বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, রোববার গাজার কয়েকটি হাসপাতালে ইসরাইল বিমান হামলায় চালায়। ওই হাসপাতালগুলোর একটিতে বিমান হামলায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি। হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দিলে ইসরাইল তাদের আক্রমণ আরো বাড়িয়ে দেবে বলে সতর্ক করেছে।
গাজা সিটি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, হাজার হাজার গাজাবাসী হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। যাদের অনেকেই চলমান যুদ্ধে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস এক্স-এ এক বার্তায় জানিয়েছেন, উত্তর গাজার আল-আহলি হাসপাতালে হামলার পর চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার কারণে একটি শিশু মারা গেছে।
তিনি আরো বলেন, হামলার ফলে ‘জরুরি কক্ষ, ল্যাবরেটরি, জরুরি কক্ষের এক্স-রে মেশিন এবং ফার্মেসি ধ্বংস হয়ে গেছে। হাসপাতাল থেকে ৫০ জন রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে ৪০ জন গুরুতর রোগীকে স্থানান্তর করা যায়নি বলে তিনি জানান।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, তারা হাসপাতালে অবস্থিত হামাসের একটি ‘কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র’ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে এই দাবি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী অস্বীকার করেছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে যে ‘(ইসরাইলি) সেনাবাহিনীর সরে যাওয়ার সতর্কবার্তার কয়েক মিনিট পরেই’ এই হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে ‘সুনির্দিষ্ট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হাসপাতাল ভবনে ‘কোনও চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে না’।
ইসরাইল এক্স -এ আরো বলেছে, ‘এই হামলার ফলে কোনও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেনি’।
এএফপির ছবিতে দেখা গেছে যে হামলার পর ঘটনাস্থলে কংক্রিটের বিশাল স্ল্যাব এবং ধাতু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বিস্ফোরণের ফলে হাসপাতালের একটি ভবনে একটি বড় গর্ত তৈরি হয়। লোহার দরজাগুলোর কব্জা ছিঁড়ে যায়।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, রোববার দেইর এল-বালাহ শহরে একটি গাড়িতে আরেকটি বিমান হামলায় ছয় ভাইসহ সাতজন নিহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির এক হিসাব অনুসারে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে হামাসের হামলার পর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। যার ফলে ১ হাজার ২১৮ জন নিহত হয়। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে যে, গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ১ হাজার ৫৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ৯৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে।