আফ্রিকার কিছু অংশে দেখা দিয়েছে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব এবং তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। একে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। অতি সংক্রামক এ রোগে ডিআর কঙ্গোতে প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের সময়ই কমপক্ষে ৪৫০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
কঙ্গোর বাইরেও মাঙ্কিপক্স এখন মধ্য এবং পূর্ব আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে। এ রোগের নতুন ভ্যারিয়েন্ট খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এর উচ্চমৃত্যু হার নিয়ে বিজ্ঞানীরা উদ্বিগ্ন। খবর বিবিসি’র।
ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইসোস বলেছেন, মাঙ্কিপক্স আফ্রিকা এবং তার বাইরে আরও ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা ‘খুব উদ্বেগজনক’। এই সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব বন্ধ করতে এবং জীবন বাঁচাতে একটি সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া অপরিহার্য।
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাস থেকেও অন্য কেউ এতে সংক্রমিত হতে পারে। মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ সাধারণ ফ্লুর মতোই। এটি ত্বকের ক্ষত সৃষ্টি করে, যা মারাত্মক প্রাণঘাতী হতে পারে। আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৪ শতাংশ।
আফ্রিকায় মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের দুইটি প্রধান ঢেউ সঞ্চালিত হয়েছে। মাঙ্কিপক্সের একটি ধরণ হলো ‘ক্লেড আই’, এটি মধ্য আফ্রিকার স্থানীয়দের শরীরে বেশি সংক্রমিত হতে দেখা যায়। আরেকটি ধরন হলো ‘ক্লেড আইবি’। এটি মাঙ্কিপক্সের নতুন এবং আরও মারাত্মক ধরণ, যেটিকে একজন বিজ্ঞানী ‘এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এ নতুন ধরণটির কারণেই বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ডব্লিউএইচও।
চলতি বছরের শুরু থেকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে এ রোগে ১৩ হাজার ৭০০ জনের মতো আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কমপক্ষে ৪৫০ জন মারা গেছেন। এরপর এটি বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, কেনিয়া এবং রুয়ান্ডাসহ অন্যান্য আফ্রিকান দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের কারণে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারি এবারই প্রথম নয়। ২০২২ সালের জুলাইয়ে মাঙ্কিপক্সের একটি ধরন ইউরোপ এবং এশিয়ার কিছু অংশসহ প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিলো। ডব্লিউএইচওর একটি গণনা অনুসারে, সেই প্রাদুর্ভাবের সময় ৮৭ হাজার মানুষ এতে আক্রান্ত হন এবং তাদের মধ্যে অন্তত ১৪০ জনের মৃত্যু হয়।