1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

শেখ হাসিনার দর্শন ও চিন্তা দূরদর্শী

হায়দার মোহাম্মদ জিতু : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

বিশ্ব ব্যবস্থা নিয়ে বাংলা ও বাঙালি যে পরম ঈর্ষাকাতর তা বুঝতে খুব বেশি গবেষণার প্রয়োজন নেই। সুস্থ, স্বাভাবিক ও সাধারণ জ্ঞান সম্পন্ন মানুষ মাত্রই সেই অনুভূতি বুঝে ফেলেন। পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ যেখানেই যা সৃজিত বা আবিষ্কৃত হোক; বাংলাদেশের ভোক্তা হিসেবে সবই হাতে হাতে পেয়ে যাচ্ছে মানুষ। এসব বিষয় নিশ্চয়ই উট দিয়ে কিংবা হাঁটা পথে বহন করলে এত দ্রুত হাতে হাতে পৌঁছানো সম্ভব হতো না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বৈশ্বিক ব্যবসার অংশীদারিত্বের সুবাদে সুফল মিলছে।

তবে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গ্রহণে অসুবিধাও আছে। এটি খুবই সাধারণ ব্যাপার। ধরা যাক, আপনি একটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক অংশীদারে আছেন। সেই দেশ কিংবা তার আশেপাশে আঘাত এলে স্বাভাবিকভাবে সেই আঁচ আপনার গায়েও লাগবে। আরেকভাবে বলা যায়, এ বিষয়টি একটি ঘরের জানালার মতো। জানালা খুলে রাখলে যেমন গরমে স্বস্তি মেলে, তেমনই ঝড়-বৃষ্টি সেটি বন্ধ রাখতে হয়।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট তেমনই একটি পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে, যে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নিজেদের খরচ কমিয়ে আনাসহ বৈদ্যুতিক সাশ্রয়ে মনোনিবেশ করেছে। স্বভাবতই বাঙালির শান্ত সাহস শেখ হাসিনা সেই আলোকে দেশে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরমধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিসের সময়সূচি কিছুটা বদল, ঘড়ির কাঁটা ধরে লোডশেডিং, সরকারি ব্যয় কমিয়ে আনা ইত্যাদি। ট্র্যাজেডি হলো, এসব উদ্যোগ নিয়ে বিভিন্ন রঙে বিদ্রুপ করার প্রবণতা দেখা গেছে। উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা চলেছে জনমনে।

রাজনৈতিক নেতৃত্বের মুন্সিয়ানা পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া। শেখ হাসিনা বৈশ্বিক পরিস্থিতি বুঝতে পেরেছেন বলেই উল্লিখিত উদ্যোগগুলো গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। আগেই বলেছি, বিভিন্ন দেশ এমন কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে জনগণকে আহ্বান করলেই হয়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে উল্টো সরকারকে মনিটরিংও করতে হয়। কারণ এখানে বহুল প্রচলিত প্রবাদ আছে, ‘সরকারি মাল দরিয়া মে ঢাল’। একটি বাক্যেই এই দেশের কিছু অসঙ্গতি ও অসহায়ত্ব বেরিয়ে আসে।

দেশের সবই যে জনগণের সম্পত্তি– সেই বোধ থেকে জনগণকে দূরে রাখা, তাদের মাঝে অপচয়ের মানসিকতা ঢুকিয়ে দেওয়া এবং সরকারকে সবসময় জনগণের প্রতিপক্ষ বানিয়ে রাখার অপচেষ্টা চলছে। এসবের বাইরে গ্রামীণ সামাজিক সংসারে কৌশলে ভাঙনের সুর বাজাতে অনেকের চেষ্টার ত্রুটি নেই। বেদনার বিষয় হলো– গ্রামীণ সামাজিক সংসারে নির্মোহ, লোভহীন এবং সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য মানুষগুলোর সংখ্যা দিন দিন কমছে। শহুরে কাঠামোতেও একই চিত্র। মৃত্যুর এই মিছিল যত দীর্ঘ হচ্ছে ততই যেন সহনশীলতার শিক্ষা দেওয়ার অভিভাবক শূন্যতা অনুভূত হচ্ছে। প্রকট হচ্ছে সমাজকে আগলে রাখা মানুষের সংখ্যা। ফলে লোভের থাবায় সর্বস্ব খুইয়ে ফেলা কিংবা লাগামহীন স্বপ্নের তোড়ে হেরে যাওয়া ও মরে যাওয়া স্রোত সহজেই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।

এখানেই মূল আতঙ্ক। কারণ এখানে এখনও কোনটা জাতীয় স্বার্থ আর কোনটা রাজনৈতিক স্বার্থ সেটি পৃথক করার পূর্ণ মানস হয়ে গড়ে ওঠেনি। তাই মানুষকে খেপিয়ে জাতীয় স্বার্থ ব্যাহত করে তুচ্ছ ক্ষমতার মোহে দেশি-বিদেশি বিক্রি-বাট্টার ঝুঁকি আছে। যদিও এসব ঝুঁকি সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব।

বাঙালি সহজিয়া সংস্কৃতি ধারণ ও লালন করে। নিজের খাবার বিলিয়ে দেবো অনাহারির মুখে– এমন চিন্তা বাঙালির ভেতর থেকেই জেগেছে। এক্ষেত্রে জ্বালানি সম্পর্কিত সংকট ও মূল্যস্ফীতি যে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট ও বৈশ্বিক ব্যবস্থার কারণ; সেই বিষয়কে তৃণমূলের জনগণ পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দায়িত্ব। সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে– এই সংকটের কারণে বৈশ্বিকভাবে অনেক দেশ আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। কাজেই সময়ের এই স্রোতে ব্যয় সংকোচন করে মিতব্যয়ী হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন ও চিন্তা দূরদর্শী। এজন্যই বৈশ্বিক সংকটগুলো যেন দেশের জনগণকে না নোয়াতে পারে সেই লক্ষ্যে আগাম বিদ্যুৎ সাশ্রয়সহ অযাচিত খরচ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দূরদর্শী রাজনৈতিক নেতার বৈশিষ্ট্য হলো, সংকট সৃষ্টির আগেই জনগণকে সচেতনতার পথে নিয়ে আসা।

বাংলাদেশ এখন বিশ্ববাজার ব্যবস্থার অংশীদার। কাজেই আগামীতে আরও নতুন নতুন বৈশ্বিক সংকটের আঁচ এখানে লাগতে পারে। অনেক চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তকে মোকাবিলা করতে হতে পারে। এজন্য এখন থেকেই নিজেদের মাঝে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্যের উৎপাদন দেশেই করার প্রতি মনোযোগী হতে হবে। সেই সঙ্গে রফতানিমুখী হওয়ার ক্ষেত্রে একমুখী মার্কেট এরিয়া নয়, বরং বহুমুখী এরিয়াকেন্দ্রিক বাজার সৃষ্টির পথে হাঁটতে হবে। তা না হলে নিজেদের স্বার্থ আদায়ে চাপ বৃদ্ধিতে বাজার বন্ধের কৌশলের খপ্পরে পড়ার ঝুঁকি বাড়বে। ভৌগলিক অবস্থানগত অর্জন সেটাই ইঙ্গিত করে।

লেখক : হায়দার মোহাম্মদ জিতু – প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। haiderjitu.du@gmail.com


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ