1. অন্যরকম
  2. অপরাধ বার্তা
  3. অভিমত
  4. আন্তর্জাতিক সংবাদ
  5. ইতিহাস
  6. এডিটরস' পিক
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয় সংবাদ
  9. টেকসই উন্নয়ন
  10. তথ্য প্রযুক্তি
  11. নির্বাচন বার্তা
  12. প্রতিবেদন
  13. প্রবাস বার্তা
  14. ফিচার
  15. বাণিজ্য ও অর্থনীতি

বিএনপি কেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চায় না ?

ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম : ইবার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকম
বুধবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২২

বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের জনসভা নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি সমাবেশ করতেই পারে। সম্প্রতি বিভিন্ন বিভাগে বিএনপির কয়েকটি সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এ সমাবেশকে কেন্দ্র করে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি ও জনমনে ভীতি ছড়ানোর প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। একদিকে মির্জা ফখরুল শান্তিপূর্ণ সমাবেশের কথা বলছেন, অন্যদিকে বিএনপির দলীয় কার্যক্রমে যুক্ত দায়িত্বশীল অনেকেই অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবের প্রচারের পাশাপাশি চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে সরকার পতনের হাস্যকর ডেটলাইন দিচ্ছে। লোকসমাগম বাড়াতে এ জাতীয় মিথ্যাচার ও নেতাকর্মীদের আবেগের সঙ্গে প্রতারণামূলক আচরণ বিএনপির জন্য লাভের চেয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা।

বিএনপি ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনেই সমাবেশ করবে বলে অনঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছিল। মীর্জা আব্বাস সহ কয়েকজন শীর্ষ নেতাও ঘোষণা দিয়েছিলেন, অনুমতি না পেলেও নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে। পক্ষান্তরে পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য সম্ভাব্য স্থান হিসেবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগ তীরে বিশ্ব এজেতার মাঠ ব্যবহারের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রাজধানীর ভেতরে এবং একটি ঐতিহাসিক ও বড় আয়তনের মাঠ হওয়ার পরও তারা কেন এখানে সমাবেশ করতে চায় না তার কারণ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে পাকহানাদার বাহিনী বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। এমন একটি দিনকে বিএনপি কেন সমাবেশের জন্য বেছে নিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বিএনপি কেন নয়া পল্টনের ৩৫ হাজার স্কয়ারফিট ভবনের সামনের সংকীর্ণ জায়গায় সমাবেশ করতে আগ্রহী তার কয়েকটি কারণ আলোচনায় এসেছে।

১. ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, ১৬ ডিসেম্বর তথা আমাদের ইতিহাসের সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। অনেকের মতে, পাকিস্তানি প্রেতাত্মা ভর করায় বিএনপি নেতারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সম্পর্কে হীন মানসিকতায় ভুগছেন।

২. সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকেই স্বাধীনতার পটভূমি ঘোষণা করা হয় আর এখানেই আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী ও তার দোসররা তথা বিএনপির মিত্ররা। স্বাভাবিকভাবেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি লজ্জা ও অস্বস্তির কারণ হয় বলে অনেকে মনে করেন।

৩. বিএনপির জন্য লোকসমাগম করা মোটামুটিভাবে চ্যালেঞ্জের বিষয়। কুমিল্লা ও রাজশাহীতে আয়োজিত মহাসমাবেশে খুব কম লোকের সমাগম হয়েছিল এবং সমাবেশস্থলের বড় অংশই ফাঁকা ছিল। ড্রোন থেকে ধারণ করা সমাবেশের ভিডিও দেখে অনেকে হাসি-ঠাট্টাও করেছেন। তাই রাজধানী ঢাকার সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হলে বিএনপির ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হতে পারে বলে মনে করেন বিএনপির অনেক নেতা।

৪. দলীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তাটিকে বিএনপি কেন মহাসমাবেশের জন্য বেছে নিল এমন প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক। সংকীর্ণ এ স্থানে দুই হাজার মানুষ জড়ো হলেই পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যা্য় এবং মনে হয় বহু লোকের সমাগম। পক্ষান্তরে সমসংখ্যক মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হলে মোটেও দৃষ্টিগ্রাহ্য হবে না। বলাবাহুল্য যে, রাজপথের সমাবেশ উপস্থিত সাংবাদিক, মিডিয়াকর্মী, হকার ও উৎসুক জনতায় অনেকটা পূর্ণ থাকে। তাই লোকসমাগম না হওয়ার কারণকে প্রাধান্য দিয়ে বিএনপি নয়া পল্টন বা রাজপথে সমাবেশ করার কৌশল গ্রহণ করেছে। তবে রাজপথে সমাবেশ করার নেপথ্যে অনেকে নাশকতা সৃষ্টির আশঙ্কাও করছেন। বড় পরিসরের জায়গায় অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা সফল হবে না বলেই বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে অনিচ্ছুক কিনা এমন প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।

সবচেয়ে বড় কথা রাজধানী ঢাকার অন্যতম সমস্যা যানজট। রাজপথে সমাবেশ করা মানেই অসহনীয় যানজট ও অবর্ণনীয় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি। বেশ কিছুদিন যাবত অনমনীয় মনোভাব দেখালেও এখন বিএনপির সুর নরম হচ্ছে। তারা নতুন ভেন্যু খুঁজছে বলেও জানা গেছে। জনগণের স্বার্থে হলেও বিএনপির উচিত রাজপথের পরিবর্তে কোনো উদ্যান বা মাঠে সমাবেশ করা। আর শান্তিপূর্ণ সমাবেশই যদি মূল উদ্দেশ্য হয় তাহলে হুমকি-ধমকি ও অনলাইনে গুজব প্রচার থেকে বিরত থাকা উচিত বিএনপির নেতাকর্মীদের।


সর্বশেষ - জাতীয় সংবাদ