1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরে রাঙামাটির পর্যটনশিল্পে নতুন বাঁক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২২

তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরে বদলে যাচ্ছে রাঙামাটির পর্যটনশিল্প। লেক বেষ্টিত ছোট ছোট পাহাড়ে তৈরি করা হচ্ছে বিলাসবহুল রিসোর্ট। যেখান থেকে উপভোগ করা যায় হ্রদ-পাহাড়ের প্রেম। ফলে এসব রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

পর্যটকদের এমন দৃশ্য উপভোগ করাতে ‘নীলাঞ্জনা বোট ক্লাব’ এবার চালু করেছে নীলাঞ্জনা রিসোর্ট ব্যবসা। আর এভাবে তরুণরা এগিয়ে এলে দ্রুতই বদলে যাবে রাঙামাটির পর্যটনশিল্প, বলছেন জনপ্রতিনিধিরা।

ওপর থেকে দেখলে চোখে পড়বে বিস্তৃত কাপ্তাই লেকের পাশে সবুজে ঘেরা নির্জন পাহাড়ের কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে দুটি কটেজ ও একটি রেস্তোরাঁ। এই কটেজগুলো নির্মাণে রয়েছে স্থানীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া। পাহাড় না কেটে জুম ঘরের আদলে তৈরি করা হয়েছে কটেজগুলো। ব্যবহার করা হয়েছে স্থানীয় উপকরণ বাঁশ ও কাঠ। বাইরে বাঁশের বেড়া থাকলেও ভেতরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি কক্ষে রয়েছে একটি করে বেড, সোফা, চেয়ার ও টেবিল। আর কক্ষে বসেই উপভোগ করা যায় কাপ্তাই হ্রদের নয়নাভিরাম নীল জলরাশি।

এ ছাড়াও কক্ষগুলোতে রয়েছে বারান্দা ও ছোট্ট সুইমিং পুল। এককথায় পরিবেশবান্ধব এই কটেজে রয়েছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা, যা দেখে মুগ্ধতার কথা জানান স্থানীয় পর্যটকরা।

রিসোর্টে ঘুরতে আসা তৃষা দেওয়ান বলেন, ‘এই জায়গাটার ভিউ খুবই সুন্দর। কল্পনা করছি চাঁদনি রাতে কতটা উপভোগ্য হয়ে উঠবে। আমার কাছে মনে হচ্ছে ভরা পূর্ণিমায় এই কটেজগুলো স্বর্গের রূপ ধারণ করবে।’

ওয়াশনটন চাকমা বলেন, ‘এককথায় অসাধারণ। আমাদের রাঙামাটিতে এমন আরও অনেক জায়গা আছে। সেগুলোও এভাবে কাজে লাগাতে পারলে শুধু দেশি নয়, বিদেশি পর্যটকরাও এখানে ছুটে আসবেন। কারণ, হ্রদ-পাহাড় আর আকাশের এমন মিলন বিশ্বের খুব কম জায়গাতেই আছে। আমরা চাই এভাবেই বদলে যাক পাহাড়ি জেলা রাঙামাটি।’

নীলাঞ্জনা বোটক্লাবের স্বত্বাধিকারী দীপঞ্জন দেওয়ানের মা নীলাঞ্জনা দেওয়ান বলেন, “শিক্ষাজীবন শেষ করে ছেলে চাকরির পেছনে না ছুটে পর্যটন ব্যবসায় আসে। আমরা তখন হতাশ হয়েছিলাম। ছেলে বিদেশ থেকে পড়াশোনা শেষ করল। দেশে এসে চাকরি করবে এমনটাই ভাবনা ছিল। যখন ব্যবসার কথা বলেছিল, তখন ভয়ে ছিলাম ছেলে পারবে তো। দীপঞ্জন সবসময় একটা কথাই বলত: ‘আমি নিজেই প্রতিষ্ঠিত হতে চাই না। সঙ্গে অন্যের কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই।’ আজ ছেলে মোটামুটি একটি অবস্থানে এসেছে। পাশাপাশি বেশকিছু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছে। তার এমন কাজে মা হিসেবে আমি গর্ববোধ করছি।”

উদ্যোক্তা দিপাঞ্জন দেওয়ান বলেন, ‘ধীরে ধীরে আমার স্বপ্নগুলো বাস্তবে রূপ নিচ্ছে, এতে আমি খুশি। পর্যটকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে কটেজ নির্মাণ করা হয়েছে। আগে আমাদের এখনে পর্যটকরা বোটে রাতযাপন করতে পারত। এখন থেকে কটেজেও থাকতে পারবে।’

তিনি আরও বলেন, রাঙামাটিতে পর্যটন ঘিরে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। সরকার ও ব্যক্তিপর্যায়ে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে পারলে দেশের জিডিপিতেও ভালো অবদান রাখা সম্ভব। কারণ, বিশ্বে বহু দেশ রয়েছে, যাদের জাতীয় আয়ের প্রধান অংশই আসে পর্যটনখাত থেকে। তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটনশিল্পকে সঠিকভাবে বিকশিত করতে পারলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির নতুন ক্ষেত্র হবে এই পার্বত্য তিন জেলার পর্যটনখাত।

রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘অনেক আগেই এমন উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত ছিল। তারপরও শুরু তো হলো। এখানে বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা এগিয়ে এসেছেন। তারা নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে পর্যটন ব্যবসা শুরু করেছেন। তাদের ব্যবসাও ভালো হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বের ভ্রমণপিপাসু মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারবে এই রাঙামাটি। কারণ, আমাদের প্রচুর রিসোর্স রয়েছে। শুধু এগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। এসব তরুণ উদ্যোক্তা যেভাবে এগিয়ে এসেছেন, আমি বিশ্বাস করি আগামী ১০ বছরে রাঙামাটির পর্যটনখাত সনাতনী ফরম্যাট ভেঙে নতুন পথে চলে আসবে। মানুষ বিনোদন ও প্রশান্তির জন্য এই জেলায় আসবেই।’

আড়াই একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই নীলাঞ্জনা বোট ক্লাব ও রিসোর্ট। তাদের প্রমোদিনী নামে তিনটি হাউস বোট রয়েছে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ