পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের গত দুই ম্যাচে খেলার ফলাফল ছাপিয়ে আলোচনায় ছিল মিরপুর শেরে বাংলার গ্যালারিতে পাকিস্তানের পতাকার ওড়াওড়ি। গুটিকয়েক পাকিস্তানি নাগরিকের পাশাপাশি অনেক বাংলাদেশি নাগরিকও পাকিস্তানের পতাকা হাতে উল্লাস করেছে। যা নিয়ে গত কয়েকদিন মিডিয়া আর সোশ্যাল সাইট তোলপাড় হয়।
তবে সোমবার (২২ নভেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে স্বচক্ষে গ্যালারির দিকে তাকিয়ে পাকিস্তানের পতাকা তেমনা দেখা যায়নি। দুই-একজন পাকিস্তানের জার্সি পরিহিত, তবে তারা পাকিস্তানের নাগরিক বলেই নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। এছাড়া বিছিন্ন কয়েকটি দৃশ্য রয়েছে। কিন্তু গত দুই ম্যাচের মতো পাকিস্তানের বড় পতাকা বা অনেক পতাকা দেখা যায়নি।
‘পাকিস্তানি দালাল রুখবে তারুণ্য’ ব্যানারে অবস্থান নেওয়া ওই সংগঠনের আহবায়ক হামজা রহমান অন্তর বলেন, ‘৩০ লাখ শহীদ ও ২ লক্ষাধিক মা-বোনের আর্তনাদের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতার শত্রু যারা আজও রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চায়নি, ক্ষতিপূরণ দেয়নি। যারা আজেও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে, তাদের হয়ে এদেশীয় দালাল গোষ্ঠীকে ৭১ এর মতোই প্রতিহত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা।’
সকালেই অন্তর ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার সমর্থকদেরকে সতর্ক করেন। তাদের এই উদ্যোগের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে, সেদিনে দৃষ্টি রাখতে বলেন তিনি। কোনো ধরনের আক্রমণাত্মক মনোভাব না দেখাতে তাদের সংগঠনের কর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেন।
অন্তর বলেন, ‘আমরা এখানে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে এসেছি, কোনো বিশৃঙ্খলা করতে আসিনি। আর পাকিস্তানি নাগরিকদের নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই আমরা তাদের কোনো বাধা দেব না।’
বেলা একটার দিকে বাংলাদেশি দর্শকদের সাথে নিয়ে এই প্রতিবাদী যুবকরা কিছু ‘পাকিস্তানি সমর্থক’ বাংলাদেশিদের গা থেকে পাকিস্তানের জার্সি খুলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। আরেকজনকে দিয়ে বলায় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। এসময় ‘নিয়াজির পুত্ররা হুঁশিয়ার সাবধান, পাকিস্তানের দালালেরা হুঁধিয়ার সাবধান ও জয় বাংলা’ স্লোগানে স্টেডিয়াম এলাকা প্রকম্পিত রাখেন তারা।
একই প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে ম্যাচ চলাকালীন গ্যালারিতেও। সেখানেও কয়েকজন বাংলাদেশির গা থেকে পাকিস্তানের জার্সি খুলে নেয় এই প্রতিবাদী যুবকরা। এ নিয়ে সারাদেশব্যপী প্রশংসায় ভাসছেন সংগঠনের আহবায়ক হামজা রহমান অন্তর, সদস্য সচিব শামীম রুদ্রসহ উপস্থিত বাংলাদেশি দর্শকরা।