1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

জ্বালানি খাতে অনেক ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারের: শেখ হাসিনা

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১

বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি ও ভর্তুকির কারণে দেশের বাজারেও পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিদেশ থেকে ডিজেল কিনে আনতে হয়। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে বলেই দেশেও দাম বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু তার পরও অনেক খাতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ, সারসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সরকারকে বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। কেবল জ্বালানি তেলেই ২৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। আমরা কত টাকা ভর্তুকি দেব? বাজেটের সব টাকা তাহলে ভর্তুকিতে দিয়ে দেব। তাহলে কিন্তু সব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে।

বাস ভাড়া বৃদ্ধি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাভাবিকভাবে যখন তেলের দাম বেড়েছে, তারাও একটু সুযোগ নিয়েছে দাম বাড়ানোর। সেই দাম বাড়ানো নিয়ে তাদের যে দাবি ছিল, আমি কিন্তু বিদেশে ছিলাম ঠিক, দেশ থেকে দূরে ছিলাম তা কিন্তু না। এখন ডিজিটাল যুগ, কাজেই আমার সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ ছিল, আলোচনা হয়েছে। তারপর তাদের সঙ্গে অনেক বৈঠক করে, আলোচনা করে একটা সমঝোতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাসের ভাড়া একটা যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, জনগণের প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে আমরা সবসময় সচেতন। করোনার মধ্যে এমন কোনো শ্রেণী-পেশার মানুষ নেই, যাদের আমরা নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করিনি। একবার না, বারবার দিয়েছি। মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, খাবারের যাতে কষ্ট না হয়, সেদিকে আমাদের নজর আছে। আমরা বিনা পয়সায় খাদ্য দিচ্ছি, বিনা পয়সায় মানুষকে সাহায্য করে যাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে কর না দেয়া ও কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার দিকেই সবার নজর। তাহলে টাকাটা আসবে কোথা থেকে? তাহলে কি দেউলিয়া হয়ে যেতে হবে? গ্যাসের সংকট মেটাতে সরকার এলএনজি আমদানি করছে এবং সেখানেও বড় অংকের ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সহিংস ঘটনা প্রসঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনী সহিংসতা অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে এটা ঠিক, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা আগেও হয়েছে। এখনো হোক সেটা চাই না। একটা হানাহানি, ভোট দিতে গিয়ে মানুষের প্রাণ যাবে—এটা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়।

দলীয়ভাবে নির্বাচন না করলেও বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের নেতারা অনেক জায়গায় স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তৃণমূলে দেখা যায় অনেকের আকাঙ্ক্ষা থাকে। তাদের মধ্য থেকে একজনকে নমিনেশন দেয়া হয়। নির্বাচন তো সবাই করছে, আমরা যেমন আওয়ামী লীগের নামে করছি, বিএনপি নাম ছাড়া করছে, অন্যান্য দলও করছে। এই যে হানাহানি, মারামারি কোথায় কোথায়, কাদের মধ্যে হচ্ছে সেটা আপনারা দেখেন। আমাদের দলের মধ্যে যেগুলো হবে, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি তাদের বাইরে গিয়ে যারা নির্বাচন করেছে, আমরা কিন্তু যথাযথ ব্যবস্থা নেব। যতই ভালো প্রার্থী হোক, যারাই দলের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে, আমরা কিন্তু ছাড়ব না।

তিনি বলেন, কিন্তু এদের বাইরে যারা নির্বাচনে হানাহানি করল, এখন তো তারা দলীয়ভাবে নির্বাচনে আসছে না। নির্বাচনও করছে মারামারিও করছে। উসকেও দিচ্ছে, আবার বিজয়ীকে সমর্থন দিয়ে আরেকটা মারামারি বাধিয়ে দিচ্ছে।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে সামরিক ক্যুসহ বিভিন্নভাবে ঘটানো হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদেরও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া উচিত। অন্তত ফাঁসি কাদের দেয়া হলো, যেগুলো জেলখানায় হয়েছে সেগুলোর হয়তো তথ্য পাওয়া যাবে। কিন্তু ফায়ারিং স্কোয়াডে যাদের মারা হয়েছে কোট মার্শাল করে, তাদের সবার তথ্য পাওয়া কিন্তু মুশকিল। জানি না পাওয়া যাবে কিনা। তবে আমরা খোঁজ নেব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯টি ক্যু হয়। আর প্রতিটি ক্যুর পর সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসার, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল জিয়াউর রহমান সরাসরি নিজে। জিয়ার আমলে কত মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, তা এখনো অজানা।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে আমার অথরিটিতে বাসায় থাকতে দিয়েছি। বাকিটা আইনের ব্যাপার। অমানবিক একজনকে আমি মানবতা দেখিয়ে বাসায় থাকতে দিয়েছি। আমার কাছে আর কত চান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় এ প্রশ্ন করার জন্য আপনাদের লজ্জা হওয়া দরকার। যারা আমার বাবা-মা, ভাই, আমার ছোট রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করিয়েছে। তার পরও আমরা অমানুষ না। অমানুষ না দেখেই তাকে (খালেদা জিয়া) তার বাসায় থাকার ব্যবস্থাটুকু আমার এক্সিকিউটিভ অথরিটিতে, আমার হাতে যতটুকু আছে, সেটুকু দিয়ে তার বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, গ্রেনেড হামলার পর আমাদের এতজন আহত। ২২ জন মারা গেছে। একদিনও পার্লামেন্টে সেটার ওপর আলোচনা করতে দেয়নি। যে এত বড় অমানবিক, তাকেও আমরা মানবতা দেখিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক জলবায়ু সম্মেলন ও ফ্রান্স সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্বের সরকারপ্রধানদের উপস্থিতিতে বাংলাদেশের দাবি-দাওয়া তুলে ধরে বক্তব্য দিয়েছি। সিভিএফ সভাপতি হিসেবে একটি ক্লাইমেট ইমার্জেন্সি প্যাক্ট গঠনের প্রয়াসের কথাও জানিয়েছি।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ