দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রো রেল ‘এমআরটি লাইন-১’ এর নির্মাণ তদারকি পরামর্শ সেবার জন্য পাতাল রেলের নির্মাণ সুপারভাইজার নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এজন্য একটি চুক্তিও সই হয়েছে। জাপানের আর্থিক সহায়তায় চলতি বছরেই এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
মঙ্গলবার জাইকা এক বিবৃতিতে জানায়, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৩ অক্টোবর ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এবং এই সংক্রান্ত কনসোর্টিয়ামের মধ্যে চুক্তি সই হয়।
জাপানি প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই, ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্টস গ্লোবাল, সিস্টারা, দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন, নিপ্পন কোই ইন্ডিয়া, কাঠারিয়া অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারস ইন্টারন্যাশনাল, নিপ্পন কোই বাংলাদেশ এবং ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্টস নিয়ে এই কনসোর্টিয়াম গঠিত হয়েছে।
হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে খিলক্ষেত-কুড়িল ও যমুনা ফিউচার পার্ক হয়ে বাড্ডা-রামপুরা-মালিবাগ হয়ে রাজারবাগ-কমলাপুর এবং কুড়িল থেকে কাঞ্চন সেতুর পশ্চিম পাশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে এই লাইন।
৩১.২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকার দেবে ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা আসবে সরকারি তহবিল থেকে।
প্রকল্পে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ২১ কিলোমিটার হবে পাতাল পথে এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল ডিপো পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ৩ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রানজিশন লাইনসহ ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এই মেট্রোরেলের ১২টি স্টেশন থাকবে মাটির নিচে এবং ৭টি থাকবে উড়াল সেতুর ওপর।
২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর প্রকল্পটি অনুমোদন করে সরকার। ২০২৬ সালে এটি চালুর প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ দৃশ্যমান হয়নি।
এ বিষয়ে জাইকার বাংলাদেশ প্রধান ইচিগুচি তোমোহাইড বলেন, ‘জাইকার সহায়তায় এ বছরই দেশের প্রথম পাতাল রেলের কাজ শুরু হবে। আর দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ এর (উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলা) প্রথম অংশ চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু হবে।’
‘আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এমআরটি নেটওয়ার্ক একটি দক্ষ, আরামদায়ক, নিরাপদ এবং সময়োপযোগী পরিবহন ব্যবস্থায় রূপ নেবে। যা ঢাকার সাধারণ মানুষের জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।’
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন রওশন আরা মান্নান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম.এ.এন. সিদ্দিক ও ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি উপস্থিত ছিলেন।