জার্মানী থেকে বিশেষ প্রতিবেদক:
আবারো গণধোলাই এর শিকার হলেন জার্মানিতে এসাইলামে থাকা ধর্মবিদ্বেষ ও লেখা চুরির জন্য আলোচিত-সমালোচিত ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন। এই নিয়ে এক বছরের ব্যবধানে দু’বার শারীরিকভাবে আক্রমণের শিকার হলেন তিনি। তবে গতবারের পার্কে জুতো পেটা করার ঘটনাটির সাথে প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশী তরুণ জড়িত থাকলেও এবারের গণধোলাই এর ঘটনা ঘটিয়েছেন এক পাকিস্তানি তরুণ ও তার দুই বন্ধু। এর মধ্যে একজন শ্বেতাঙ্গও ছিলেন।
গতকাল শনিবার রাতের দিকে আসিফ মহিউদ্দীন ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা তাদের জার্মান সরকার কর্তৃক রিফুজি এলাকায় বরাদ্দকৃত বাসা হতে বের হতেই তারা এদের সামনাসামনি পড়ে যান। ধারণা করা হচ্ছে তারা সেখানে আগে থেকেই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। যুবকদের দেখেই আসিফ মহিউদ্দীন তার স্ত্রীকে রেখেই দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু অপর দুই যুবক তাকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে এবং এলোপাথাড়িভাবে কিল , ঘুষি , লাথি মারতে শুরু করে।
মারধরের কারণে আসিফ মহিউদ্দীন এর চশমা ভেঙে যায়। আসিফকে বাচাঁনোর জন্য কানিজ ছুটে আসার চেষ্টা করলে শ্বেতাঙ্গ তরুণটি তাকে পেছন থেকে জাপটে ধরে। কানিজ সাংবাদিকদের বলেন, শরীরের স্পর্শকাতর অংশে শ্লীলতাহানি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন প্রতিবেদককে বলেন,
আসিফ কানিজ দম্পতি নিজেদের নাস্তিক এক্টিভিস্ট হিসেবে সর্বত্র পরিচয় দিলেও, বেপারোয়া মারধরের সময়ে তারা উভয়েই “ও আল্লাহ বাচাও , আল্লাহ, বাঁচাও” চিৎকার করছিল!!!!!!!
গত বছর গোলাম কুদ্দুস নামে এক পাকিস্তানি নাগরিক ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার সময়ে আসিফকে তার ফ্ল্যাটের অস্থায়ী কেয়ারটেকার হিসেবে বসবাস করার ও দেখাশোনার অনুমতি দিয়ে যান। কিন্তু তিনি যাওয়ার পরই আসিফ উক্ত ফ্ল্যাটের ছবি ফেসবুকে আপলোড করে নিজের বলে ক্যাপশন দেন। বিষয়টি গোলাম কুদ্দুসের দৃষ্টিগোচরে হলে সে আসিফকে এ ব্যাপারে জানতে চান এবং ফোনে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। অতপর উক্ত পাকিস্তানি কাজ অসমাপ্ত রেখেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে জার্মানি ফিরে আসে এবং আসিফকে মারধরের ঘটনা ঘটায়।
গোলাম কুদ্দুস বলেন, আসিফের বেহায়াপনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। কারণ আমার অনুপস্থিতিতে আমার ব্যক্তিগত পিসিতে আসিফ বেপরোয়াভাবে কয়েকশ পর্ণ ছবি ডাউনলোড করেছে যে কারণে ১৫০০ ইউরো জরিমানা গুণতে হয়। এছাড়া ফ্ল্যাটের রুম হিটার , ফ্রিজসহ প্রায় কয়েকটি ইলেকট্রনিকস সামগ্রি নষ্ট বা নোংরা অবস্থায় পাওয়া যায়।
কুদ্দুসের এক সহযোগি জানান, ইমিগ্রান্ট হিসেবে আইনী ঝামেলায় জড়ানোর ইচ্ছে না থাকায় সে ব্যাপারটি নিয়ে প্রথমে পুলিশে অভিযোগ না জানিয়ে আসিফকে প্রহারের সিদ্ধান্ত নেয়। আর তা থেকেই উদ্ভুত এই ঘটনা।
সবশেষ খবরে জানা গেছে আসিফকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হলেও প্রহারের কারণে তার শরীর ফুলে গেছে।
পুলিশ উভয় পক্ষের অভিযোগই তদন্ত করে দেখছে বলে জানা গেছে।
সূত্র: জার্মানির জনপ্রিয় দৈনিক দ্যা লোকাল