1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বীরত্বের জন্য ব্রিটিশ পদক পেয়েছিলেন ২য় বিশ্বযুদ্ধের সেনা সামছুদ্দিন

যশোর জেলা প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১১ আগস্ট, ২০২২

ল্যান্স করপোরাল মো. সামছুদ্দিনের বয়স এখন ৯৮। থাকেন যশোর শহরের পুরাতন কসবা বিবি রোড (মাদরাসা মহল্লা) এলাকায় বড় মেয়ের বাড়িতে। বছরখানেক আগেও তিনি ছিলেন বেশ চটপটে। এখন তার কথা জড়িয়ে যায়। বয়সের ভারে স্মৃতিশক্তি কিছুটা কমে গেলেও মাঝে মাঝে বলে উঠেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লোমহর্ষক কাহিনি।

এখন সামছুদ্দিনের সময় কাটে নামাজ, কোরআন শরীফ আর বই পড়ে। নাতির ছেলে বোরহানউদ্দিনই তার দেখাশোনা করেন।

১৯২৪ সালের জুনে কেরালায় জন্ম তার। মাকে হারিয়েছেন ছোটবেলায়। এরপর তার বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। সামছুদ্দিন দশম শ্রেণির ছাত্র, ক্লাসের ফাস্ট বয় ছিলেন। তার সৎ মায়ের বকাঝকা ও বাবার খারাপ আচরণের কারণে রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান মাদ্রাজের এক মামার বাড়ি।

১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দেন তিনি। সৈনিক নম্বর ছিল ৬৪১৪৬০।

ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে সামছুদ্দিন জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিছু গল্প। আবার অনেক সময় কথা বলতে না পারলে আকারে-ইঙ্গিতে বলেন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১৯৩৯ সালে। শেষ হয় ১৯৪৫ সালে। পুরো সময়েই যুদ্ধের ময়দানে ছিলেন তিনি। যুদ্ধ চলাকালে একবার সিঙ্গাপুরে তিন হাজার সহযোদ্ধাসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। অবরুদ্ধ অবস্থায়ই টানা তিন মাস যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছেন তারা। অনেক সময় কেটেছে না খেয়ে। জাপানি সেনাবাহিনীর বারবার আহ্বান উপেক্ষা করেই সে সময় আত্মসমর্পণ না করে যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছে তার ইউনিট। বিশ্বযুদ্ধের পরও সেনাবাহিনীর চাকরি অব্যাহত রাখেন তিনি।

যুদ্ধের সময় খাকি পোশাক ও মাথায় পাগড়ি পরতেন। যুদ্ধের সময় চালিয়েছেন মেশিনগান-স্টেনগান।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার করেছেন দুর্বিষহ সময়। যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে পেয়েছেন পদক। তবে একাত্তরের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার সেসব পদক, যুদ্ধদিনের স্মারক ও ছবি সবই নষ্ট করে দেয় পাকিস্তানি সেনারা।

সামছুদ্দিনের বড় মেয়ে খাদিজা খাতুন বলেন, ছোটবেলায় বাবা মুখে যুদ্ধের অনেক গল্প শুনেছি। তিনি সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতে লড়াই করেছিলেন। সিঙ্গাপুরে লড়াই চলাকালে কখনও দুদিন, কখনও চারদিন পর্যন্ত সামান্য খাবার কিংবা শুধু পানি খেয়ে থাকতে হয়েছিল। আবার অনেক সময়ে তাদের গাছের পাতা খেতে হয়েছে।

তিনি জানান, যুদ্ধের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাবা যুদ্ধের ময়দানেই ছিলেন। দেশভাগের পর তিনি বাংলাদেশে স্থায়ী হন। কিছুকাল পরই সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান।

এরপর যশোর সদরের দোগাছিয়া গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু। সামছুদ্দিনের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। স্ত্রী জাহেদা খাতুন মারা গেছেন ১৯৯৯ সালে।

বিশ্বযুদ্ধে অবদান ও ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্য হিসেবে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে তিন মাস পর পর ১৬ হাজার টাকা এবং সেনাবাহিনী থেকে প্রতি মাসে কিছু পেনশন পান তার বাবা।

বর্তমানে সামছুদ্দিন চরম অসুস্থ। কিছুদিন আগেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ