1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

আজ ঐতিহাসিক শিক্ষা দিবস

হামজা রহমান অন্তর : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শুক্রবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আজ ঐতিহাসিক শিক্ষা দিবস। ১৯৬২ সালে স্বৈরাচারী আইয়ুব শাহীর ধর্মান্ধ, ধনবাদী, রক্ষণশীল, সাম্রাজ্যবাদী শিক্ষাসংকোচন নীতির বিরুদ্ধে সারাদেশব্যপী ছাত্ররা তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে যার অগ্রভাগে ছিল ‘ছাত্রলীগ’।
মহান শিক্ষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘শরীফ শিক্ষাকমিশন’ নামে আইয়ুব শাহীর এই বুর্জোয়াসুলভ শিক্ষানীতি বাতিলের দাবীতে ছাত্রলীগের ওয়ারেশ ইমাম এবং ছাত্রইউনিয়নের কাজী ফারুক এর নেতৃত্বে ১৭ সেপ্টেম্বর সারা দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতাল পালন করার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদ। উর্দীধারী স্বৈরশাসক আইয়ুব খান আন্দোলন মোকাবেলায় রাস্তায় সেনাবাহিনীর ভারি ফিল্ড কামানসহ আর্টিলারি ইউনিট মোতায়েন করে। সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশে উপস্থিত হয়, সমাবেশ শেষে মিছিল বের হয়ে যায়। ছাত্রদের সাথে সাধারণ মানুষও পিকেটিংয়ে অংশগ্রহণ করে, জগন্নাথ কলেজে(বর্তমান জবি) গুলি হয়েছে এ খবর শুনে মিছিল দ্রুত নবাবপুরের দিকে ধাবিত হয়। হাইকোর্টে পুলিশের সাথে সংঘাতে না গিয়ে মিছিল আব্দুল গনি রোড ধরে যেতে থাকে। পুলিশ তখন পিছন থেকে মিছিলে লাঠি চার্জ, কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি চালায়। পুলিশের সাথে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ বাঁধে ঢাকা কোর্টের সামনে। এখানেও পুলিশ ও ইপিআর গুলি চালায়। এতে প্রচুর আহত হয়, শত শত ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। বাবুল, গোলাম মোস্তফা ও ওয়াজিউল্লাহ নামে ৩ জন ছাত্র শহীদ হন। ওই দিন শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে মিছিলের উপর পুলিশ হামলা চালায়। টঙ্গিতে ছাত্র-শ্রমিক মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে সুন্দর আলী নামে এক শ্রমিককে। সাধারণ ছাত্রজনতার সর্বাত্মক আন্দোলনের মুখে পরবর্তীতে কমিশনটি বাস্তবায়ন হয়নি।
কি ছিল শরীফ শিক্ষা কমিশনেঃ-
এই কমিশনে স্পষ্টভাবে উচ্চশিক্ষা ধনিকশ্রেণীর জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্বশাসনের পরিবর্তে পূর্ণ সরকারী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ছাত্র-শিক্ষকদের কার্যকলাপের উপর তীক্ষ্ম নজর রাখার প্রস্তাব করে। শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রম করানোর জন্য ১৫ ঘন্টা কাজের বিধান রাখা হয়েছিল। রিপোর্টের শেষ পর্যায় বর্ণমালা সংস্কার করা এবং বাংলা ও উর্দুর স্থলে রোমান বর্ণমালা প্রয়োগ এবং প্রতিষ্ঠার জন্য কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে এই কমিশন। আন্দোলনের দাবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল শিক্ষানীতিতে প্রস্তাবিত তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স এবং উচ্চ মাধ্যমিক ইংরেজির অতিরিক্ত বোঝা বাতিল করার বিষয়টি। এই দাবির সমর্থনে দেশের প্রায় অধিকাংশ স্কুল-কলেজের ছাত্ররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্লাস বর্জন করতে থাকে। আইয়ুব খান সরকারের শরীফ কমিশন রিপোর্টে শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে বণর্না করা হয়। বলা হয়, শিক্ষা সম্পর্কে জনসাধারণের চিরাচরিত ধারণা অবশ্যই বদলাতে হবে। সস্তায় শিক্ষা লাভ করা যায় বলে তাদের যে ভুল ধারণা রয়েছ, তা শীঘ্রই ত্যাগ করতে হবে। যেমন দাম তেমন জিনিস – এই অর্থনৈতিক সত্যকে অন্যান্য ব্যাপারে যেমন শিক্ষার ব্যাপারেও তেমনি এড়ানো দুষ্কর। ২৭ অধ্যায়যুক্ত এ রিপোর্টে শিক্ষার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক চেতনা, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী, পুজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষাই স্পষ্ট করে ফুটে উঠেছিল।
লেখকঃ- হামজা রহমান অন্তর, কলামিস্ট ও ছাত্রনেতা। 


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ