1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

সমতাভিত্তিক দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর নীতি-পরিকল্পনা

ড. শাহ মো. আহসান হাবীব : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১

স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকেই বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ও উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে, যা দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে সুসংগঠিতভাবে দৃশ্যমান হয় এবং বাস্তব রূপ নিতে শুরু করে। প্রকৃতপক্ষে, স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন প্রথম সরকারের সময়ে প্রণীত বাংলাদেশের ‘প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (১৯৭৩-১৯৭৮) মধ্য দিয়ে একটি সমতাভিত্তিক অর্থনীতির বীজ রোপণ করা হয়। যার মাঝে নিহিত ছিল বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন, একটি শোষণমুক্ত সমাজ গঠনের স্বপ্ন এবং সর্বোপরি দেশের অবহেলিত সাধারণ স্বল্প আয়ের মানুষ ও গ্রামীণ জনপদকে অর্থনীতির মূলধারার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কৌশল।

স্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রণীত সংবিধানে তার কল্যাণমুখী চিন্তাচেতনার সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটেছে। সংবিধানের প্রস্তাবনায় শোষণমুক্ত, সমাজতান্ত্রিক এক সমাজ গঠনের অঙ্গীকার করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, নাগরিকদের মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য এবং সুবিচার নিশ্চিত করা হবে। সংবিধানের ১০, ১৩ ও ১৪ ধারা স্বাধীন বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া এবং অবহেলিত নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার সবচেয়ে বলিষ্ঠ বক্তব্য। মানুষে মানুষে শোষণ নিরসন এবং রাষ্ট্রীয়, সমবায়ী ও ব্যক্তিমালিকানায় সম্পদের সুষম বণ্টন ব্যবস্থা করার বিষয় ব্যক্ত করা হয়েছে ধারা ১০ ও ধারা ১৩-তে। আর ধারা ১৪-তে উচ্চারিত হয়েছে খেটে খাওয়া কৃষক, শ্রমিক ও পিছিয়ে পড়া জনগণের শোষণ থেকে মুক্ত করার প্রত্যয়।

গ্রামীণ অর্থনীতিতে যথাযথ সম্পদ সরবরাহ এবং ধনী-গরিবের বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে উন্নয়ন অর্জনে বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টা দৃশ্যমান। সমতা উঠে এসেছে তত্কালীন সরকারের সব ধরনের রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও কর্মকাণ্ডে। এর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ, সংবিধানের ১৫ ধারায় পরিকল্পিত উপায়ে রাষ্ট্র উৎপাদনশীল শক্তির বিকাশ ঘটিয়ে নাগরিকদের জীবনের মান উন্নত করে খাদ্য, বস্ত্র, আবাসন, শিক্ষা ও চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে এবং ১৬ ধারায় গ্রামীণ পর্যায়ে বিদ্যুতায়ন, কুটির শিল্প, শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, যোগাযোগ, শহর ও গ্রামের জীবনমানের বৈষম্য দূর করার অঙ্গীকার করা হয়েছে। ১৭ ধারায় গণমানুষের উন্নয়নের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা, আইন দ্বারা শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। সংবিধানের ধারা ১৮ ও ১৯-এ ব্যক্ত করা হয়েছে, জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের এবং নাগরিকদের সবাইকে সমান সুযোগ তৈরি করে দেয়া রাষ্ট্রের সদিচ্ছা ও দায়িত্ব। রাষ্ট্র দায়িত্ব নিয়েছে পিছিয়ে পড়াদের সামাজিক সুরক্ষারও। সংবিধানের ২০ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কাজের অধিকার, নিশ্চিত কর্মসংস্থান ও মজুরির ব্যবস্থা এবং বেকার, অসুস্থ প্রতিবন্ধী, বিধবা, বয়স্ক ও অন্যদের সামাজিক সুরক্ষা দেবে রাষ্ট্র। এমন একটি জনকল্যাণমুখী ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে উন্নয়নের যাত্রায় নামেন বঙ্গবন্ধু। ‘আমার সরকার অভ্যন্তরীণ সমাজ বিপ্লবে বিশ্বাস করে, একটি নতুন ব্যবস্থার ভিত রচনার জন্য পুরনো সমাজ ব্যবস্থা উপড়ে ফেলতে হবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়ব’—বঙ্গবন্ধুর স্পষ্ট উচ্চারণ ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ প্রথম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বেতার ও টিভি ভাষণে। তিনি বললেন, ‘আমাদের চাষী হলো সবচেয়ে দুঃখী ও নির্যাতিত এবং তাদের অবস্থার উন্নতির জন্য উদ্যোগের বড় অংশ অবশ্যই তাদের পেছনে নিয়োজিত করতে হবে।’ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ বারবার উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণে, আলোচনায়। গ্রামীণ ঋণের জন্য বঙ্গবন্ধু সমন্বিত গ্রামীণ উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছিলেন। খাদ্যনিরাপত্তা, মানব উন্নয়ন, কাজের স্বাধীনতা—এ বিষয়গুলো বারবার এসেছে বঙ্গবন্ধুর কথায়, পরিকল্পনায় ও উন্নয়ন কৌশলে।

প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (১৯৭৩-৭৮) রূপরেখা প্রণয়ন করা হয়েছিল একটি অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির মধ্যে। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত ১৯৭১ সালের পরবর্তী বাংলাদেশ ছিল একটি বিধ্বস্ত অর্থনীতি। যুদ্ধকালীন ধ্বংসযজ্ঞের অনেক বিবরণ পাওয়া গেলেও মোট দেশজ উৎপাদনের পরিমাণ নিরূপণ করা সহজ ছিল না। এক হিসাব অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসের কারণে ১৯৭০ সালের তুলনায় ১৯৭২ সালে মোট দেশজ উৎপাদন ৩০ শতাংশ কমে এসেছিল। বেশির ভাগ অবকাঠামো বিনষ্ট করা হয়েছিল, শিল্প-কারখানা ছিল বিধ্বস্ত অথবা উৎপাদনের অযোগ্য এবং কৃষি খাতে উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামের পর দেশের মানুষ জীবন-জীবিকা ও সম্পদ হারানোর বড় শোক থেকে উত্তরণের জন্য নতুন সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ এবং মেধাবী ব্যক্তি জীবন দিয়েছিল। বহির্বিশ্বের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও বাংলাদেশের অনুকূলে ছিল না এবং জ্বালানি তেলের মূল্য ছিল অস্বাভাবিক বেশি। বিশ্ব অর্থনীতি নজিরবিহীন মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছিল। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মাঝে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শনের বাস্তবায়ন শুরু হয় তার রাজনৈতিক অঙ্গীকার এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য প্রণীত সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মাঝে। এমন পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু সরকার ও তত্কালীন পরিকল্পনা কমিশন খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণে নিয়োজিত হয়। সে অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় স্বনির্ভরতা মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে এবং সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সরকারি ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিলেও বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে সবকিছুর কেন্দ্রে ছিল বাংলাদেশের অবহেলিত জনগোষ্ঠী এবং পিছিয়ে পড়া জনপদের স্বার্থ সংরক্ষণ।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশের মানুষের নির্ভরতা ছিল মূলত কৃষি খাতের ওপর এবং সাধারণ জনগণের স্বার্থরক্ষায় ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষি খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নকে গুরুত্ব দেয়া হয়। বঙ্গবন্ধু কৃষি সমবায় আন্দোলনকে কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়নের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। এ সময় সরকারি খাতে পরিচালিত ব্যাংকগুলোর শাখা দ্রুত সম্প্রসারণ করা হয় মূলত গ্রামীণ এলাকায় এবং প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা অনুসারে গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক বিনিয়োগের সূচনা করা হয়। কৃষি খাতের পাশপাশি শিল্প খাতের উন্নতির লক্ষ্যে সারা দেশে শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিল্পোদ্যোগ ছড়িয়ে দিতে প্রয়াস নিয়েছিলেন। বড় শিল্পের পাশাপাশি ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশ ছাড়া শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলা সম্ভব নয়, তা বঙ্গবন্ধুর পরিকল্পনায় প্রকাশ পেয়েছে। তার বড় শিল্পের জাতীয়করণের পাশাপাশি মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে বেসরকারি খাতকে উৎসাহ প্রদান এক্ষেত্রে অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। ১৯৭৩ সালে বিসিক বা বিএসসিআইসি থেকে ‘বাংলাদেশ কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন’ বা বিএসআইসি এবং ‘বাংলাদেশ স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন’ বা বিসিআইসি গঠন করা হয় (১৯৭৫ সালে আবার একীভূত করা হয়েছিল)। এর মাধ্যমে বেসরকারি খাতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রতিষ্ঠা, ব্যাংক থেকে ঋণপ্রাপ্তি, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও বাজারজাতের জন্য সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। পরিকল্পনার আওতায় কুটির শিল্প, হস্তশিল্প, পল্লী শিল্প, তাঁত শিল্প, লবণ শিল্প এবং বাঁশ ও বেত শিল্পে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। তত্কালীন সম্পদের স্বল্পতা ও আর্থিক সক্ষমতার কথা বিবেচনায় রেখে এবং সম্পদের সুষম বণ্টনের লক্ষ্যে কলকারখানা ও বড় বড় অবকাঠামো সরকারীকরণের সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছানুসারে এ সময়ে শিল্প-কারখানার ব্যবস্থাপনা পর্ষদে ৪০ শতাংশ শ্রমিক রাখার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। সময় ও বাস্তবতার বিবেচনায় প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সরকারি খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল বাজেটের ৮৮ শতাংশ এবং প্রায় ১২ শতাংশ বেসরকারি খাতে, যেখানে কৃষির ওপর নির্ভরতা স্পষ্ট এবং শিল্প উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সামাজিক ভোগের আওতায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বড় পরিবর্তন লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। যেমন হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৮০ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায়।

বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে সহজে জানা যায়, সমতাভিত্তিক উন্নয়ন ভাবনা সবসময়ই বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনাদর্শের অংশ ছিল। অবহেলিত জনগোষ্ঠীর দুঃখ লাঘব বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সবসময় গুরুত্ব পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু ছাত্রজীবন থেকে সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ছিলেন তত্পর। পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের গোপন প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাকিস্তান সৃষ্টির পরপরই তিনি তরুণদের সংগঠিত করতে শুরু করেছিলেন এ দেশের কৃষক, শ্রমিক তথা খেটে খাওয়া মানুষের খাদ্য সংকট ও সংশ্লিষ্ট সমস্যা মোকাবেলার দাবিকে কেন্দ্র করে। আজীবন তিনি গ্রামগঞ্জে সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে সময় কাটিয়েছেন এবং কৃষক-শ্রমিক-সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা স্বচোখে দেখেছেন। জেলে থাকা অবস্থায় গরিব-দুঃখী কারাবন্দিদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে মিশেছেন এবং তাদের কষ্ট ও সমস্যা অনুভব করার জন্য সচেষ্ট হয়েছেন। ভূমি ব্যবস্থাপনায় আমূল সংস্কার, শিল্প বিকাশে নতুন উদ্যোগ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের প্রণোদনা প্রদান, কৃষির আধুনিকায়নে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ, সমবায় চেতনা বিকাশে শুরু করেছিলেন পরিকল্পনা এবং কর্মকাণ্ড। আত্মনির্ভরতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দেয়া, মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা, নারীশিক্ষা এবং ক্ষমতায়ন কর্মসূচি ছড়িয়ে দিতে সবসময় বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় ছিল সাধারণ অবহেলিত জনগোষ্ঠী। পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় আনতে ছিলেন সবসময় তত্পর।

স্বাধীনতা-পরবর্তী পুনর্গঠন প্রচেষ্টা ফলাফল বয়ে আনতে শুরু করে ১৯৭৩ সাল থেকেই। যদিও ১৯৭৩-৭৪ পরিস্থিতিতে তত্কালীন সরকার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বহু অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছিল, তার পরও অর্থনীতির গতি সচল হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। প্রকাশিত তথ্যানুসারে, কৃষি উৎপাদন ও বৈদেশিক বাণিজ্যে গতিসঞ্চার হচ্ছিল, সম্পদের ব্যবহারে দক্ষতা বাড়ছিল, মূল্যস্ফীতি কমে আসছিল ১৯৭৫ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায়। আমাদের দুর্ভাগ্য, সে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি জাতির জনক। তবে পথ দেখিয়ে গেছেন টেকসই অর্থনীতি আর সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার।

লেখকঃ- ড. শাহ মো. আহসান হাবীব, অধ্যাপক ও পরিচালক (প্রশিক্ষণ) বিআইবিএম।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ