বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ কারখানারগুলো মধ্যে পড়ে বলে জানিয়েছেন বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট। তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের সহযোগিতায় দেশটির তৈরি পোশাক শিল্পে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এর বড় অংশ এ দেশে থাকার কারণে সচক্ষে দেখার সুযোগ হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত বিদায় সংবর্ধনায় বার্নিকাট এসব কথা বলেন। বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ফারুক হাসান, সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছিরসহ সংগঠনটির নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের কারখানা সংস্কারের পর সবচেয়ে বড় বাধা শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ বিষয়ে কাজের অগ্রগতি শ্লথ হয়ে গেছে। ক্রেতারা পণ্য কেনার বিষয়ে শ্রম অধিকারের ইস্যুটি বেশি বিবেচনায় নিচ্ছে। এ জন্য শ্রম অধিকারের বিষয়টি বাস্তবায়নে দেরি করলে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হবে, বিদেশি ক্রেতাদের অন্যত্র ঝুঁকে পড়ার হুমকিও বাড়বে।
তিনি বলেন, ‘আমি আন্তর্জাতিক শ্রম আইনগুলো মেনে চলার বিষয়ে জোর দিচ্ছি। এটা শুধু সঠিক কাজই নয়, বুদ্ধিমানের কাজও বটে। দ্রুত সম্ভব এই বিষয়ে আইনগত পরিবর্তন আনুন। বিষয়টি দীর্ঘায়িত করলে কোনো লাভ হবে না। আইনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পাশাপাশি কার্যকর করলে বিদেশের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা বাড়বে। এটি বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের অংশ বিস্তৃত করতেও সহায়ক হবে।
সদ্য বিদায়ী এ রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সংস্কারে বিশাল বিনিয়োগ হয়েছে। এই বিনিয়োগে সুফল আপনারা পাবেন, যদি আত্মতৃপ্তিতে না ভোগেন। কারণ, সামনের দিনে আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় কারখানাগুলোর সংস্কারকাজ শেষ করা ও সংস্কারে অর্জিত অগ্রগতি বজায় রাখা।
এদিকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল রাখার আহ্বান জানান বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। লিখিত বক্তব্যে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া পর্যন্ত মার্শা বার্নিকাট সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলেও প্রত্যাশা করি।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, মার্শা বার্নিকাট বাংলাদেশের পোশাক খাতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু। ২০১৪ সালের শেষার্ধে তিনি এমন সময় এসেছিলেন যখন রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর শিল্পটি হুমকির মুখে পড়ে। পোশাকশিল্পের সেই সংগ্রামমুখর সময়ে তিনি শিল্পের রূপান্তর প্রক্রিয়ায় আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। তিনি পোশাকশিল্পে আমাদের পরমজন-পরম আত্মীয়।