বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১৫ নভেম্বর জাতিসংঘকে এই সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে বাংলাদেশ।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় এ সম্পর্কিত জাতিসংঘ সংস্থা দ্য কমিটি ফর ডেভলেপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) প্ল্যানারি সেশনে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্য বলে সুপারিশ করবে সিডিপি। এরপর তিন বছরের ট্রানজিশন পিরিয়ড শেষে ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাবে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ চায় কি না, তা ১৫ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে সরকারকে চিঠি দিয়েছে সিডিপি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠানো হলে তিনি গ্রাজুয়েশন প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এ নিয়ে গ্রাজুয়েশনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ইআরডির ‘সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্রাজুয়েশন’ প্রকল্পের প্রজেক্ট ইমপ্লিমিন্টেশন কমিটির (পিআইসি) সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে ওই সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
আগামী ১৫ নভেম্বর ইউনাইটেড ন্যাশনস ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কাউন্সিলের (ইকোসক) সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিডিপির সঙ্গে অনুষ্ঠেয় ভার্চুয়াল বৈঠকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের বিষয়টি উপস্থাপন করবে বাংলাদেশ।
উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় তিন বছরের ব্যবধানে জাতিসংঘের দুটি মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হতে হয় স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে। এই মূল্যায়নে তিনটি সূচক বিশ্লেষণ করা হয়। এর মধ্যে দুটি সূচকে ভালো করলেই স্বল্পোন্নত কোনো দেশ উন্নয়শীল দেশে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
সূচক তিনটি হচ্ছে- মাথাপিছু জাতীয় আয়, হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্স এবং ইকোনোমিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ভালনারেবিলিটি। ২০১৮ সালের প্রথম মূল্যায়নে বাংলাদেশ তিনটি সূচকেই সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়।
দ্বিতীয় মূল্যায়নটি হবে- আগামী ফেব্রুয়ারিতে, সিডিপির প্ল্যানারি সভায়। ১৫ নভেম্বরের প্ল্যানারি সভার পর আগামী বছরের ৮-১৫ জানুয়ারি সময়কালে হবে সিডিপির এক্সপার্ট গ্রুপের সভা। সিডিপি মনোনীত ২৮ জন বিশেষজ্ঞ এ সভায় বাংলাদেশের অবস্থান পর্যালোচনা করবেন। তাতে উত্তীর্ণ হলেই সিডিপি গ্রাজুয়েশনের জন্য ইকোসকে বাংলাদেশের নাম সুপারিশ করবে।