-মর্যাদা চরম প্রশ্নের মুখে পড়ে। কল্পিত অভিযুক্ত মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আপ্রাণ চেষ্টা হয়। থেমে থাকেন না প্রধানমন্ত্রী। ১৯৬৬-তে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ ৬ দফার হুঙ্কারদাতা বাঙালীর কণ্ঠস্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, দেশের নিজস্ব অর্থ দিয়েই পদ্মা সেতু বানাব। তাইতো জনগণের সহায়তা ও সমর্থনে আজ প্রমত্তা পদ্মার বুকে বাঙালীর পদ্মা সেতু সাহসের সঙ্গে দৃশ্যমান।

আইনের দৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় কথা হলো, বিশ্বব্যাংক ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দসহ নানান ফোরামে যারা বিভিন্ন কথা-চিহ্ন-প্রতীক বা অন্য কিছু দ্বারা বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত ও আইনানুসারে প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ ও বৈরিতা সৃষ্টি করেছে, তারা বাংলাদেশে কার্যকর ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ১২৪ক ধারা মোতাবেক ‘রাষ্ট্রদ্রোহ’ নামক অপরাধ করেছে। এ অপরাধ বাংলাদেশের বাইরে সংঘটিত হলেও দণ্ডবিধি ৩ ও ৪ ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রের এখতিয়ারভুক্ত। আইন মোতাবেক এর বিচার জনগণের প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমন কাজ করব না যাতে জনগণের মাথা নত হয়। এ রাষ্ট্রদ্রোহের বিচার হলে কল্পিত দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ও পদচ্যুত মন্ত্রী-উপদেষ্টাসহ সমগ্র বাংলাদেশবাসী ন্যায়বিচার পাবেন, তাদের মাথা নত হবে না বরং উন্নত হবে। এর মাধ্যমে বাঙালীর মর্যাদা ও আত্মনির্ধারণ আবারও প্রতিষ্ঠিত হবে। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবে বাংলাদেশের বাঙালী-আবাঙালী সবাই, পদ্মা সেতু নিজেও।

লেখক : ড. শাহজাহান মণ্ডল – সাবেক ডিন, আইন অনুষদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া এবং কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ