1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বাংলাদেশী টাকার মান এখন পাকিস্তানি রুপির দ্বিগুণ

অশোক আখন্দ : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১

উন্নয়নে পাকিস্তানকে বাংলাদেশের ছাড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি এখন আর নতুন কোনো তথ্য নয়। বছর বছর ‍দুই দেশের মধ্যে নানা সূচকে বাড়ছে ব্যবধান। আর এর প্রভাব পড়েছে দুই দেশের মুদ্রার মানেও।

গত কয়েক দিনে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের বিপরীতে টাকার মান খানিকটা কমলেও বাংলাদেশি মুদ্রার মান পাকিস্তানের মুদ্রা রুপির দ্বিগুণ।

আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারের জন্য ৮৫ টাকা ২০ পয়সা গুনতে হয়েছে। আর প্রতি ডলারের জন্য খরচ করতে হচ্ছে ১৬৬ দশমিক ৭৭ পাকিস্তানি রুপি।

এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ১০০ টাকার জন্য এখন ১৯৫ পাকিস্তানি রুপি খরচ হচ্ছে। অথচ স্বাধীনতার পরপর চিত্রটা ছিল উল্টো। তখন পাকিস্তানের ১০০ রুপির মান ছিল বাংলাদেশের ১৬৫ টাকা।

২০১৫ সালের মে মাসে প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা বিভাগ ও মুদ্রানীতি বিভাগের যৌথ এক গবেষণাপত্রে বলা হয়, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি প্রথম মুদ্রা বিনিময় হার নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে সময় যুক্তরাজ্যের এক পাউন্ড স্টার্লিংয়ে পাওয়া যেত বাংলাদেশি ১৮ দশমিক ৯৬ টাকা।

তখন পাউন্ডের বিপরীতে পাকিস্তানের মুদ্রার মান ছিল ১১ দশমিক ৪৩ রুপি। সেই হিসাবে তখন এক পাকিস্তানি রুপির বিপরীতে বাংলাদেশকে খরচ করতে হতো ১ দশমিক ৬৫ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আশরাফ আলী মুদ্রা বিনিময় হার নিয়ে কাজ করতেন। ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ’ শিরোনামে একটি বইও লিখেছেন তিনি।

সেই বইতে তিনি লিখেন, ‘ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হার নির্ধারণ হয় আশির দশকের শুরুর দিকে। তবে ১৯৭২ সালেও আমরা ডলারের সঙ্গে টাকার একটি বিনিময় হার বের করেছিলাম। তখন এক ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশের ৭ দশমিক ৮৬ টাকা এবং পাকিস্তানের ৪ দশমিক ৭৬ রুপি ছিল।’

তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির দীর্ঘকাল পরও পাকিস্তানের মুদ্রা বেশ শক্তিশালী ছিল। তবে সেই অবস্থানে এখন আর নেই দেশটি। বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ঘাটতি, বৈদেশিক ঋণ ও মূল্যস্ফীতির চাপে রুপির অবস্থান এখন বেশ নাজুক। টাকা এখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী মুদ্রায় পরিণত হয়েছে।

সৈয়দ আশরাফ আলী বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হলেও বাংলাদেশে নিজস্ব মুদ্রার প্রচলন শুরু ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ। এর আগে পাকিস্তানের রুপি দিয়েই হতো লেনদেন। তবে বৈদেশিক লেনদেনের জন্য বিনিময় হার নির্ধারণ করতে হয়েছিল টাকা প্রচলনের আগেই।

বর্তমানে এক ডলার কিনতে পাকিস্তানি মুদ্রায় খরচ হয় ১৬৬ দশমিক ৭৭ রুপি। সেখানে বাংলাদেশের খরচ হয় ৮৫ টাকা ২০ পয়সা।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জার্নালে বলা হয়, দীর্ঘদিন সামরিক শাসনে থাকার কারণে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পুনর্গঠন বাধাগ্রস্ত হয়। আর অর্থনীতি দুর্বল অবস্থানে যাওয়ার ফলে একের পর এক দেশটির মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটতে থাকে।

২০০৮ সালকে ধরা হয় পাকিস্তানের রুপির বিনিময় হারের পতনের বছর। ওই বছর মূল্যস্ফীতি ও চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বিপরীতে রুপির দর ৬১ থেকে এক ধাক্কায় ৭৯ রুপিতে পৌঁছায়।

ওই বছরের আগস্টে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে রুপির পতনের সাময়িক অবসান ঘটে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দিক দিয়েও বাংলাদেশ এগিয়ে। পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) গত জুলাই মাসে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ছিল ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ।

পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাংলাদেশের রিজার্ভের অর্ধেকের কম।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ ছিল ৪৮ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে পাকিস্তানের রিজার্ভ ছিল ২২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার।

অর্থনীতির আরেক গুরুত্বপূর্ণ সূচক মাথাপিছু আয়েও পাকিস্তানের দ্বিগুণ বাংলাদেশ। পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ১৬৮ ডলার। আর বাংলাদেশের ২ হাজার ২৭৭ ডলার।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ