1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

তারেকের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২২

সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্যের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছে বিএনপি। চলছে দফায় দফায় বৈঠক। তবুও চূড়ান্ত হয়নি রূপরেখা। ধীরগতির ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তিও তৈরি হয়নি। এরই মধ্যে বিএনপি জাতীয় সরকারের ইস্যু তোলায় বেজাড় হয়েছে সমমনা বিরোধী দলগুলো। বিএনপির ওপর এখনও শতভাগ আস্থা রাখতে পারছেন না দলের নেতারা। এমনকি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন আছে তাদের। বিপরীতে বিএনপির মধ্যম সারি ও তৃণমূল নেতারা বলছেন, যারা তারেক রহমানের নেতৃত্ব মানবে না তাদের সঙ্গে ঐক্য করা ঠিক হবে না। গেল নির্বাচনে তার খেসারত দিতে হয়েছে।
এবার বৃহত্তর ঐক্য গঠনের আগে বিএনপি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। দলের হাইকমান্ড তাদের মতামত শুনেছে। বেশিরভাগের বক্তব্য ছিল- ঐক্যে এবার বুঝেশুনে পা বাড়াতে হবে। নিজেদের ওপর ভরসা রেখে সমমনাদের কৌশলে হাতে রাখার পরিকল্পনা করতে হবে। শুধু তাই নয়, বিতর্কিত শরিক দল জামায়াতে ইসলামীকে নিয়েও ক্ষোভ ঝেরেছেন নেতারা। রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করারও পরামর্শ দেন। আন্দোলন ও নির্বাচন সামনে রেখে এসব ইস্যুর সমাধানকে বড়  চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে বিএনপি।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্টের ড. কামাল হোসেনকে প্রধান নেতা বানিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় বিএনপি। এর ফল মোটেও সুখকর হয়নি বিএনপির জন্য। সম্প্রতি প্রকাশ্যেই দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ড. কামালকে ইমাম বানিয়ে ভুল করেছিল বিএনপি। এই ভুল আর করবে না দলটি।
ঐক্য গড়ার মাঝপথে এসে বড় বাগড়া দিয়েছে জাতীয় সরকার। বিএনপির তরফ থেকে হঠাৎ জাতীয় সরকার নিয়ে গণমাধ্যমে প্রস্তাব তুলে ধরায় নাখোশ হয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। নির্বাচনে জিতে সরকার গঠনের পর আন্দোলনে থাকা সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার করতে চায় বিএনপি। তবে তাদের এ চাওয়ায় একমত নন ঐক্য প্রক্রিয়ার শরিকরা। তারা মনে করছেন, এটি বিএনপির রাজনীতির টোপ ছাড়া কিছু নয়। জাতীয় সরকার নিয়ে আরও আলাপ-আলোচনা হতে পারত। কিন্তু হুট করে তা নিয়ে গণমাধ্যমে একটি শর্ত দিয়ে দেওয়া মানে অশুভ লক্ষণ। বিষয়টি লোভাতুর রাজনীতির পরিচায়ক।
এমনকি ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে হবে জাতীয় সরকার’ সম্প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে এমন ঘোষণায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন মঞ্চের নেতারা। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা শুধুই সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন করছি না; আমরা ঐক্য চাই। কিন্তু সেই ঐক্য যেনতেন হবে না। এখন দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক লোভ হলো সরকার গঠন করা। বিদেশে বসে নেতৃত্ব ঠিক করা যাবে না। অনেকটা বিরক্ত হয়েছেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নাও। তিনি বলেন, ‘দেশে বসেই ১৪ বছর ধরে পারা যাচ্ছে না, বিদেশে বসে কী আর করা সম্ভব? মুখে বলেই কি সব হয়ে যায় নাকি?’ মান্না বলেন, ‘জাতীয় সরকারের এই বিতর্ক ঐক্যে বিঘ্ন ঘটাবে। বিএনপি আরও আলাপ-আলোচনা করতে পারত। কিন্তু তারা তা করেনি, করতে চায়ওনি। নির্বাচনের পর জাতীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়ে বিএনপি কী ভাবছে, তারা ক্ষমতায় গেলে মন্ত্রী হওয়ার জন্য লাইন ধরবে?’
সূত্র বলছে, এসব বিষয় দ্রুত সমাধান করতে হবে। এগুলো বিএনপির বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে এবং তা গণমাধ্যমে না আসার আগেই করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের পদত্যাগ ও চলমান আন্দোলন সফল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ নির্বাচনের দাবি আদায় করা। এ পর্যন্ত বিভাগীয় আন্দোলন কর্মসূচি করতে গিয়ে বহু মামলার শিকার হচ্ছেন নেতাকর্মীরা। এগুলো মোকাবিলা করে মাঠে কর্মীদের উজ্জীবিত রাখা। তাদের সরকারের ষড়যন্ত্রের ফাঁদ থেকে দূরে রাখা।
দলে বড় বিভেদ দূর করে মাঠে ঐক্যবদ্ধ করাও দলটির চ্যালেঞ্জ বলে শিকার করছেন নেতারা। দুদিন আগে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আক্ষেপ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খুব কষ্ট হয় একদিকে ছাত্রদল নেতা নয়নের মৃতদেহ পড়ে আছে মর্গের মধ্যে, আর আপনারা কমিটির জন্য এখানে হামলা করেন। দিস ইজ টু মাচ। এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। কারা তারা? আমি অনুরোধ করব, তাদের নাম-ঠিকানা বের করে অবিলম্বে দল থেকে বহিষ্কার করার ব্যবস্থা নিতে।’ কোন্দল ভুলে এক হতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
রোববার নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা ভোলার চরফ্যাশনের কমিটি নিয়ে দুপক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। পরে নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ বিষয়ে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘শতভাগ ঐক্য হয়তো হবে না। তবে যতদূর সম্ভব বিভেদ মিটিয়ে মাঠে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান।’ এ ছাড়া বর্তমান সরকারকে হটানোই বিএনপির মূল চ্যালেঞ্জ বলছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের মূল দাবি-সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বাতিল। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এবং তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে মুক্তভাবে রাজনীতি করতে দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা।’
আর রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদের মতে, নেতাকর্মীরা মাঠে আসছে-এটা বিএনপির জন্য বড় স্বস্তির বিষয়, তবে জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজপথে নামানো তাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। জনগণকে আকৃষ্ট করার মতো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচি পরিবর্তনসহ নানা ইতিবাচক দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক সমর্থন করাও বড় কাজ হবে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ