আনসার সদস্যদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেওয়ার পরও কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য যারা তথাকথিত আন্দোলন করছে, এরা মূলত অঙ্গীভূত আনসার সদস্য। ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা যারা রাষ্ট্রের অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের সাথে এই অঙ্গীভূত আনসারদের এক করে দেখার কোন সুযোগ নেই, এবং তাঁরা কোন আন্দোলনের সাথেও যুক্ত হননি।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সুত্র মারফতে জানা গেছে, বিগত মাফিয়া সরকারের মদদপুষ্ট সুবিধাভোগী ও দুর্নীতিবাজ আমলা, মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কিছু সামরিক কর্মকর্তা, যাদের একটি বড় অংশ এখনো দেশে সক্রিয় রয়েছে, তাদের উস্কানি ও অর্থ সহায়তায় কিছু সংখ্যক আনসার সদস্য আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি করে সরকারকে চাপে ফেলতে চাচ্ছে। দেশি ও বিদেশী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। গোপালগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তারা বিশৃংখলা সৃষ্টির মাধ্যমে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার এবং আমাদের প্রাণের প্রিয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করানোর অপপ্রচেষ্টায় লিপ্ত আছে। আনসার আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর এরা পল্লী বিদ্যুৎ সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতি শুরু করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার প্রয়াস চালাতে পারে বলেও সুত্রটি দাবি করেছে।
ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে রোববার (২৫ আগস্ট) আনুমানিক ১০ হাজার আনসার সদস্য একত্রিত হয়ে বাংলাদেশ সচিবালয় ঘেরাও করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাতজন উপদেষ্টাসহ সচিবালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে। আনসার সদস্যদের শান্ত করার জন্য বিকালে আনসার ও ভিডিপি মহাপরিচালক সচিবালয়ে আগমন করেন এবং আনসার সদস্যদের সব দাবি মেনে নেন। এরপরও উত্তেজিত আনসার সদস্যরা সচিবালয় এলাকা ত্যাগ না করে আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালককে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং কিছু আনসার সদস্য সচিবালয়ের ৩ নম্বর গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মোতায়েনরত সেনাসদস্যরা ধৈর্যসহকারে আনসার সদস্যদের সঙ্গে এনগেজমেন্ট করা সত্ত্বেও উত্তেজিত আনসাররা নিবৃত্ত না হয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আকাশের দিকে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সচিবালয় এলাকায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে আনসারদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এরপর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ৭ উপদেষ্টা, ডিজি আনসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সচিবালয়ের সব কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর সহায়তায় সচিবালয় এলাকা নিরাপদে ত্যাগ করেন। মোতায়েনরত সেনাসদস্যরা সচিবালয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং পরবর্তীতে জীবন রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয় প্রাথর্নাকারী কিছুসংখ্যক আনসার সদস্যকে নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং তাদেরকে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
তাদের এই ষড়যন্ত্র এবং ফ্যাসিজম কায়েমের অপপ্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী আনসারদেরকে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় এনে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে।