1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

গ্যাস মিটারে নতুন করে যুক্ত হচ্ছেন ৮০ লাখ গ্রাহক

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২

রাজধনীতে নতুন করে গ্যাস মিটারে যুক্ত হচ্ছে ৮০ লাখ গ্রাহক। এজন্য তৃতীয়বারের মতো সংশোধন করা হচ্ছে ‘প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন’ প্রকল্প। এই প্রস্তাব নিয়ে আগামী বুধবার (৩০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। সেখানে পরামর্শকসহ নানা বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  জানান, প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবটি নিয়ে এখনো কথা বলার সময় আসেনি। পিইসি সভার নানাবিষয়ে প্রশ্ন তোলা হবে। সন্তোষজনক ব্যাখা পাওয়া না গেলে সুপারিশ দিয়ে ফেরত পাঠানো হবে প্রকল্প প্রস্তাবটি। সংশোধন হয়ে আসলে তারপরই একনেকে উপস্থাপনের বিষয়টি দেখা হবে।

প্রকল্পের সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়, জাপান সরকারের ৩৫তম ওডিএ লোন প্যাকেজভুক্ত ন্যাচারাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের আওতায় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে। এটির মাধ্যমে ঢাকা সিটিতে দুই লাখ প্রি-পেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের জন্য জাইকার ঋণ সহায়তায় প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ৭১২ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্পটি ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি একনেক সভায় অনুমোদন পায়। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ ২ বছর বৃদ্ধি করা হয়। এখন মোট প্রাক্কলিত ব্যয় হ্রাস করে ৪৯৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকায় প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন করা হয়। পরবর্তীতে লোন প্যাকেজ বিডি-পি৭৮ (যার মধ্যে পেট্রোবাংলার অধীনস্থ বিভিন্ন কোম্পানির চারটি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত) এর অব্যয়িত অর্থ দিয়ে এই প্রকল্পের অধীনে অতিরিক্ত এক লাখ ২০ হাজার মিটার স্থাপনের জন্য মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ও প্রকল্প মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রকল্পটি দ্বিতীয় সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনী ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদন পায়।

প্রকল্পের অধীনে ঢাকা মেট্রোপলিন এলাকায় ২টি ধাপে এরইমধ্যে মোট তিন লাখ ২০ হাজার আবাসিক প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদিত দ্বিতীয় সংশোধীত ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুযায়ী প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৭৫৩ কোটি ৮৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। বাস্তবায়নকাল ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে লোন প্যাকেজ বিডি-পি ৭৮ এর আওতায় এই প্রকল্পের অধীনে অতিরিক্ত আরও ৮০ হাজার প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। গত ১০ আগস্ট জাইকা থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনাপত্তি পত্র দেওয়া হয়।

প্রকল্পের বিদ্যমান ইপিসি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টোকিও কোম্পানি লিমিটেডের মাধ্যমে বিদ্যমান চুক্তির ভেরিয়েশন অর্ডার অনুযায়ী, আর্থিক দর চূড়ান্ত করে তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপির ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯০২ কোটি ৮১ লাখ ১১ হাজার টাকা। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধন প্রকল্প ব্যয় মূল ডিপিপি’র চেয়ে ১৯০ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা বা ২৭ শতাংশ বেশি। প্রথম সংশোধিত ডিপিপি’র চেয়ে ৪০৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭৯ হাজার টাকা বা ৮১ শতাংশ এবং দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপির চেয়ে ১৪৮ কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা বা ২০ শতাংশ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর ৬ মাস বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিও ওই প্রস্তাবে বলা হয়।

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়, কাজের পরিধি পরিবর্তন: প্রকল্পের আওতায় ৩ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড গ্যাস মিটার ইতোমধ্যে স্থাপিত হয়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা পূরণের জন্য আরও ৮০ হাজার প্রিপেইড গ্যাস মিটার অন্তর্ভুক্ত করে সর্বমোট ৪ লাখ গ্যাস মিটার স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

৯৫০টি পিওএস সাপোর্ট সার্ভিস: বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় ৫০টি পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) চালু রয়েছে, যা বর্ধিত এলাকায় ক্রমবর্ধমান গ্রাহক দেওয়ার জন্য অপ্রতুল। গ্রাহকদের সন্তুষ্টির জন্য বাকি চাহিদা পূরণের জন্য তৃতীয় সংশোধন প্রস্তাবে অতিরিক্ত ৯৫০টি পিওএস সাপোর্ট সার্ভিস অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিভিন্ন অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি: সচেতনামূলক কর্মসূচিতে ৫০ লাখ টাকা, প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন বাবদ ২৫ লাখ টাকা, স্থানীয় প্রশিক্ষণ বাবদ ১৫ লাখ টাকা, পরামর্শ সেবা বাবদ ৪৯৮ লাখ টাকা, সম্মানী ৫ লাখ টাকা, সিঅ্যান্ডএফ কমিশনিং ২৫ লাখ টাকা, অন্যান্য ৫ লাখ টাকা, এআইটি ১১৫ লাখ টাকা এবং রাজস্ব খাতে মোট ৭৩৮ লাখ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া মূলধন খাতের আওতায় সার্ভে ও মিটার স্থাপনে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ১৩ হাজার টাকা, কম্পিউটার ও যন্ত্রাংশ বাবদ ১০ লাখ টাকা, মিটার ক্রয় বাবদ ৯৮ কোটি ৭ লাখ ৫১ হাজার টাকা, মিটার টেস্টিং বাবদ ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা, আসবাবপত্র বাবদ ১৫ লাখ টাকা এবং ক্যাপিটাল ব্লক এলাকেশন বাবদ ১১ কোটি ৫৮ লাখ টাকাসহ মোট ১২৯ কোটি ৫৯ লাখ ১৬ হাজার টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। তাছাড়া প্রাইস কন্টিনজেন্সি বাবদ ১২ কোটি টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি: অনুমোদিত দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপির মেয়াদ অনুয়ায়ী নির্ধারিত মোট ৩ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড গ্রাস মিটার ইতিমধ্যে স্থাপন ও কমিশনিং করা হয়েছে। অতিরিক্ত ৮০ হাজার প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপনের জন্য তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপিতে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর ৬ মাস বর্ধিত করে ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়েছে।

শিল্প ও শক্তি বিভাগের তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদ শাখার যুগ্ম প্রধান মোছা. আনার কলির সই করা পিইসি সভার কার্যপত্রে পরিকল্পনা কমিশনের মতামত হিসেবে বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হলো- প্রকল্পটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে এবং ৩ লাখ ২০ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপন ও কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। এ সংশ্লিষ্ট ডাটা সেন্টার ও ওয়েব সিস্টেমও স্থাপন করা হয়েছে। অপারেশনাল কার্যক্রম চলমান আছে। আরও নতুন করে ৮০ হাজার মিটার স্থাপনের জন্য পরামর্শক সেবার সংস্থান এবং এ বাবদ ৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয় প্রাক্কলনের যৌক্তিকতা সভায় আলোচনা করা যেতে পারে। এছাড়া ভেরিয়েশন চুক্তির মাধ্যমে একই ইপিসি ঠিকাদার হতে মিটারগুলো সংগ্রহ করা হবে। এক্ষেত্রে প্রি-পেইড শিপমেন্ট ইন্সপেকশন বাবদ ব্যয় প্রাক্কলন সভায় আলোচনা করা যেতে পারে।

সেখানে আরও বলা হয়, ক্রয় পরিকল্পনায় দেখা যায়, তৃতীয় সংশোধিত ডিপিপিতে প্রস্তাবিত অতিরিক্ত ৮০ হাজার মিটার বিদ্যমান ঠিকাদারের মাধ্যমেই ভেরিয়েশন চুক্তিতে ক্রয় ও স্থাপন করা হবে। বিদ্যমান ক্রয় আইন ও জাইকার গাইড লাইন অনুযায়ী অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এ বিষয়ে বলতে পারেন।

পরিকল্পনা কমিশন থেকে আরও বলা হয়, প্র-পেইড গ্যাস মিটার ব্যবহারে জনগণের আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধন করে প্রি-পেইড মিটারের সংখ্যা ২ লাখ থেকে বৃদ্ধি করে ৩ লাখ ২০ হাজার করা হয়েছিল। এখন তৃতীয় সংশোধন প্রস্তাবে সচেতনতা কর্মসূচি বাবদ ব্যয় প্রাক্কলনের যৌক্তিকতা সভায় আলোচনা হতে পারে। তৃতীয় সংশোধন প্রস্তাব পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত ১৫টি যানবাহনের মধ্যে ৫টি ক্রয় করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট ১০টি যানবাহন শেষ অর্থবছরে ক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পের শেষ অর্থবছরে এসব যানবাহন ক্রয় করার যৌক্তিকতা আলোচনা করা যেতে পারে।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ