1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

রক্তাক্ত আগস্ট, শোকাবহ আগস্ট

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ২ আগস্ট, ২০২০

৪৫ বছর আগে আগস্টেই ঘাতকের নির্মম বুলেটে সপরিবারে প্রাণ হারান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
‘চিৎকার, ক্রন্দন আর শশব্যস্ত আহ্বানের মাঝে/উল্লাস করছে অন্ধ জনতা।/ ওরা বলে, ‘এখন ভোর’, কিন্তু জীবনপানে তাকিয়ে/ আমি দেখি রাত্রি, ঘোর অমানিশা।’ পঁচাত্তরের পনের আগস্ট বাংলার আকাশের ঘোর কৃষ্ণপক্ষকে ‘আকাশ প্ল্যানেট’ কবিতায় এভাবেই তুলে ধরেছিলেন পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের শ্রেষ্ঠ কবি মীর গুল বাগ খান নাসির। বাঙালির ক্যালে-ারের বছরের সবচেয়ে নির্মম মাস আগস্ট।
শোকের মাস আগস্ট। ৪৫ বছর আগে আগস্টেই ঘাতকের নির্মম বুলেটে সপরিবারে প্রাণ হারান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আগস্ট এলেই ঘাতকের উদ্ধ্যত সঙ্গীন আর পিতৃহন্তারকের নির্মম বুলেটে গুমরে কাঁদে রক্তাক্ত বিবেক। থেমে যায় সব কোলাহল। থমকে যাওয়া সময়ে পিতৃহারানোর শোকে মূহ্যমান হয় জাতি।
আগস্টের কালরাতে সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যা করে ঘাতকেরা জাতির ললাটে এঁকে দেয় পিতৃহন্তারকের কালিমা লেখা। ক্যালে-ারে আগস্ট আসা মানেই পিতৃহারা জাতির বিলাপ বারবার ফিরে আসে, রক্তাক্ত করে অন্তর। কবির ভাষায়, ‘শুনেছ যুদ্ধের ডাক? সময় যে যায়/ খুনিকে করুণা দিয়ে যারা আজ বিজয়ের মৃদঙ্গ বাজায়/ ‘জারজ’ এ পরিচয় ইতিহাস আজ শুধু/ তাদের জন্যেই কোনো নিঃশব্দে সাজায়।’
নরকের দরজা খুলে যাওয়া সেই কৃষ্ণপক্ষ: ‘সেই রাতে আকাশে একটিও নক্ষত্র ছিল না, সেই প্রাতে সূর্যালোক বন্দি ছিল কৃষ্ণ গহ্বরে, সেই রাতে ঈশ্বর তাই দেখতে পাননি, পৃথিবীতে কী ঘটেছিল!’ প্রবীণরা বলেন, সেই রাতে ঢাকার আকাশে কালো মেঘ ছিল, ছিল না বৃষ্টি, ছিল না আঁধার বিদীর্ণ করা নীল জ্যোৎস্না। শ্রাবণের আঁধারে ডুব দিয়েছিল বৃষ্টিহীন রুক্ষরাত। আর এই অমানিশার অন্ধকারে রচিত হয়েছিল ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। রাজধানীর আকাশে-বাতাসে তখনো ছড়ায়নি মুয়াজ্জিনের কণ্ঠ থেকে আজানের সুরেলা ধ্বনি। ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘোর কৃষ্ণপ্রহরে হায়েনার দল বেরিয়ে আসে। নিদ্রাচ্ছন্ন নগরীর নীরবতাকে ট্যাঙ্ক-মেশিনগানের গর্জনে ছিন্নভিন্ন করে ওরা সংহার করে তাকে ‘লোকটির নাম বাংলাদেশ। শেখ মুজিবুর রহমান।’
অভিশপ্ত রাত্রির শোকগাঁথাকে ‘সেই রাত্রির কল্পকাহিনী’তে তুলে ধরেছেন নির্মলেন্দু গুণ। কবিতাটির শেষ চরণগুলো পঁয়তাল্লিশ বছর আগের কলঙ্কিত ট্যাজেডিকে সামনে নিয়ে আসে। ‘তোমার নিষ্প্রাণ দেহখানি সিঁড়ি দিয়ে গড়াতে, গড়াতে, গড়াতে/ আমাদের পায়ের তলায় এসে হুমড়ি খেয়ে থামলো/ কিন্তু তোমার রক্তস্রোত থামলো না/ সিঁড়ি ডিঙিয়ে, বারান্দার মেঝে গড়িয়ে সেই রক্ত/ সেই লাল টকটকে রক্ত বাংলার দূর্বা ছোঁয়ার আগেই/ আমাদের কর্নেল সৈন্যদের ফিরে যাবার বাঁশি বাজালেন।’
১৫ আগস্ট আচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল বঙ্গবন্ধুর। ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু রাত সাড়ে আটটার দিকে গণভবন থেকে বাড়ি ফেরেন। ওই রাতে কাওরান বাজারে একটি ট্যাংক, পিজি হাসপাতালের সামনে আরেকটি ট্যাংক, মতিঝিলের কাছে আরো একটি ট্যাংক দেখতে পান রাজধানীবাসী। এক কিলোমিটারের ব্যবধানে ৩টি ট্যাংক, আবার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের সামনে আরেকটি ট্যাংক দেখেও কারো মনে কোনো প্রশ্ন আসেনি। কৃষ্ণপক্ষের ওই অন্ধকার রাতে খন্দকার মোশতাকের ৫৪ নং আগামসি লেনের বাসায় মেজর রশিদ এবং তাহেরউদ্দিন ঠাকুরের একান্ত বৈঠক হয়। পরদিন বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা জানানো হবে বলে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন কাজ করে সেদিন মধ্যরাতে বাড়ি ফেরেন মুজিবপুত্র শেখ কামাল।
১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়িতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বেরিয়ে আসে বর্বরোচিত ঘটনার নৃশংস চিত্র। শিশুপুত্র রাসেলকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ঘুমাচ্ছিলেন দোতলায়। শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল তিনতলায়, শেখ জামাল ও রোজী জামাল এবং বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের ঘুমিয়েছিলেন দোতলায়। ঘুমাচ্ছিল বাংলাদেশ। শুধু জেগেছিল চক্রান্তকারীরা। ঘাতক এজিদ, সীমার আর দুর্যোধনের অট্টহাসিতে বিদীর্ণ হয় রাত্রির নিস্তব্ধতা। পৈশাচিক উল্লাসে আবারো খণ্ড-বিখণ্ডিত হয় রক্তে কেনা বাংলাদেশ। ভোরের আগেই অন্ধকারের কালো মেঘে ঢেকে যায় বাংলার আকাশ।
অপারেশন ১৫ আগস্টের নেতৃত্বে ছিল কর্নেল ফারুক। তারই পরিকল্পনায় প্রায় ১৫০ জন সৈন্যের বড় বড় তিনটি দল সাজানো হয়। তিনটি দলের প্রধান টার্গেট শেখ মুজিব, আবদুর রব সেরনিয়াবাত ও শেখ মণির বাড়ি। জাতির পিতা হত্যাকা-ের জঘন্যতম ঘটনার দায়িত্ব দেয়া হয় মেজর নূর ও মহিউদ্দিনকে। তাদের সঙ্গে ছিল এক কোম্পানি ল্যান্সার। সেরনিয়াবাতের বাড়ি আক্রমণ করার দায়িত্ব নেয় ডালিম। আর খুনি ফারুকের অত্যন্ত আস্থাভাজন রিসালদার মুসলেহউদ্দিনকে দেয়া হয় শেখ মণির বাড়ি আক্রমণের। খুনিদের ওপর নির্দেশ ছিল সবাইকে হত্যা করার। এছাড়া খুনিদের বাধাদানকারী বা পরে বিপদের কারণ হতে পারে এমন যে কাউকেই নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কর্নেল ফারুক। হত্যাকাণ্ডে বাধা আসতে পারে এমন স্থানেও কিছু সৈন্য মোতায়েন ও ট্যাংক প্রস্তুত করে রাখে হায়েনারা। একটা ট্যাংক বিমানবন্দরের রানওয়ে আটকাবে আর সৈন্যরা মিরপুর ব্রিজ নিয়ন্ত্রণ করবে। বাকীদের রেডিও স্টেশন, বঙ্গভবন আর পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলস সদর দপ্তরে। খুনি ফারুক বলে, ‘যদি তোমরা ব্যর্থ হও, তাহলে মুজিব সেনাবাহিনীদের শেষ করে দেবে এবং ল্যান্সারদের বাতিল করবে। অতএব আর দেরি নয়। এবার আঘাত হানার সময় এসেছে।’
ভোর ৪টা ০৮ মিনিটে রক্তপিপাসু ঘাতক চক্র তিন দলে বিভক্ত হয়ে বেরিয়ে পড়ে। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৩০টি ট্যাংক অবস্থান নেয়। ভোর ৫টার মধ্যেই ঘেরাও করে ফেলে ৩২ নম্বর বাড়ি এবং আশপাশের এলাকা। আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু ভবনে আক্রমণ করে। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে পুলিশ গার্ডরা গুলি চালিয়ে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। আর্টিলারির শামছুল আলমের মাথায় গুলি লেগে মারা যায়। আরো একজন আহত হয়। বঙ্গবন্ধু ভবনের ভেতর থেকে প্রচ- প্রতিরোধের কারণে সৈন্যরা তাদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বুলেটবিদ্ধ হন শেখ নাসের। বঙ্গবন্ধু কয়েকজন অফিসারকে ফোন করেন এবং বারান্দায় এসে পুলিশদের ফায়ার বন্ধ করতে বলেন। মেজর হুদা কয়েকজনকে নিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলে গার্ডরা স্যালুট দেয়। এতে আক্রমণকারী সৈন্যরা বিনা বাধায় প্রবেশের সুযোগ পেয়ে যায়। মেজর হুদার সঙ্গে থাকা একজন কামালকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। শেখ কামাল ও শেখ জামাল সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্টেনগান হাতে নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কামাল। ব্রাশফায়ারে ঝাঁঝরা হয়ে সিঁড়ির সামনে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
গোলাগুলির মধ্যে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন দিকে ফোন করে সাহায্য চাইলেন। পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কেউ ফোন ধরছিল না। মিলিটারি সেক্রেটারি কর্নেল জামিল উদ্দিনকে ফোনে বলেন, ‘জামিল তুমি তাড়াতাড়ি আস। আর্মির লোক আমার বাসায় আক্রমণ করেছে। সফিউল্লাকে ফোর্স পাঠাতে বলো।’ জামিল ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিক ছুটে আসেন বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে। কিন্তু ততক্ষণে ৩২ নম্বর সড়কের ৬৬৭ নম্বর বাড়িটি কারবালার ময়দান। জামিল গাড়ি নিয়ে বাসায় ঢুকতে চাইলে, সৈন্যরা গুলি চালায় জামিলের বুকে আর মাথায়। টলতে টলতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনেই মৃত্যুর হিমশীতল পরশ আলিঙ্গন করে নেন তিনি। একসময় সেনাপ্রধান জেনারেল সফিউল্লাহর সঙ্গে কথা হয় বঙ্গবন্ধুর। সফিউল্লাহ বলেন, ‘স্যার আই এম ডুয়িং সামথিং। ক্যান ইউ গেট আউট অব দ্য হাউস।’ এরপর সফিউল্লাহ ফোনে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। তখন ভোর আনুমানিক ৫টা ৫০ মিনিট। এর মধ্যেই বাড়ির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে মেজর মহিউদ্দিন, হুদা, নূর চৌধুরীসহ ঘাতকের দল। দোতলায় ওঠার সিঁড়ির গোড়াতেই দেখা হয়ে যায় ঘাতকের কিলিং মিশনের প্রধান টার্গেট জাতির পিতার সঙ্গে। ধূসর রঙের চেক লুঙ্গি-সাদা পাঞ্জাবি আর ডানহাতে প্রিয় পাইপের চিরায়ত বাঙালির শ্বাশত রূপের প্রতিকৃতি বিশাল হৃদয়ের শেখ মুজিবের সামনে দাঁড়িয়ে মুহূর্তে বিচলিত হয়ে যায় খুনি মহিউদ্দিন। শেখ মুজিবকে হত্যার দৃঢ় মনোবল নিয়ে আসা মহিউদ্দিন আমতা আমতা করে বলে, স্যার আপনি আসুন।
অত্যন্ত কর্কশ ভাষায় গর্জে ওঠে সিংহ হৃদয়, ‘তোরা কি চাস? কেন বেয়াদবি করছিস? তোরা কি আমাকে খুন করতে চাস? ভুলে যা। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা পারেনি। তোমরা কি মনে করো, তা পারবে?’ বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত কড়া ভাষায় ধমকেই যাচ্ছিলেন। বলছিলেন, ‘যে দেশের সেনাবাহিনী সদস্যরা, দেশের ও সেনাবাহিনীর আইনশৃঙ্খলা ও সংবিধান লঙ্ঘন করে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির বাসা আক্রমণ করতে পারে, আমি তার রাষ্ট্রপতি থাকতে চাই না। তবে তোমাদের মতো অধঃস্তন কর্মকর্তাদের কাছে পদত্যাগও করতে পারি না। তোমাদের সেনাবাহিনীর চিফ ও ডেপুটি চিফদের এখানে নিয়ে এসো, তাদের কাছে ইস্তফাপত্র দেব।’ এ সময় দুজন মেজর বঙ্গবন্ধুকে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার জন্য বললে বঙ্গবন্ধু আবারো বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘আমার সঙ্গে শেখ কামালকে যেতে দিলে আমি বেতার কেন্দ্রে যেতে পারি।’ কাঁপতে কাঁপতে হাত থেকে পড়ে যায় ল্যান্সার মহিউদ্দিনের পিস্তল। এমন সময় স্বয়ংক্রিয় স্টেনগান নিয়ে দৌড়ে আসে ঘাতক নূর চৌধুরী। বুদ্ধিমান শেখ মুজিব ধমকিয়ে তাদের সময় ও মনোবল নষ্ট করতে চাইছেন বুঝে ফেলে নূর চৌধুরী। মহিউদ্দিনকে ধাক্কা মেরে এক পাশে সরিয়ে চিৎকার করে বলে, ‘স্টপ! দিস বাস্ট্রার্ড হ্যাজ নো রাইট টু লিভ।’ গর্জে ওঠে স্বয়ংক্রিয় স্টেনগান। বৃষ্টির মতো গুলিতে ঝাঁঝরা হয় ছয় ফুট দুই ইঞ্চির বিশাল দেহ মুখ-থুবড়ে পড়ল সিঁড়িতে। বুকের ডানদিকে গুলির বিরাট ছিদ্র। যে উঁচু করা তর্জনী ছিল পাকিস্তানের ভয়ের কারণ আর সন্তানসম বাঙালির আস্থার প্রতীক, ঘাতকের ব্রাশফায়ারে উড়ে যায় সেই তর্জনীটি। তবুও ডানহাতে আঁকড়েধরা ছিল ধূমপানের প্রিয় পাইপ।
নির্মম রাতে শহীদ যারা : বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন প্রাণ হারান তার প্রিয় সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, সেনা কর্মকর্তা শেখ জামাল ও ১০ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল, নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। প্রবাসে থাকায় প্রাণে রক্ষা পান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। ওইরাতে আরো প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, শিশু পৌত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু এবং বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন নিরাপত্তা কমকর্তা ও কর্মচারী।
আজকের বাংলাদেশ: পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের নারকীয় ঘটনায় শোকে, ভয়ে স্তম্ভিত হয় জাতি। বিশ্ববাসীকে স্তব্ধ করে দেয়। বাংলা, বাঙালির স্বাধীকার আর মুক্তির আন্দোলনকে ঘিরে যে সাংস্কৃতিক চর্চার দ্রুত বিকাশ ঘটেছিল তা চাপা পড়ে পঁচাত্তরের খুনিদের পৈশাচিক উল্লাসে। নিষিদ্ধ বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণেও ভয় পায় জাতি। বন্ধ হয়ে যায় মুক্তবুদ্ধির সকল শিল্পচর্চা। ধানমন্ডি বত্রিশ নম্বর থেকে টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিস্ত বঙ্গবন্ধুর মতোই রক্তাক্ত বাঙালির সংস্কৃতি, বাংলা ভাষা, বাংলার মানুষের অসাম্প্রদায়িক চেতনাসহ সকল সুকৃতির অপমৃত্যু ঘটে। ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রের ক্ষমতায় এলে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারে আস্বস্থ হয় জাতি। দ্বিতীয়বার ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা সরকারের সময় বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার ও রায় কার্যকর করা হয়।
পিতৃহত্যার কলঙ্কতিলক থেকে মুক্তি পায় জাতি। এবারের শোকের মাস জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’। টানা তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রক্ষমতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম ঘুচিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের উন্নয়নের ‘রোলমডেল’। উন্নয়নের মহাসড়কে ডিজিটাল বাংলাদেশ। টার্গেট রূপকল্প-২০৪১। এরমধ্যে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে জাতি। বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর ভয়ংকর মহামারীতেও দক্ষভাবে মোকাবিলা করার প্রত্যয় নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞবদ্ধ। শোকের আগস্টে জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত জাতি আবার নতুন করে সোনার বাংলা বিনির্মাণের শপথ নেবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ

নির্বাচিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে কাউকে সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান: নিরাপত্তা পরিষদে ‘মিয়ানমারবিষয়ক’ প্রস্তাব গৃহীত

সালমানের হাত ধরে নায়ক হচ্ছেন বডিগার্ডের ছেলে

পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে শীর্ষে বাংলাদেশ

মস্কো-কিয়েভ চুক্তির পর ইউক্রেন ছাড়ল প্রথম শস্যবাহী জাহাজ

২৬ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডারের কম্বল 

খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে বোরো উৎপাদন বাড়াতে ‘হাইব্রিড জাতে’ ঝুঁকছে সরকার

সর্বকালের সেরা ১০০ সংগীতশিল্পীর তালিকায় লতা মঙ্গেশকর

রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত ২৩ হাজার কেজি ভেজাল গুড় জব্দ, জরিমানা

দ্বিতীয় ডোজের আওতায় ৬ কোটি ৬৫ লাখ মানুষ