1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

১২ হাজার টাকায় সন্তান বিক্রি করতে বাজারে মা!

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২

দীর্ঘদিন স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ছোট ছেলেকে নিয়ে পৈত্রিক ভিটায় গোয়াল ঘরের পাশে থাকেন মা। নিজেও মৃগী রোগে আক্রান্ত। অভাব অনটনের সংসারে যেখানে ছেলের মুখে দুমুঠো ভাত তুলে দেয়া দুষ্কর সেখানে নিচের ওষুধ কিনে খাওয়া তো অসম্ভব। এ অবস্থায় সন্তান মানুষ করা কঠিন। তাই প্রাণ প্রিয় ৬ বছরের সন্তানকে ‘বিক্রির জন্য’ বাজারে তুলেছিলেন এক মা! দাম হাঁকিয়েছিলেন ১২ হাজার টাকা। পরে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপে সন্তান নিয়ে ঘরে ফেরেন ওই নারী।

গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট ভাইরাল হলে আলোড়ন তৈরি হয় পাহাড়ি শহর খাগড়াছড়ি জুড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর নেটিজেনরা আলোচনা, সমালোচনা শুরু করেন। ঘটনা আদৌ সত্য কি না? নিজের মা কেন সন্তানকে বিক্রি করবেন? এ সব।

তবে সরজমিন শুক্রবার (১২ আগস্ট) খাগড়াছড়ি সদরের ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পাক্কুজ্যছড়ি গ্রামে গিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রতিবেশী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ছেলে বিক্রি করতে মায়ের হাটে তুলে দর দেয়ার ঘটনাটি সত্য। অভাব অনটনের সংসারে ছেলেকে ও নিজে ঠিক মত খাওয়া, ভরণপোষণ দিতে না পারায় এমন সিদ্ধান্ত নেন ওই মা।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে খাগড়াছড়ি বাজারে আসার কথা বলে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন ওই নারী। বাজারে এসে সবজি বিক্রি করতে আসা কয়েকজন নারীকে ছেলে বিক্রির প্রস্তাব দেন। তারা একজনকে বলার পর ছেলেকে কিনতে ৫ হাজার টাকা প্রস্তাব দেন। কিন্তু ওই মা ১২ হাজার টাকার কমে বিক্রি করবেন না। এ নিয়ে দর কষাকষির এক পর্যায়ে জেলা সদরের কমলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল জীবন চাকমা বিষয়টি জানতে পারেন। পরবর্তীতে তার হস্তক্ষেপে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়।

ওই নারীর ভাই জানান, দিদি মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন। মৃগী রোগী। মৃগেরভাব উঠলে এলোমেলো কথা ও কাজ করেন। গত বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি বাজার থেকে এক চেয়ারম্যান ফোন করে ছেলেকে বিক্রি চেষ্টার কথা বলার পর বাবা গিয়ে দিদি ও ভাগিনাকে বাসায় নিয়ে আসেন। অভাবের কারণে বোনের চিকিৎসা করাতে পারেন না বলেও আক্ষেপ করেন তিনি।

এ দিকে ব্যক্তিগতভাবে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ওই ছেলেকে শিশু সদনে থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন ভাইবোন ছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুজন চাকমা।

সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা বলেন, পরিবারটির জন্য ৬ মাসের খাদ্যশস্য ও নগদ কিছু টাকা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সদর ইউএনওকে বলে একটি সরকারি ঘর দেয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।

খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন ডা. মো. ছাবের জানান, মৃগী রোগীদের মানসিক সমস্যা হতে পারে। বর্তমানে সময়ে চিকিৎসা নিয়ে তা অনেকটা সুস্থ হওয়া যায়। জেলা সদর হাসপাতালে ভালো চিকিৎসক ও বিনামূল্যে চিকিৎসা হয়। পরিবার যদি চায় স্বাস্থ্য বিভাগ সহযোগিতা দেবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ