1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

হেফাজতের কর্তৃত্ব যাচ্ছে দেওবন্দের কাফের ঘোষিত জামায়াতের কব্জায় !

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

হাটহাজারী মাদ্রাসায়ও নজর
জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিল ওলামায়ে দেওবন্দ। দেওবন্দের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে আল্লামা আহমদ শফী ও আজিজুল হক সহ দেশের ৬৬০ জন আলেমের ফতোয়ায় মওদুদী কাফের এবং কেউ জেনেবুঝে জামাত করলে তার সঙ্গে আত্মীয়তাও নাজায়েজ। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের আমির আহমেদ শফীর মৃত্যুর পরপরই এ সংগঠনটি সেই জামায়াতের কব্জায় যাওয়ার গুঞ্জন ও আলামত রয়েছে।
হেফাজতের শীর্ষ পদে কে আসছেন- তা নিয়ে দেশজুড়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের অভ্যন্তরে এবং দেশের কওমি মাদ্রাসার অন্যতম প্রধান ঘাঁটি চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব-বিরোধের মধ্যেই আহমেদ শফীর মৃত্যুর ঘটনায় এখন সংশ্লিষ্ট সবার মুখেই এক প্রশ্ন- কার দখলে যাচ্ছে হেফাজতের আমিরের পদটি?
মূলত আল্লামা শফীকে সামনে রেখেই হেফাজতে ইসলামী তার শাখা-প্রশাখা বিস্তার করেছিল চট্টগ্রামসহ সারাদেশে। কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক আলেমদের মধ্যে তার যে ব্যাপক প্রভাব ছিল, অন্য কেউ সেটা বজায় রাখতে পারবেন কিনা তা নিয়েও নানা প্রশ্ন রয়েছে। এদিকে জামায়াত-শিবিরের কাঁধে হেফাজতের সর্বোচ্চ নেতা শফীর লাশ বহনে সংগঠনটির গন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তার শেষযাত্রার প্রেক্ষাপটে এত দিনের পুরনো অভিযোগ আবার সামনে চলে এসেছে। অন্যদিকে শফী হুজুরের জীবদ্দশাতেই হেফাজতের মধ্যে নানা রকমের ভাঙন দেখা দিয়েছিল। এখন তার মৃত্যুর পর আদৌ সংগঠন হিসেবে হেফাজতে ইসলাম কতটুকু টিকে থাকবে সে প্রশ্নটিও সামনে চলে এসেছে। হাটহাজারী মাদ্রাসার নেতৃত্ব ও হেফাজতে ইসলামীর নেতৃত্বের কোন্দলে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে।
হেফাজত এখন কি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে : সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাদ্রাসায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির নেপথ্যে ইন্ধন জোগায় স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামের নেতারা। হাটহাজারী মাদ্রাসার নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে জামায়াতের নেপথ্য ভূমিকা ক্রমেই প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ইতোমধ্যেই তা ছড়িয়ে পড়েছে। আহমেদ শফীর জানাজা এবং দাফন কার্যক্রমে অংশ নেন জামায়াত ইসলামের বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম, জামায়াতের সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীসহ জামায়াত-শিবিরের বেশকজন প্রভাবশালী শীর্ষ নেতা ও সাবেক এমপি। এমনকি আহমেদ শফীর মরদেহবাহী খাটিয়া কাঁধে নিতেও দেখা যায় জামায়াতের সেক্রেটারিকে। জানাজার আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়, জামায়াত-শিবিরের একাধিক নেতাকর্মীকে।
ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, সাধারণত পরিবারের সদস্য কিংবা কাছের আত্মীয়রাই খাটিয়া বহন করেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, হাটহাজারী মাদ্রাসা ও হেফাজত ইসলাম এখন কি জামায়াতের নিয়ন্ত্রণে? সংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, সেখানে স্বাধীনতাবিরোধী বিতর্কিত দল জামায়াত নেতাদের উপস্থিতির মূল উদ্দেশ্য; নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করা। এছাড়া জামায়াত ঘরানার নেতা হিসেবে পরিচিত জুনায়েদ বাবুনগরীকে অভয় দেয়া এবং প্রত্যক্ষভাবে সহযোগিতা করাও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতির আরেকটি কারণ হতে পারে।
আমিরের পদ বাবুনগরীর দখলে :
হেফাজতের নেতাকর্মী ও কওমি মতাদর্শীদের একটি বড় অংশের ধারণা, হেফাজতের নেতৃত্ব নিয়ে আমির আহমেদ শফীর সঙ্গে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর দ্বদ্বের জেরেই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতে একচেটিয়া জয় এসেছে জামায়াত ঘরনার নেতা বাবুনগরীর ঘরে। মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকের পদ থেকে বাদ পড়া বাবুনগরীর এবার পরিচালক পদে নিযুক্ত হয়েছেন। তাই হেফাজতের শীর্ষ পদটি এবং মাদ্রাসার মহাপরিচালকের পদটি হয়তো জুনায়েদ বাবুনগরীর দখলেই যাচ্ছে- এমন ধারণা অনেকের। হেফাজতের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, হেফাজতে ইসলামের মূল নিয়ন্ত্রক হিসেবে দেখা যাবে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীকে। আমির পদেও আসতে পারেন বাবুনগরী অথবা তার কোনো অনুসারী। তবে আহমেদ শফীর অনুসারী ও তার ছেলে আনাস মাদানী গ্রুপের ভূমিকাও থাকবে সংগঠনে।
কওমি মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর ইন্ধনে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে শূরা কমিটির বৈঠকে শফী গ্রুপের পরাজয় হয়। তার ছেলে আনাস মাদানীকেও হাটহাজারীর ওই মাদ্রাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়। মাদ্রাসার পদ থেকে আগে বাদ পড়া জুনায়েদ বাবুনগরী আবারো পরিচালক পদে আসীন হন। তাই মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদের দৌড়ে তিনিও এগিয়ে রয়েছেন।
এছাড়া হেফাজতের আমির হিসেবে সিনিয়র নায়েবে আমির মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর নামও শোনা যাচ্ছে। নাজিরহাট মাদ্রাসায় মুহতামিম নিয়োগ নিয়ে মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সঙ্গে প্রকাশ্য বিরোধ দেখা দেয় সদ্য প্রয়াত আহমেদ শফী ও তার অনুসারীদের। এছাড়াও মহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সম্পর্কে জুনায়েদ বাবুনগরীর মামা। যার কারণে জুনায়েদ বাবুনগরীর পছন্দের তালিকায়ও থাকবেন তিনি- এমনটা ধারণা সবার। অন্যদিকে হাটহাজারী মাদ্রাসার পরবর্তী মহাপরিচালক হওয়ার দৌড়ে আছেন শফীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত বর্তমান সহযোগী পরিচালক শেখ আহমদ। তিন মাস আগে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে হাটহাজারী মাদ্রাসার শূরা কমিটি সহযোগী পরিচালকের পদ থেকে জুনায়েদ বাবুনগরীকে অব্যাহতি দিয়ে শেখ আহমদকে ওই পদে বসায়। তাই ধারণা করা হচ্ছে, আহমেদ শফীর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে থাকবেন শেখ আহমদও। তবে শূরা কমিটি চাইলেই নতুন কাউকে মহাপরিচালক নির্বাচিত করতে পারেন।
মাদ্রাসার শূরা কমিটি পুনর্গঠন :
মাদ্রাসা সূত্র জানায়, হাটহাজারী মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম মজলিশে শূরা কমিটির ১৭ সদস্যের মধ্যে আহমেদ শফীসহ ৭ জন মারা গেছেন। শনিবার রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার মজলিশে শূরা কমিটির বৈঠকে হয়। ওই বৈঠকে পরবর্তী মহাপরিচালক নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত মাদ্রাসা পরিচালনায় ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এরা হলেন- সহযোগী পরিচালক মাওলানা শেখ আহমদ, মুফতি আবদুস সালাম এবং মাওলানা ইয়াহিয়া। মাদ্রাসার নতুন শিক্ষা সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে জুনায়েদ বাবুনগরীকে। মৃত শূরা সদস্যদের স্থলে নতুন করে যুক্ত হওয়া সদস্যরা হলেন- মাওলানা আবদুল মালেক, মাওলানা ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আবদুল্লাহ, মাওলানা আহমেদ শফী এবং মাওলানা হাফেজ সায়েদ হোসেন। এছাড়া ওই বৈঠকে ছাত্র আন্দোলনের ঘটনা তদন্তে ৪ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ